JANA BUJHA

স্বর্ণের বর্তমান দাম|স্বর্ণের দাম|আজকের স্বর্ণের দাম বাংলাদেশ Best 2024

স্বর্ণের বর্তমান দাম , আজকের স্বর্ণের দাম কত বাংলাদেশে, স্বর্ণের দাম, আজকের স্বর্ণের দাম বাংলাদেশ ২০২৪ ইত্যাদি লিখে প্রতিনিয়ত মানুষ গুগুলের কাছে জানতে চায়।

আমাদের আজকের লিখার মধ্য দিয়ে আশা করি সঠিক তথ্য পেয়ে যাবেন। কোন সমস্যা হবে না । অন্য কোন পেইজ বা ওয়েবসাইটেও খুঁজতে হবে না আজকের

স্বর্ণের দাম, বর্তমানে স্বর্ণের দাম কত, আজকের স্বর্ণের দাম কত বাংলাদেশে ২০২৩, বর্তমান স্বর্ণের দাম, বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতি আজকের স্বর্ণের দাম, স্বর্ণের ভরি কত, ১ গ্রাম স্বর্ণের দাম কত বাংলাদেশে ইত্যাদি টপিক। স্বর্ণের বর্তমান দাম

Table of Contents

স্বর্ণের বর্তমান দাম|স্বর্ণের দাম|আজকের স্বর্ণের দাম বাংলাদেশ

প্রিয় পাঠক আপনি হয়ত আপনার কোন আপন জনকে স্বর্ণের অলংকার উপহার দিতে চাচ্ছেন। অথবা আপনি হয়ত কোন একজন ব্যবসায়ী তাই স্বর্ণের বর্তমান দাম , আজকের স্বর্ণের দাম কত বাংলাদেশে, স্বর্ণের দাম জানতে চাচ্ছেন। স্বর্ণের বর্তমান দাম

 যাই হোক না কেন। মূল্যবান কোন কিছু কেনার আগে একটু যাচাই বাছাই করা কিন্ত খুবই বুদ্ধিমানের কাজ। আর আপনি একজন সচেতন ক্রেতা সেই সাথে বুদ্ধিমান, যে কারণেই আমাদের এই লিখাটা পড়ছেন।

এই লিখার মধ্য দিয়ে যে শুধু আজকের সোনার দাম কত তা জানতে পারবেন তা কিন্তু নয়। সেই সাথে জানতে পারবেন স্বর্ণ কী, কেন স্বর্ণ মূল্যবান, স্বর্ণ কেনার আগে করণীয় কী, কি  কি দেখে স্বর্ণ কিনতে  হবে, স্বর্ণের ব্যবসা কিভাবেব শুরু করা যেতে পারে, স্বর্ণ ব্যবহারের উপকারিতা এবং অপকারিতা ইত্যাদি নানা বিষয়।

তাই এই লিখাটা স্বর্ণ নিয়ে আপনার সমস্ত চিন্তা চেতনা বদলে দিতে পারে। তাই কষ্ট হলেও একটু সময় নিয়ে পড়ে ফেলুন। কথা না বাড়িয়ে সরাসরি এখন দাম এর কথা বলা শুরু করা যাক।

যে যে বিষয়গুলো নিচে আলোচনা করা হলো

১. স্বর্ণের হিসাব

২. স্বর্ণের বর্তমান দাম ( ২৪,২২,২১,১৮, সানাতন পদ্ধতির সোনার ক্যারেট এর দাম)

৩. স্বর্ণ  কী

৪. স্বর্ণ কেন সব সময় মূল্যবান?

৫. বর্তমান বাজারে কয় ধরনের স্বর্ণ পাওয়া যায়?

 

৬. স্বর্ণ কেনার সময় কোন বিষয়গুলো খেয়াল রাখতে হবে?

৭. ভেজাল স্বর্ণ না খাঁটি স্বর্ণ তা যেভাবে বুঝবো।

 

৮. সোনার দাম উঠানামা করে কেন

৯. কিভাবে সোনা সংক্রান্ত ব্যাবসা শুরু করা সম্ভব

 

১০. স্বর্ণ ব্যবহারে উপকারিতা কি?

১১. স্বর্ণ ব্যবহারের অপকারীতা/ নেতিবাচক দিকসমূহ

 

কিভাবে স্বর্ণ পরিমাপ করা হয় তা আগে আপনাদের জানাই। তারপর বাকীগুলোর দাম জানতে পারবেন। কিসের ভিত্তি করে আমরা স্বর্ণের হিসাব করি তাই এখানে তুলে ধরা হলো। আপনি নিজেই পারবেন এখন হিসাব করে বের করতে কত ভরি স্বর্ণে কত গ্রাম এবং কত আনা, তোলা, রতি, কেজি। 

স্বর্ণের  হিসাব

স্বর্ণ এর তুলনা (ভরি) পরিমাণ
১ ভরি ১১.৬৬৪ গ্রাম
১ ভরি  ১৬ আনা 
১ ভরি  ১ তোলা 
১ ভরি  ৬৪.০৭ রতি
১ ভরি  ৮৫.৭৩ কেজি (প্রায়)
১ আনা  ৬ রতি

 

এখন আমরা এক এক ২৪,২২,২১,১৮ ক্যারেট স্বর্ণের দাম তুলে ধরবো নিচে। 

24 ক্যারেট স্বর্ণের দাম  

 

স্বর্ণের পরিমাণ( ২৪ ক্যারেট)  স্বর্ণের দাম ( বাংলাদেশী টাকায়)
১ ভরি স্বর্ণ ১১৩,০০০ টাকা (আনুমানিক)
১ গ্রাম স্বর্ণ  ৯৬৮৭ টাকা 
১ আনা  স্বর্ণ ৭০৬২.৫ টাকা 
১ রতি স্বর্ণ  ১,৭৬৩.৬৯ টাকা 
১ তোলা স্বর্ণ ১১৩০০০ টাকা 
 ১০ গ্রাম স্বর্ণ  ৯৬,৮৭০ টাকা 
 ১ কেজি স্বর্ণ ৯৬৮৭৪৯০ টাকা (প্রায়) 

আমরা জানলাম ২৪ ক্যারেট স্বর্ণের দাম। যা পরিমাণ অনুসারে তুলে ধরা হয়েছে। আপনি যদি সোনা কিনতে যান তাহলে আলাদা করে আপনাকে হিসাব করতে হবে না। আমাদের এই লিখা পড়লে আপনি খুব সহজেই জানতে পারবেন সোনার দাম। এখন আমরা জানবো ২২ ক্যারেট সোনার দাম- 

২২ ক্যারেট স্বর্ণের দাম  

স্বর্ণের পরিমাণ( ২২ ক্যারেট)  স্বর্ণের দাম ( বাংলাদেশী টাকায়)
১ ভরি স্বর্ণ ১১১,০৪১ টাকা 
১ গ্রাম স্বর্ণ  ৯৫২০ টাকা 
১ আনা  স্বর্ণ ৬,৯৪০ টাকা 
১ রতি স্বর্ণ  ১,৬৩২ টাকা 
১ তোলা স্বর্ণ ১১১০৪১ টাকা 
 ১০ গ্রাম স্বর্ণ  ৯৫,২০০ টাকা 
 ১ কেজি স্বর্ণ ৯৫২০০০ টাকা 

 

আমরা ২৪ ও ২২ ক্যারেট সোনার দাম জানলাম এখন জানব ২১ ক্যারেট স্বর্ণের দাম। 

২১ ক্যারেট স্বর্ণের দাম  

স্বর্ণের পরিমাণ( ২২ ক্যারেট)  স্বর্ণের দাম ( বাংলাদেশী টাকায়)
১ ভরি স্বর্ণ ১০৬০২৬ টাকা 
১ গ্রাম স্বর্ণ  ৯০৯০ টাকা 
১ আনা  স্বর্ণ ৬,৬২৬ টাকা 
১ রতি স্বর্ণ  ১,৬৫৪ টাকা 
১ তোলা স্বর্ণ ১০৬০২৬ টাকা 
 ১০ গ্রাম স্বর্ণ  ৯০৯০০ টাকা 
 ১ কেজি স্বর্ণ ৯০৯০০০ টাকা 

যাক এইমাত্র আমরা জেনে গেলাম ২১ ক্যারেট স্বর্ণের দাম। এখন আমরা জানব ১৮ ক্যারেট স্বর্ণের দাম। 

১৮ ক্যারেট স্বর্ণের দাম  

স্বর্ণের পরিমাণ( ১৮ ক্যারেট)  স্বর্ণের দাম ( বাংলাদেশী টাকায়)
১ ভরি স্বর্ণ ৯০৮৬৩ টাকা 
১ গ্রাম স্বর্ণ  ৭৭৯০ টাকা 
১ আনা  স্বর্ণ ৫৬৭৮ টাকা 
১ রতি স্বর্ণ  ১,৪১৮ টাকা 
১ তোলা স্বর্ণ ৯০৮৬৩ টাকা 
 ১০ গ্রাম স্বর্ণ  ৭৭৯০০ টাকা 
 ১ কেজি স্বর্ণ ৭৭৯০০০ টাকা 
আমরা এখন জানব সনাতন পদ্ধতির স্বর্ণের দাম। আমাদের বাজারে সনাতন পদ্ধতির 
স্বর্ণের প্রচলন কম নয়।

সনাতন পদ্ধতির স্বর্ণের দাম/ মূল্য  

স্বর্ণের পরিমাণ( সনাতন পদ্ধতি)  স্বর্ণের দাম ( বাংলাদেশী টাকায়)
১ ভরি স্বর্ণ ৭৫৭০০ টাকা 
১ গ্রাম স্বর্ণ  ৬৪৯০ টাকা 
১ আনা  স্বর্ণ ৪৭৩২ টাকা 
১ রতি স্বর্ণ  ১,১৮২ টাকা 
১ তোলা স্বর্ণ ৭৫৭০০ টাকা 
 ১০ গ্রাম স্বর্ণ  ৬৪৯০০ টাকা 
 ১ কেজি স্বর্ণ ৬৪৯০০০ টাকা 

আমরা যে দাম গুলো এখানে তুলে ধরেছি তা বাজুস এর দ্বারা নির্ধ ারিত করা হয়েছে। গত ২৩
ডিসেম্বর বাজুস বা বাংলাদেশে জুয়েলারি সমিতি এই মূল্য তালিকা প্রকাশ করেছে। যখন আবার
নতুন কোন সিদ্ধান্ত হবে তখন আমরা সেই মূল্য তালিকা প্রকাশ করবো।

 

স্বর্ণের-বর্তমান-দামস্বর্ণের-দামআজকের-স্বর্ণের-দাম-বাংলাদেশ.
                                           স্বর্ণের-বর্তমান-দামস্বর্ণের-দামআজকের-স্বর্ণের-দাম-বাংলাদেশ.

 

 

এখন আমরা স্বর্ণ বিষয়ে আরও নানা বিষয় জানবো। স্বর্ণ বিষয়ক জনাশোনা থাকলে ক্ষতিতো নেই।

স্বর্ণ কী|স্বর্ণের বর্তমান দাম|স্বর্ণের দাম|

কেউ যদি বলে আমি স্বর্ণ চিনি না তাহলে আমরা তাকে বলবো গাঁধা একটা। কিন্তু সত্যি কথা বলতে আমরা বেশিরভাগ মানুষই আসলেই স্বর্ণ চিনি না। সামান্য কমলা, হলুদ দেখতে চকচকে একধরনের ধাতু হল স্বর্ণ।

কিন্তু এর বাইরে আমরা অনেকেই জানি না। তাই বলা যেতে পারে যে স্বর্ণ চিনলেও অধিকাংশ মানুষ সঠিক স্বর্ণ চিনি না, যে কারণে আমাদের বারবার ঠকতে হয়। তাই আজকে স্বর্ণকে আসলেই চেনার চেষ্টা করবো। জানা অজানা নানা বিষয় জানব এই লিখা পড়ার মধ্য দিয়ে। স্বর্ণের বর্তমান দাম

মানুষ নিজেদের প্রয়োজনে কত কিছুই না আবিষ্কার করেছে। তেমনি মাটির নিচ থেকে খুঁজে বের করেছে স্বর্ণ। স্বর্ণ নিয়ে কিছু তথ্য জেনে রাখি চলুনঃ

  • অরাম’ (Aurum) হচ্ছে স্বর্ণের রাসায়নিক নাম। স্বর্ণের বর্তমান দাম
  • ল্যাটিন শব্দ Aurora থেকে  ‘অরাম’ এসেছে।

 

  • আর স্বর্ণের প্রতীক ‘Au’।
  • বিজ্ঞানের পর্যায় সারণিতে এর পারমাণবিক সংখ্যা ৭৯।

 

  • স্বর্ণের পারমাণবিক ভর ১৯৬.৯৬৬৫।
  • স্বর্ণের ঘনত্ব ১৯.৩০ gm/cc
  • স্বর্ণের দৈর্ঘ্য প্রসারণ সহগ 14×10^-6 c-

 

  • স্বর্ণের গলনাঙ্ক হচ্ছে – ১৩৩৭.৩৩ কে / যা ১০৬৪.১৮ সেলসিয়াস
  • স্বর্ণের স্ফুটনাঙ্ক হচ্ছে – ৩১২৯ কে/ এবং ২৮৫৬ ডিগ্রী সেলসিয়াস

 

  • সাধারণত মাটির নিচে দলা আকারে বা চূর্ণ হিসেবে পাওয়া যায়। আমাদের শরীরে ০.২ মিলিগ্রাম স্বর্ণ রয়েছে। যা আমাদের রক্তে মিশে আছে।
  • পৃথিবীর সবচেয়ে বড় গোল্ড বারটির ওয়েট/ ওজন ২৫০ কেজি।

 

  • ইউক্যালিপটাস গাছের যে পাতা রয়েছে সেই পাতায় সোনার পাতলা প্রলেপ আছে।
  • দুবাই দেশ হিসেবে এতই ধনী যে সেখানে তাদের এটিএম বুথে শুধু টাকা নয় বরং স্বর্নের বারও উত্তোলন করা যায় এটিএম থেকে।

 

  • প্রতিদিন যে পরিমান স্বর্ণ উত্তোলন করা হয় এর অর্ধেকেরও বেশী আসে সাউথ আফ্রিকা থেকে।
  • স্বর্ণ দিয়ে সূতা তৈরী করা যায় যা এম্বোডায়েরির কাজ করা যায়। 

 

১. স্বর্ণ কেন সব সময় মূল্যবান?

বহু আগে থেকেই মানুষ স্বর্ণকে মূল্যবান ভেবে এসেছে। এর বিশেষ কিছু কারণ হলো – স্বর্ণের কালার খুবই আকষর্ণীয়, তাছাড়া স্বর্ণ সহজলভ্য জিনিস নয়। মানুষ যেহেতু স্বর্ণ খুব পছন্দ করতো এবং সহজলভ্য জিনিস ছিল না তাই মূলত স্বর্ণ মূল্যবান ধাতু হয়েছে। 

 প্রাচীনকাল থেকই মানব সমাজে স্বর্ণকে মূল্য দিয়ে আসা হয়েছে। সমাজে মানুষ যেটাকে মূল্য দেয় সেটাই মূলত মূল্যবান হয়ে যায়। যে কারণে স্বর্ণ মূল্যবান ধাতু। 

 

আরো পড়ুনঃ আকাশ নিয়ে ক্যাপশন,উক্তি,কবিতা

 

পণ্য ও পরিষেবার বিনিময়ের জন্য একটি আদর্শ মাধ্যম

স্বর্ণের মধ্যে এমন কিছু বৈশিষ্ট রয়েছে যা অন্য কোন ধাতুর মাঝে নাই। তাই এটি অন্য সব ধাতু থেকে আলাদা হয়ে গেছে। কোন জিনিসের মূল্য তৈরী হতে হলে সে জিনিসের উপযোগিতা থাকতে হবে।

 

আমাদের কাছে সামান্য কাহজও মূল্যবান হবে যখন এর বিনিময়ে আমরা যা চাই তা পাই। আর তাই এই উপযোগিতার কারণেও স্বর্ণ মূল্যবান। স্বর্ণ  বহুকাল  ধরেই  পণ্য ও পরিষেবার বিনিময়ের জন্য একটি আদর্শ মাধ্যম হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। 

 

প্রাচীনকাল থেকেই স্বর্ণ জনপ্রিয়

স্বর্ণ মানুষের দ্বারা আবিষ্কৃত প্রাচীনকালের  ধাতু বা মৌলগুলোর মধ্যে অন্যতম। আসলে প্রথম  কোথায় স্বর্ণ  আবিষ্কার হয়েছিল  তা কেউ সঠিক করে বলতে পারে না। তবে প্রত্নতত্ত্ববিদরা প্রস্তরযুগের  একটি প্রাচীন গুহা খুঁজে পায় আর সেখানে সোনা দিয়ে তৈরী করা নানা জিনিস পেয়েছিল তারা। আর এই সব নিদর্শন অন্তত ৪০ হাজার বছর আগের বলে ধারণা করা হয়। 

 

এছাড়াও মিশরীয় সভ্যতা থেকে ইনকা সভ্যতায়ও স্বর্ণ ব্যাপক ব্যবহার হয়েছে। এক কথায় মানব সভ্যতার শুরু থেকে আজ অব্দি স্বর্ণ একটা বিশেষ মূল্য পেয়ে এসেছে। 

তাছাড়া সময়ের সাথে সাথে স্বর্ণের আরও গুনাগুন প্রকাশ পেয়েছে আর সেই সাথে বেড়েছে এর ব্যাপ্তি। স্বর্ণের নানা গুন, সৌন্দর্য, নানা রহস্যের জন্য স্বর্ণের চাহিদা বা জনপ্রিয়তা আবিষ্কার এর সময় থেকে আজ পর্যন্ত একটুকও কমে নি। 

  1. স্বর্ণ একটা খুব নরম ধাতু যা খুব সহজে গলানো যায় এবং যেমন খুশী তেমন শেইপ দেয়া যায়। প্রাচীনকালে মানুষের তেমন আধুনিক প্রযুক্তি ছিল না যা দিয়ে কঠিন কোন কাজ করতে পারে। তাই সহজে নানা শেইপ দেয়া এবং অন্যান্য শিল্পকর্ম তৈরীর জন্য স্বর্ণ বহুল প্রচলিত ছিল। আর যারা সমভ্রান্ত পরিবারের বা রাজা বাদশাহরা ব্যবহার করতেন। কারণ সৌখিন বা বিলাসিতার জন্য স্বর্ণের তৈরী জিনিস ছিল অতুলনীয়। 

স্বর্ণের বর্তমান দাম

  • স্বর্ণ বিনিময়ের মাধ্যম হিসেবে ব্যবহার হওয়া শুরু হলো বহু আগে থেকেই। যখন মানুষ কোন পণ্য এর পরিবর্তে কোন পণ্য দেয়ানেয়া করত ঠিক এরপর শুরু হলো মুদ্রার প্রচলন। আর এই মুদ্রা তৈরী হলো স্বর্ণ দিয়ে। আর এভাবেই সকলের কাছে স্বর্নের মূল্য আরও বৃদ্ধি পেল।

স্বর্ণের বর্তমান দাম

  • স্বর্ণ অন্যান্য ধাতুর মতন বিক্রিয়া করে না। এটি লোহার মতন কালচে হয়ে যায় না। স্বর্ণকে বছরের পর বছর একই স্থানে ফেলে রাখলেও একই রকমই থাকে। সোনার মুদ্রার ওজন কমেও না আবার বাড়েও না । তাছাড়া অন্যান্য ধাতুর কালার প্রায় একই রকম হলেও সোনার কালার আলাদা। তাই এর বিশেষত্বের কারণেই স্বর্ণ অনেক মূল্যবান।
  • এখনত স্বর্ণ বিলাসিতারও প্রতীক বলা চলে। যে কোন ব্যবহৃত আসবাপ বা পরিধেয় কোন পোশাকে স্বর্ণ মিশ্রিত করে তৈরী করছে। মোবাইল, ঘড়ি, গাড়ি, চশমাতে পর্যন্ত স্বর্ণ ব্যবহার করে থাকে। আর এই বিলাসিতার পরিচায়ক হওয়ায় স্বর্ণ মূল্যবান সবার কাছে।
  • স্বর্ণের বর্তমান দাম

বর্তমান বাজারে কয় ধরনের স্বর্ণ পাওয়া যায়?

এখন বাজারে ৪ ধরনের স্বর্ণ সচরাচর পাওয়া যায়।

১. ২৪ ক্যারেট সোনা।

২. ২২ ক্যারেট সোনা।

৩. ২১ ক্যারেট সোনা।

 

৪. ১৮ ক্যারেট সোনা ।

৫. ১৪ ক্যারেট সোনা।

৬. ১২ ক্যারেট সোনা।

 

৭. ১০ ক্যারেট সোনা।

৮. সনাতন সোনা।

 

২৪ ক্যারেট সোনা কিঃ  ২৪ ক্যারেট সোনাকে বলা হয় বিশুদ্ধ সোনা।

  •     এতে ৯৯.৯% খাঁটি স্বর্ণ থাকে।
  •      এতে অন্য কোন ধাতবের খাদ থাকে না।
  •     এই স্বর্ণকে ৯৯৯ স্বর্ণও বলা হয়ে থাকে কোন কোন দেশে
  •     ২৪ ক্যারেট বেশ নমনীয় থাকে যে কারণে সহজে স্ক্রেচ পড়ে।

 

২২ ক্যারেট সোনা

  1. ২২ ক্যারেট স্বর্ণ ৯১.৭ শতাংশ বিশুদ্ধ সোনা থাকে।
  2. বাকী ৮ % থাকে অন্যান্য ধাতু।
  3. তামা, নিকেল,দস্তা, রৌপ্য ইত্যাদি থাকবে মিশ্রণ হিসেবে।

 

  1. অলংকার তৈরীর জন্য সবচেয়ে ভাল সোনা এটি।
  2. এর সাথে অন্যান্য খাদগুলো থাকার জন্য স্বর্ণ শক্ত হয়। কারণ বিশুদ্ধ স্বর্ণ নরম হওয়ায় তা দিয়ে অলংকার তৈরী করা হয় না।
  3. ৯১৬ গোল্ড হিসেবে চেনা হয় এবং ডাকা হয় ২২ ক্যারেট গোল্ডকে।

 

২১ ক্যারেট সোনা

২১ ক্যারেট সোনার মধ্যে ২২ ক্যারেট সোনা অপেক্ষা খাদ এর পরিমাণ আরও একটু বেশী থাকে।

  1. ৮৭.৫% পিউর স্বর্ণ থাকে ২১ ক্যারেট সোনার মাঝে।
  2. ১২.৫% থাকে অন্যান্য খাদ।

 

  1. সিলভার , জিংক, পেলাডিয়াম, নিকেল, এবং কপার থাকে খাঁদ হিসেবে।
  2. ৮৭৫ গোল্ড হিসেবে ডাকা হয় ২১ ক্যারেট সোনাকে।

 

১৮ ক্যারেট সোনা

  1. 75% খাঁটি সোনা থাকে ১৮ ক্যারেট সোনার মধ্যে।
  2. 25% অন্যান্য ধাতু থাকে খাদ হিসেবে।

 

  1. সিলভার , জিংক, নিকেল, এবং কপার ইত্যাদি থাকে খাঁদ হিসেবে।
  2. এই সোনাকে ৭৫০ স্বর্ণ হিসেবেও ডাকা হয়।

 

  1. বর্তমান সময়ে যে হোইট গোল্ড বা সাদা সোনা এত জনপ্রিয় হয়েছে তা কিন্তু এই ১৮ ক্যারেট সোনা। ১৮ ক্যারেট সোনাকেই বলা হয় হোইট গোল্ড সোনা।

স্বর্ণের বর্তমান দাম

১৪ ক্যারেট সোনা

  1. 58.30% খাঁটি সোনা থাকে ১৪ ক্যারেট সোনার মধ্যে।
  2. 42.70% অন্যান্য ধাতু থাকে খাদ হিসেবে।

 

  1. সিলভার , জিংক, নিকেল, এবং কপার ইত্যাদি থাকে খাঁদ হিসেবে।
  2. এই সোনাকে ৫৮৫ স্বর্ণ হিসেবেও ডাকা হয়।

 

  1. ১৮ এবং ১৪ ক্যারেট সোনাই হচ্ছে হোইট গোল্ড সোনা। মানে হোইট গোল্ড সোনায় ১৪ অথবা ১৮ ক্যারেট স্বর্ণ বেশী ব্যবহৃত হয়ে থাকে।

১২ ক্যারেট সোনা

  1. 50% খাঁটি সোনা থাকে 12 ক্যারেট সোনার মধ্যে।
  2. 50% অন্যান্য ধাতু থাকে খাদ হিসেবে।

 

  1. সিলভার , জিংক, নিকেল, এবং কপার ইত্যাদি থাকে খাঁদ হিসেবে।
  2. ১২ ক্যারেট সোনাও হোইট গোল্ড সোনা।

 

  1. সাধারণত স্থ্যপত্য কর্মে , ছবির ফ্রেম তৈরীতে, বিভিন্ন শিল্পকর্মের ডিজাইন হিসেবে এই সোনা বেশী ব্যবহার হয়ে থাকে।

স্বর্ণের বর্তমান দাম

১০ ক্যারেট সোনা

  1. 41.7% খাঁটি সোনা থাকে 10 ক্যারেট সোনার মধ্যে।
  2. 59.3% অন্যান্য ধাতু থাকে খাদ হিসেবে।

 

  1. সিলভার , জিংক, নিকেল, এবং কপার ইত্যাদি থাকে খাঁদ হিসেবে।

 

24 ক্যারাট = 100% ক্যারাট অথবা বিশুদ্ধ স্বর্ণ
 22 ক্যারাট = 91.7 % স্বর্ণ
 18 ক্যারাট = 75.0 % স্বর্ণ

 14 ক্যারাট = 58.3 % স্বর্ণ
 12 ক্যারাট = 50.0 % স্বর্ণ
 10 ক্যারাট = 41.7 % স্বর্ণ

  স্বর্ণ কেনার সময় যে বিষয়গুলো মাথায় রাখতে হবে

বিয়ে বা অন্য কোন অনুষ্ঠানে প্রিয় মানুষটির জন্য স্বর্ণে তৈরী কোন অলংকার উপহার দিতে চাচ্ছেন কিন্তু আপনি না জেনে না বুঝে হুট করে স্বর্ণের অলংকার কিনে নিলেন। এরপর দেখলেন কয়দিন পর সেই অলংকার কালো হয়ে যাচ্ছে, কালারও কেমন যেন ফ্যাকাশে হয়ে যাচ্ছে। 

 

তার মানে দাড়াচ্ছে আপনি যে অলংকার কিনেছেন তা আসল স্বর্ণ নয়। আর প্রিয় মানুষটির খুশীর জন্য তাকে উপহার দিলেন আর সেই মূল্যবান উপহার দুই নাম্বার হওয়ার জন্য আপনার সম্পর্ক আরও অবনতি হল। স্বর্ণের বর্তমান দাম

তাই স্বর্ণ কেনার আগে অবশ্যই কিছু বিষয় আপনার মাথায় রাখতে হবে। চলুন জেনে নেই খুঁটিনাটি সেই বিষয় গুলো- 

কত ক্যারেট এর সোনা কিনতে যাচ্ছেনঃ স্বর্ণের মধ্যে খাদ থাকে। খাঁদ না থাকলে বরং সমস্যা। কিন্তু প্রশ্ন হলো কতটুকু খাঁদ থাকতে হবে। মূলত ২৪ ক্যারেট এর যে স্বর্ণ তাতে খাঁদের পরিমাণ ০.১ পরিমান। যেখানে মূলত ৯৯.৯ পরিমাণ স্বর্ণ রয়েছে। 

কিন্তু এই স্বর্ণ দিয়ে কোন অলংকার তৈরী করা যায় না। 

স্বর্ণের বর্তমান দাম

আবার ২২ ক্যারেট এর সোনায় থাকে ৯১.৬% খাঁটি স্বর্ণ এবং ২১ ক্যারেটে থাকে ৮৭% খাঁটি সোনা। এই দুই ধরনের স্বর্ণ দিয়েই মূলত স্বর্ণের অলংকার তৈরী করা হয়ে থাকে। মূলত একদম খাঁটি সোনা মানে ২৪ ক্যারেট সোনা দিয়ে অলংকার 

তৈরী হবে না কারণ এই সোনা অত্যন্ত নরম। যাকে কোন শেইপ দেয়া যাবে ঠিকই কিন্তু নরম হওয়ার কারনে সহজে আবার অন্য শেইপ নিয়ে নিবে। আবার খাঁদ এর মাত্রা বেশী হয়ে গেলেও কিছু দিন পর স্বর্ণের যে কালার তা হারাতে থাকবে। 

তাহলে করণীয় কী? কিভাবে বুঝবো যে কোন স্বর্ণে কতটুকু খাঁদ রয়েছে। খাঁদ বেশী থাকা যেমন ভাল না আবার স্বর্ণে খাঁদ এর পরিমাণ একবারে কমম থাকাও ভাল না। 

 

ভেজাল স্বর্ণ না খাঁটি স্বর্ণ তা যেভাবে বুঝবোঃ

 স্বর্ণে মিশানো খাঁদের উপর যেহেতু  নির্ভর করে ভেজাল আর খাঁটির তাই  তা পরীক্ষা করার জন্য স্পেকট্রোমিটার নামে একটা যন্ত্র রয়েছে। এই যন্ত্রে স্বর্ণ পরিমাপের পর যন্ত্রই বলে দিবে যে স্বর্ণে কতটুকু

 

খাঁদ রয়েছে আর কতটুকু আসল স্বর্ণ। তাই  কেনার সময় দোকানদারকে বলবেন আপনাকে যেন স্পেকট্রাম মেশিনে মেপে এবং আপনাকে দেখিয়ে স্বর্ণ দেয়। তাহলে কিছুটা হলেও প্রতারণা থেকে মুক্ত হতে পারবেন। 

দরদাম করাঃ

 আমাদের অনেকেই আছেন যারা স্বর্ণের দরদাম তেমন করতে চান না। কিন্তু এটা করা বোধহয় ঠিক না। আপনার যতই টাকা থাকুক আসল দাম জেনে তারপরই সোনা কিনুন। আর দরদাম করে পণ্য কেনাও সুন্নত। স্বর্ণের বর্তমান দাম

তৈরীর উপর বিশেষ মূল্য ছাড়: 

বিশেষ ছাড়ের কথা বলে ব্যবসায়ীরা আপনাকে নকল সোনা ধরিয়ে দিতে পারে। ধরেন এক দোকানে যে টাকায় সোনা কিনছেন অন্য দোকানে মুজুরি মূল্য ফ্রী। তাহলে আপনি ফ্রী পেয়ে সেই দোকানেই স্বর্ণ কিনতে যাবেন।

 

তাই সেই দোকানের স্বর্ণটা কেমন তা আগে পরীক্ষা করুন। ফ্রী পেলাম আর ঝটপট কিনে নিলাম এমনটা করা বুদ্ধিমানের কাজ হবে না। তাই বিশেষ মূল্য ছাড় এর ফাঁদে পা দিবেন না। তবে সব প্রতিষ্ঠান যে ঠক বা প্রতারক হবে তা কিন্তু নয়। মূল কথা আপনারা যেন ফঁদে পা না দেন সেই জন্যই এত কথা। 

 

কয়েক দোকান ঘুরুনঃ অনেকেরই পরিচিত কেই হয়ত স্বর্ণের ব্যবসা করে আর আপনি গিয়ে তার কাছ থেকে অফলংকার কিনে নিয়ে আসেন।

এটা করতে পারেন যদি ব্যবসায়ী একান্তই আপনার বিশ্বস্ত হয়। তবে ভাল হয় বেশ কিছু দোকান দেখে, কথা বলে যাচাইবাছাই করে তারপর অলংকার কেনা। তাই বেশ কিছু দোকান যাচাই-বাছাই করে তারপর স্বর্ণ কিনুন। 

পাথরযুক্ত  স্বর্ণ

সোনার গয়নায় পাথর যেন চোখকে আরও বেশী আকর্ষণ করে। পাথর এর জন্য স্বর্ণ দিয়ে তৈরী অলংকার যতই দেখতে সুন্দর হোক না কেন আপনার মূল উদ্দেশ্য হওয়া উচিৎ ভাল স্বর্ণ কেনা। দেখতে সুন্দর হলেই 

যে  স্বর্ণ ভাল হয়ে যাবে তার কোন কারণ নেই। তাই দেখতে সুন্দর, নানা বাহারি রংয়ের পাথরে মোড়ানো স্বর্ণ কেনার আগে নিজেকে প্রশ্ন করে নিবেন, যে স্বর্ণটা কিনছি তা কি আসল নাকি এত কোন ভেজাল আছে।

 

আরো পড়ুনঃ শিশু নিয়ে উক্তি, ছন্দ, কবিতা

স্বর্ণের বর্তমান দাম

স্বর্ণ কিনে বিনিয়োগ করাঃ

স্বর্ণ কিনে অনেকে ব্যবসা করতে চান। আর ব্যবসা করতে চাইলে আপনাকে চোখ কান খোলা রাখতে হবে। ‍যদি আপনি ব্যবসা করতে চান তাহলে আপনাকে সবসময় বাজারের খবর রাখতে হবে। কোথা থেকে ভাল স্বর্ণ কিনতে পারেন তার খোঁজখবর রাখা জরুরি। 

 

আর যদি আপনি দেশের বাহিরে কারও সাথে লিংক রাখতে পারেন তাহলে হয়ত আরও ভাল খবর এবং ভাল দামে স্বর্ণ কিনতে পারবেন। তাই স্বর্ণ কিনে বিনিয়োগ ভাল ব্যবসা বটে কিন্তু আপনাকে এক্ষেত্রে চৌকোষ হতে হবে।  স্বর্ণ ব্যবসায় যেমন লাভ তেমনই লস এরও সম্ভাবনা রয়েছে। যদি ভেজাল স্বর্ণ কিনেন তাহলে আপনার ব্যবসায় লাল বাত্তি জলবে। 

 

আমেরিকার সংবাদমাধ্যম  সিবিএস এর এক প্রতিবেদনে বলা হয় যদি ব্যবসায়ীরা মোটা দাগে ৫ টি বিষয়কে মাথায় রেখে ব্যবসার উদ্দেশ্যে আগায় তাহলে  ধোঁকার হাত থেকে বাঁচার সম্ভাবনা অনেকটাই বেশী।

১. ডিলারের সুনাম : 

স্বর্ণ কেনার আগে প্রসিদ্ধ ডিলারকে বেছে নেন। যারা দীর্ঘদিন ধরে বাজারে ব্যবসা করে আসছে। কারণ বাজারে ফেইক এর অভাব নেই। যেহেতু সহজে দেখেই আপনি বুঝতে পারবেন না যে কোনটা আসল স্বর্ণ আর কোনটা নকল স্বর্ণ তাই খ্যাতনামা ডিলারের কাছ থেকে স্বর্ণ কিনলে কিছুটা হলেও নিশ্চিত থাকতে পারেন। স্বর্ণের বর্তমান দাম

২. বিশুদ্ধতা : 

ভাল ডিলারের কাছ থেকে স্বর্ণ কিনলেই আপনার দায়িত্ব শেষ না। আপনি নিজে স্বর্ণের বিশুদ্ধতা পরীক্ষা করে নিন। আপনি  কি উদ্দেশ্যে স্বর্ণ নিচ্ছেন এবং কোন স্বর্ণ নিচ্ছেন তা যাচাই-বাছাই করে নিন।

 

২৪ ক্যারেট না কি ২২ নাকি ১৮ ক্যারেট স্বর্ণ নিচ্ছেন তা যাচাই বাছাই করে নিন। তাই একজন ব্যবসায়ী হিসেবে আপনাকে আগে থেকেই সতর্ক হয়ে যেতে হবে এবং বিশুদ্ধ স্বর্ণ চেনার সকল কলাকৌশল আপনাকে জেনে নিতে হবে। 

৩. ওজন দেখে কিনুন : 

আপনি যখন স্বর্ণ কিনবেন তখন স্বর্ণের বার ও কয়েন হয়ত কিনবেন আপনি। যেহেতু ওজন এর সামান্য তারতম্য হলেই দাম অনেক পরিবর্তন হয়ে যায় তাই কেনার আগে ওজনটা ভালভাবে বুঝে নিন। স্বর্ণের বার মূলত ট্রয় আউন্সে পরিমাপ করা হয়। একটা স্বর্ণের বার মূলত ৪০০ বার আউন্স হয়ে থাকে। আর কয়েন ১ ট্রয় আউন্স , ১/২ ট্রয় আউন্স, ১/৪ ট্রয় আউন্স এবং ১/১০ ট্রয় আউন্স ওজনের হয়। তাই ওজনটা ভাল করে পরীক্ষা করে তারপর স্বর্ণ কিনুন। 

     স্বর্ণের বর্তমান দাম

৪.হলমার্ক দেখে নিনঃ 

হলমার্ক দেখে স্বর্ণ কিনুন। যতই আপনি নামিদামী প্রতিষ্ঠান থেকে স্বর্ণ কিনুন না কেন অবশ্যই যাচাই-বাছাই করে স্বর্ণ কিনতে হবে। আর সেই জন্য আপনি প্রথমেই স্বর্ণের গায়ে হলমার্ক দেখে নিন। আরও একটি কাজ করতে পারেন,  চৌম্বক দিয়ে স্বর্ণ পরীক্ষা করে নিতে পারেন। স্বর্ণ চৌম্বক দ্বারা আকর্ষণ হবে না। 

৫. প্রিমিয়াম মূল্য : স্বর্ণের মূল্য অবশ্যই প্রিমিয়াম থাকবে। আসল স্বর্ণ কখনই অল্প মূল্যে বিক্রি হবে না। যদি তা হয় তাহলে বুঝতে হবে কোথাও সমস্যা আছে। আসল সোনা প্যাকেটজাত হয় এবং এর মধ্যে উৎপাদনের তারিখও লিখা থাকে। তাই  কেনার সময় এসব বিষয়ও মাথায় রাখতে হবে। এর পাশাপাশি আগামীতে বাজার কেমন থাকবে বা কেমন হতে পারে তাও মাথায় রাখতে হবে।

৩. খাটি স্বর্ণ চেনার উপায় কি? স্বর্ণের বর্তমান দাম|স্বর্ণের দাম

স্বর্ণের বর্তমান দাম

হলমার্ক দেখে নিন: 

হলমার্ক দেখে স্বর্ণ কিনুন। স্বর্ণ এর মাঝে খোদাই করে লিখা থাকে ২৪/২২/২১/১৮ ক্যারেট এর সোনা। সাধারণত ২৪ ক্যারেট এর সোনা সবচেয়ে বেশী বিশুদ্ধ কিন্তু তা দিয়ে অলংকার তৈরী করা যায় না। তাই ২২ ক্যারেট সোনাই বেশী ভাল যদি আপনি অলংকার কিনে থাকেন। তাই প্রথমে হলমার্ক এর লিখা দেখে খাঁটি সোনা চিনে নিতে হবে। 

সোনায় লোহা মেশানো: 

খাঁটি সোনা চেনার আরেক উপায় হল চুম্বক দিয়ে পরীক্ষা করা। আপনি যদি খাঁটি সোনা কিনেন তাহলে 

সোনায় যদি লোহা মেশানো থাকে, তা হলে চুম্বক ধরলেই সেটা টেনে নেবে। সোনায় লোহা মোশানো আছে কি না, তা চুম্বক ব্যবহার করে অবশ্যই পরখ করে নিন।

স্বর্ণের বর্তমান দাম

রাসায়নিক ও এসিড

আপনি বাজার থেকে কিছু এসিড নিতে পারেন সোনা পরীক্ষা করার জন্য। একটা ড্রপারে নাইট্রিক এসিড নিন এরপর তা স্বর্ণে ওপর দু এক ফোঁটা করে ফেলুন। যদি এরফলে রং পরিবর্তন হয়ে যায় তাহলে বুঝতে হবে যে স্বর্ন ভেজাল। আর যদি কোন রং এর পরিবর্তন না হয় তাহলে বুঝতে হবে যে সোনাটি খাঁটি। 

সাদা চিনেমাটির প্লেট: 

আপনি শুনলে কিছুটা অবাকই হবেন যে একটা চিনেমাটির প্লেইট এর মাধ্যমে বুঝতে পারবেন আপনার সোনা আসল নাকি নকল। প্রথমে সোনার 

গয়নাটি চিনামাটির প্লেইট এর উপর ঘষুন এরপর কিছুক্ষণ পর যদি প্লেইট এর উপর কাল দাগ পড়ে যায় তাহলে বুঝতে হবে স্বর্ণটি নকল। 

স্বর্ণের বর্তমান দাম

আর যদি প্লেইট এর উপর সোনালী রং পড়ে তাহলে বুছতে হবে স্বর্ণটি আসল। এখন বাসায় থাকা অলংকারটি নিয়ে পরীক্ষা করে দেখুন আপনার সোনার অলংকার আসল নাািক নকল। 

দুই গ্লাস পানি পরীক্ষা:

 

একটা পাত্র নিন। এরপর সেই পাত্রে দুই গ্লাস পানি নিন। সেই পানির মাঝে স্বর্ণের তৈরী অলংকারটি রাখুন। যদি অলংকার ভেসে থাকে তাহলে বুঝতে হবে যে স্বর্ণটি নকল। আর যদি তা পুরোপুরি ডুবে যায় তাহলে বুঝতে হবে যে এটি আসল। 

দাঁতে কামড়: 

আপনি যে সোনার অলংকারটি কিনেছেন বা তৈরী করেছেন তার গাঁয়ে দাঁতে কামড় দিন। যদি অলংকার এর গাঁয়ে হালকা দাগ পড়ে তাহলে বুঝতে হবে যে এটি 

আসল সোনা। আর যদি এতে কোন দাগ বা রেখাপাত না হয় তাতে বুঝতে হবে যে এটিতে বেশী পরিমাণ অন্য ধাতুর ভেজাল মেশানো আছে। তাতে দাঁতে কামড়ে বুছে নিন স্বর্ণ আসল নাকি নকল। 

ভিনেগার দিয়ে পরীক্ষা: 

সোনার যে অলংকার তৈরী করেছেন তাতে কয়েক ফোঁটা ভিনেগার দিন । এরপর যদি দেখেন স্বর্ণের রং পরিবর্তন হয়েছে  তাতে বুঝবেন স্বর্ণ ভেজাল। আর যদি বোঝেন যে এটরে রং পরিবর্তন হয় নি তাহলে বুঝতেত  হবে এটি আসল সোনা। 

ঘাম দিয়ে খাঁটি সোনা পরীক্ষা: 

সাধারণত ঘামের সংস্পর্শে সোনা রাখলে তাতে ঘামের গন্ধ করে না। তাছাড়া ঘামের কারণে কোন বিক্রিয়াও করে না। আর যদি সোনার মধ্যে ঘামের গন্ধ ধরে তাহলে বুঝতে হবে এটি ভেজাল সোনা। 

বিশ্বস্ত দোকানী: 

নকল সোনা কিনতে না চাইলে এমন দোকান থেকে স্বর্ণ কিনবেন যাদের দীর্ঘ দিনের সুনাম রয়েছে বাজারে। বহুদিন ধরে ব্যবসা করে আসছে। আর যদি একান্ত বিশ্বস্ত দোকানীর কাছ থেকে অলংকার কিনতে পারেন তাহলেতো আর টেনশন এর কারণই নেই। তাই বিশ্বস্ত দোকান থেকে স্বর্ণ কিনুন। 

স্বর্ণের বর্তমান দাম

সোনার দাম উঠানামা করে কেন?স্বর্ণের বর্তমান দাম|স্বর্ণের দাম

সোনার দাম বিভিন্ন কারণে উঠানামা করতে পারে। মূলত  বিশ্ব বাজারে সরবরাহ ও চাহিদার গতিশীলতার উপর সোনার দাম নির্ধারিত হয়। সোনার দাম বাড়তে পারে এবং কমতে পারে এমন কিছু মূল কারণ এখানে আলোচনা করা হল:

নিরাপদ স্বর্গীয় সম্পদ : 

স্বর্ণের বর্তমান দাম

অর্থনৈতিক ও ভূ-রাজনৈতিক অনিশ্চয়তার সময়ে সোনাকে প্রায়ই নিরাপদ-স্বর্গীয় সম্পদ হিসেবে বিবেচনা করা হয়। যখন মুদ্রাস্ফীতি, মুদ্রার ওঠানামা, বা রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা নিয়ে  দুনিয়া টালমাটাল তখন বিনিয়োগকারীরা নিশ্চিত লাভের আশায় সোনা দিকে যেতে পারে।

মুদ্রাস্ফীতি : 

স্বর্ণের বর্তমান দাম

স্বর্ণকে ঐতিহ্যগতভাবে মুদ্রাস্ফীতির বিরুদ্ধে কাজ করে বলে বিবেচনা করা হয়।  যখন মূল্যস্ফীতি বাড়বে বলে আশা করা হয়, বিনিয়োগকারীরা তাদের সম্পদ সংরক্ষণের জন্য সোনা কিনে নেয়।  কারণ স্বর্ণ মূল্যের একটি স্থিতিশীল দোকান হিসাবে বিবেচনা করা হয়।

সেন্ট্রাল ব্যাঙ্কের নীতি: 

কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্কের নীতি এবং বিবৃতি সোনার দামকে প্রভাবিত করতে পারে। উদাহরণস্বরূপ, যদি কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্কগুলি একটি শিথিল আর্থিক নীতির গ্রহণ করে বা উল্লেখযোগ্য অর্থ মুদ্রণে জড়িত থাকে, তাহলে এটি মুদ্রার অবমূল্যায়নের বিষয়ে উদ্বেগ সৃষ্টি করতে পারে, যা বিনিয়োগকারীদের সোনা কিনতে প্ররোচিত করে।

স্বর্ণের বর্তমান দাম

সুদের হার:

 সোনার দাম প্রায়ই সুদের হারের সাথে বিপরীত সম্পর্ক রাখে। যখন সুদের হার কম হয়, তখন সোনা কেনার সুযোগ খরচ (যা সুদ বা লভ্যাংশ দেয় না) কম হয়, সোনাকে আরও আকর্ষণীয় করে তোলে।

ডলারের শক্তি বা দুর্বলতা:

 মার্কিন ডলারে সোনার মূল্য নির্ধারণ করা হয়, তাই ডলারের মূল্যের পরিবর্তন সোনার দামকে প্রভাবিত করতে পারে। যখন ডলার দুর্বল হয়, তখন অন্যান্য মুদ্রা ব্যবহার করে বিনিয়োগকারীদের জন্য সোনা সস্তা হয়ে যায়, তখন চাহিদা বৃদ্ধি পায়। আবার ডলারের দাম, বৃদ্ধি পেলে সোনার দামটাও বেড়ে যায়।

সরবরাহের সীমাবদ্ধতা: 

সোনার খনির উৎপাদন, অনুসন্ধান এবং সরবরাহের উপর সোনার  দামকে প্রভাবিত করতে পারে। যদি স্বর্ণের উৎপাদনে বাধা পায় বা কমে যায়, তখন সোনার সরবরাহ হ্রাস পায়। আর তখনই  সম্ভাব্য সোনার  দাম বেড়ে যায়। আবার সোনার উৎপাদন বা উৎপাদন যখন প্রচুর হয় তখন এর দামও কিছুটা কমের দিকে থাকে। 

গহনা এবং শিল্প চাহিদা: 

সোনা শুধুমাত্র একটি বিনিয়োগ নয়, গয়না এবং বিভিন্ন শিল্প ক্ষেত্রে প্রয়োগেও সোনা ব্যবহৃত হয়। সোনার গহনার জন্য ভোক্তাদের চাহিদার উপর ভিত্তি করে সোনার দাম ওঠানামা করে।

যেমন আমাদের দেশ ও ভারতে বছরের মাঝামাঝি সময়ে তেমন সোনার চাহিদা থাকে না। কিন্তু বছরের শেষে বা বিয়ের মৌসুমে সোনার ব্যাপক চাহিদা থাকে। আার ৩েয কারণে তখন দামটাও বেশী হয়ে থাকে। 

স্বর্ণের বর্তমান দাম

বৈশ্বিক অর্থনৈতিক অবস্থা: 

অর্থনৈতিক মন্দা সোনার দাম বৃদ্ধি করতে পারে। যেমন রাশিয়া ইউক্রেন এর যুদ্ধ বা ইসরাইল ও ফিলিস্তিন এর যুদ্ধের কারণে সারা পৃথিবীতে অর্থনৈতিক মন্দা চলছে।

 ব্যবসা- বাণিঝ্যে নানা প্রতিবন্ধকতা দেখা দিচ্ছে। আর ঠিক এই সময়ই আমাদের দেশ সহ নানা দেশে সোনার দাম স্মরণকালের মধ্যে সবচেয়ে বেশী বৃদ্ধি পেয়েছে।

 গোল্ড কাউন্সিল বলছে, গত জুলাই মাসে বিশ্বের বিভিন্ন কেন্দ্রীয় ব্যাংক ৩৭ টন সোনা কিনেছে। এর মধ্যে কাতার একাই কিনেছে ১৫ টন। এর মাধ্যমে তারা ৭২ টন সোনার মজুত গড়ে তুলল। 

অর্থনৈতিক অবরোধ ও অনিশ্চয়তা থেকে বাঁচতেই কাতারের এ উদ্যোগ। এর বাইরে ভারতের কেন্দ্রীয় ব্যাংক কিনেছে ১৩ টন, তুরস্ক ১২ টন এবং উজবেকিস্তান ৯ টন। এর বাইরে কাজাকাস্তান বিক্রি করেছে ১১ টন সোনা।

স্বর্ণের বর্তমান দাম

ভূ-রাজনৈতিক উত্তেজনা: 

রাজনৈতিক অস্থিরতা, দ্বন্দ্ব, বা ভূ-রাজনৈতিক উত্তেজনা আর্থিক বাজারে অনিশ্চয়তা তৈরি করতে পারে। সাধারণত এই সময় নানা দেশের দ্বন্দ্ব-সংঘাত এর ফলে ব্যবসায় বিনিয়োগ করা অনেক চ্যালেন্জিংয় হয়ে পড়ে। সে কারণে বিনিয়োগকারীরা সোনার কিনতে শুরু করে। 

প্রযুক্তিগত অগ্রগতি: 

প্রযুক্তির অগ্রগতি যা ইলেকট্রনিক উপাদান, চিকিৎসা ডিভাইস এবং অন্যান্য উচ্চ প্রযুক্তির অ্যাপ্লিকেশনগুলিতে সোনার ব্যবহার দিন দিন বেড়েই চলেছে। আর যে কারণে সোনার উচ্চ মূল্যে এটি প্রভাব ফেলবে। 

স্বর্ণের বর্তমান দাম

গোল্ড ইটিএফ এবং ইনভেস্টমেন্ট ভেহিক্যালস: গোল্ড এক্সচেঞ্জ-ট্রেডেড ফান্ড (ইটিএফ) এবং সোনার সাথে সংযুক্ত অন্যান্য বিনিয়োগ যানের জনপ্রিয়তা এর দামকে প্রভাবিত করতে পারে। এই তহবিলগুলি থেকে বৃহৎ প্রবাহ বা বহিঃপ্রবাহ সোনার সামগ্রিক বাজারের চাহিদাকে প্রভাবিত করতে পারে।

খনির খরচ বৃদ্ধি: 

খনি থেকে  সোনা উত্তোলন অনেকাংশে বৃদ্ধি পেলে সোনার দাম এমনেতেই বৃদিআধ পায়।  উচ্চ উৎপাদন খরচ সোনার আউটপুট হ্রাস করতে পারে, সম্ভাব্যভাবে দামের উপর ঊর্ধ্বমুখী চাপ সৃষ্টি করতে পারে।

ঋতুগত চাহিদা:

 সাংস্কৃতিক এবং ধর্মীয় অনুষ্ঠান বা বিয়ের ও প্রিয় জনকে গিফট এর কারণে প্রধান স্বর্ণ-ভোক্তা দেশগুলিতে, বছরের নির্দিষ্ট সময়ে সোনার দামকে প্রভাবিত করে। তাই মৌসুমভেদে  সোনার চাহিদা বেড়ে যায়। তখন দামতো ওঠানামা করবে সেটাই স্বাভাবিক। 

বৈশ্বিক বাণিজ্য ভারসাম্যহীনতা: 

বাণিজ্য ভারসাম্যহীনতা বা বিশ্ব বাণিজ্যে বাধা মুদ্রার মানকে প্রভাবিত করতে পারে এবং অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তা তৈরী করে। আর যে কারণে সোনার বাজারে ভারসাম্যহীনতা তৈরী হয়। আর দামও ওঠানামা করে। 

আর্থিক বাজারের অস্থিরতা: 

আর্থিক বাজারে উচ্চতর অস্থিরতা বিনিয়োগকারীদেরকে স্বর্ণ  কিনে নিরাপদ বিনিয়োগ এর জন্য উৎসাহিত করে। হঠাৎ বাজারের গতিবিধি এবং অনিশ্চয়তা একটি স্থিতিশীল বিনিয়োগ হিসাবে সোনার প্রতি আগ্রহ বাড়াতে পারে।

পরিবেশগত উদ্বেগ: 

পরিবেশগত সমস্যা এবং টেকসই অনুশীলন সম্পর্কে ক্রমবর্ধমান সচেতনতা খনির নিয়মাবলী এবং উত্পাদন পদ্ধতিগুলিকে প্রভাবিত করতে পারে, সম্ভাব্যভাবে সোনার সরবরাহ এবং খরচকে প্রভাবিত করতে পারে।

ঋণের মাত্রা এবং রাজস্ব নীতি: 

উচ্চ স্তরের সরকারী ঋণ এবং রাজস্ব দায়িত্ব সম্পর্কে উদ্বেগ এর ফলে বিনিয়োগকারীদের  টাকার প্রতি আস্থার অভাব দেখা দেয়। যে কারণে বিনিয়োগকারীরা নিরাপদ ইনভেস্টমেন্ট হিসাবে সোনা কিনে রাখে। 

নেতিবাচক বাস্তব সুদের হার: 

যখন প্রকৃত সুদের হার (মুদ্রাস্ফীতির জন্য নামমাত্র সুদের হার) ঋণাত্মক বা অত্যন্ত কম হয়, তখন স্বর্ণ আরও আকর্ষণীয় হয়ে ওঠে কারণ এটি সুদ দেয় না কিন্তু তার মূল্য ধরে রাখে।

আর্থিক প্রতিষ্ঠানে আত্মবিশ্বাস দুর্বল হওয়া: 

ব্যাংকিং সংকট বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানের প্রতি আস্থা হারানোর ফলে  বিনিয়োগকারীরা  সম্পদ সংরক্ষণ করতে চায়। আর যে কারণে তারা সোনা কিনে রাখতে চায়। আর এই জন্য সোনার দাম বাজারে ওঠঅনামা করে। 

বৈশ্বিক স্বাস্থ্য সংকট:

 মহামারী বা স্বাস্থ্য সংকটের মতো ঘটনা অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তা তৈরি করতে পারে এবং বিনিয়োগকারীদের সোনার মতো নিরাপদ সম্পদের দিকে চালিত করতে পারে।

কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্কগুলির স্বর্ণের রিজার্ভের পরিবর্তন:

 কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্কগুলির তাদের সোনার রিজার্ভ বাড়ানো বা হ্রাস করার সিদ্ধান্ত নেয়ার উপর  সোনার বাজারের সামগ্রিক চাহিদার উপর প্রভাব ফেলে। আর এর জন্য সোনার দাম ওঠানামা করে। 

মুদ্রার অবমূল্যায়ন:

অর্থনৈতিক অব্যবস্থাপনা, উচ্চ মূল্যস্ফীতি, বা অত্যধিক মুদ্রা মুদ্রণের কারণে মুদ্রার অবমূল্যায়ন সম্পর্কে ক্রমাগত উদ্বেগ এর ফলে সোনার চাহিদা কমবেশী হতে পারে। 

সামাজিক অস্থিরতা: রাজনৈতিক বা সামাজিক অস্থিরতা স্বর্ণের চাহিদা বাড়াতে পারে কারণ মানুষ অস্থিরতার সময়ে স্থিতিশীলতা এবং মূল্যের একটি নিরাপদ ভাণ্ডার খোঁজে।

খনির প্রযুক্তিগত অগ্রগতি: 

প্রযুক্তির দিন দিন উন্নতির ফলে স্বর্ণের দাম কমার সম্ভাবনা বাড়ছে। আগে যেখানে প্রচুন কষ্ট হতো স্বর্ণ উত্তোলনে এখন সেখানে অল্প খরচে স্বর্ণ উত্তোলন করা সম্ভব হচ্ছে। আর এটাও স্বর্ণের দামের উপর প্রভাব ফেলছে। 

জনসংখ্যার পরিবর্তন: 

জনসংখ্যার প্রবণতা, যেমন জনসংখ্যা বৃদ্ধি, উদীয়মান বাজারে মধ্যবিত্তের সম্পদ বৃদ্ধি এবং ভোক্তাদের পছন্দের পরিবর্তন, গয়না এবং বিনিয়োগে সোনার চাহিদাকে প্রভাবিত করতে পারে। যেকারণে সোনার চাহিদা বাড়তে পারে। আর চাহিদার সাথে সাথে যোগান বৃদ্ধি না পেলে দাম ওঠানামা করবে সেটাই স্বাভাবিক। 

সর্বপরি সোনার দাম ওঠানামা করবে যখন সমাজবাস্তবতা অনিশ্চিত অবস্থায় থাকে। বাজার যত অনিশ্চিত সোনার দাম তত বেশী নিশ্চিত। 

 মহামারির বছর ২০২০ সালেও সোনা উত্তোলন হয়েছিল আগের বছরগুলোর মতোই, ৩ হাজার ৪৭৬ টন। তবে সাধারণত সোনার সরবরাহ বাড়ে মূল্যবৃদ্ধির সময়টাতেই। দাম বাড়লে অনেকেই হাতে থাকা সোনা বেশি মুনাফার আশায় বিক্রি করে দেন, অনেকে আবার জীবনযাত্রার বাড়তি ব্যয় মেটাতেও সোনা বিক্রি করেন।

জ্বালানি তেলের সাথে সোনার দাম বাড়ে

জ্বালানি তেলের ক্রয়বিক্রয় এর সাথেও  সোনার দামের সম্পর্ক রয়েছে। সাধারণত দেখা গেছে, জ্বালানি তেলের দাম বেড়ে গেলে স্বর্ণের দামও বেড়ে যায়। কারণ, অনেক দেশই তখন স্বর্ণের বিনিময়ে জ্বালানি তেল বিক্রি করে থাকে। আর যেহেতু এখন ডলারের কারণে বিশ্বের মুদ্রাবাজারে অস্থিরতা চলছে, ফলে বিনিময় মাধ্যম হিসেবে সোনার চাহিদাও বাড়ছে।

 

স্বর্ণের-বর্তমান-দামস্বর্ণের-দামআজকের-স্বর্ণের-দাম-বাংলাদেশ
                                    স্বর্ণের-বর্তমান-দামস্বর্ণের-দামআজকের-স্বর্ণের-দাম-বাংলাদেশ

 

 

 কিভাবে সোনা সংক্রান্ত ব্যাবসা শুরু করা সম্ভব?স্বর্ণের বর্তমান দাম|স্বর্ণের দাম

মানুষ বহুকাল ধরেই সোনার অলংকার ব্যবহার করে আসছে। আর যেখানে মানুষের চাহিদা রয়েছে সেখানেই ব্যবসা তৈরী হবে। মানুষ নিজেদের সাজিয়ে গুছিয়ে রাখার জন্য এবং পাশাপাশি সম্পদ হিসেবে এই স্বর্ণ অলংকার নিজেদের 

 

কাছে জমিয়ে রাখে। আর প্রয়োজনের কারণেই এই সোনাকে ঘিরে তৈরী হয়েছে ব্যবসা। আর তাই বহু মানুষ এখন সোনার ব্যবসা শুরু করেছে এবং ভবিষ্যতেও করবে। তাই আপনি যদি নিজের ব্যবসা শুরু করতে চান বা করবেন বলে  ভাবছেন তাহলে আমাদের এই লিখাটা পড়ে ফেলুন। আশা করি কাজে আসবে। 

১)খুচরা ব্যাবসা

এখন অনলাইনের দুনিয়ায় বড়লে গেছে ব্যবসা বাণিজ্য। আপনি এখন চাইলেই হাতে থাকা মুঠো ফোন দিয়ে ব্যবসা করতে পারেন। কোন একজন স্বর্ণকার এর দোকান থেকে বানানো অলংকার ফেইসবুক পেইজ বা ওয়েবসাইটের মাধ্যমে আপনি চাইলে বুস্ট করতে পারেন।  আর এর মাধ্যমে এখন খুব কম পুঁজিতে ব্যবসা করতে পারেন নিজের ঘরে বসে। 

তাছাড়া কাস্টমার এর অর্ডারও নিতে পারেন এবং অলংকার প্রস্তুত করে তা বিক্রয় করতে পারেন। 

২)গোল্ড বন্ড-

সোনা সংক্রান্ত ব্যাবসার আরও একটি উল্লেখযোগ্য উপায় হল গোল্ড বন্ড ক্রয় করা এবং সঠিক সময়ে তা পুনরবিক্রয় করে অর্থ উপার্জন করা। এই ব্যাবসায় আপনাকে সরাসরি সোনা বা সোনার গহনা কখনই কিনতে বা মজুত করতে হয় না। তা সত্বেও আপনি যে ব্যাবসায়িক কাজকর্ম করেন তা সোনার সাথে সরাসরি যুক্ত। এই ব্যাবসা আপনি খুব কম পরিমান অর্থ দিয়েও শুরু করতে পারেন।

৩)গোল্ড মিউচুয়াল ফান্ড-

মিউচুয়াল ফান্ড হল সেই ক্ষেত্র যখন একাধিক মানুষের অর্থ এক স্থানে নিয়ে এসে সেই অর্থ ব্যাবহার করে কোনও বিশেষ পন্য ক্রয় করা হয়। সাধারনত অধিকাংশ মিউচুয়াল ফান্ডের ক্ষেত্রে এই পন্য হল আসলে বিনিয়গ। বিনিয়গ করার অর্থ হল কোন ব্যাবসায়িক বা অব্যাবসায়িক প্রতিষ্ঠানের কর্মকান্ডের

 

জন্য কিছু অর্থ প্রদান করা হয় যার পরিবর্তে সেই প্রতিস্টহান যখন মুনাফা বা উদব্রিত্তের সম্মুখীন হয় তখন তার একটা অংশ বিনিয়োগকারীকে দিয়ে থাকে। গোল্ড মিউচুয়াল ফান্ডের ক্ষেত্রে সেই সংগৃহীত অর্থ ব্যাবহার করে সোনা বা দামি গোল্ড বন্ড কেনা হয় যা পরে আরও বেশি দামে বিক্রয় করা সম্ভব।

এইরকম আরও একাধিক ব্যাবসা রয়েছে যে ক্ষেত্রে সরাসরি সোনার গহনা প্রস্তুত না করেও আপনি সোনা সংক্রান্ত ব্যাবসার সুচনা করতে পারেন। তবে এই সকল ব্যাবসার কোনোটিই সোনার গহনা প্রস্তুতকারী ব্যাবসার মত মুনাফা বহন করে না।

 

কারন সোনার গহনার মুল্য বর্তমান বাজারে প্রচুর। তাই এই ব্যাবসায় অবতরন করার জন্য যারা সাধারণত উদ্যোগি হয় তাদের অধিকাংশই এই মূল ব্যাবসার সাথে জুক্ত থাকতে ইচ্ছুক হন। তাই জন্য আমরা সেই মুল ব্যাবসা শুরু করার প্রয়োজনীয় উপাদান এবং পদ্ধতি সম্পর্কে বলব।

সোনার ব্যাবসা শুরু করার জন্য প্রয়োজনীয় প্রাথমিক উপাদান

সোনার ব্যাবসার জন্য অন্যান সকল ব্যাবসার মতোই প্রাথমিকভাবে কিছু কিছু উপাদানের প্রয়োজন হয়। তাই আপনি যদি এই ব্যাবসা শুরু করতে চান, তবে আপনার উচিত হবে এই সকল উপাদান গুলি সম্পর্কে জেনে নেওয়া।

১)অর্থ-

যেকোনো ব্যাবসার ক্ষেত্রেই অর্থ একটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ  একটি উপাদান। তবে সোনার ব্যাবসায়ে এই উপাদানকে এককথায় সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ উপাদান বলা যেতে পারে। তার কারন হল সোনা পৃথিবীর সবচেয়ে মূল্যবান ধাতু এবং সবচেয়ে মুল্যবান পদার্থগুলির মধ্যে অন্যতম।

 

আর এই ব্যাবসার ক্ষেত্রে কাছামার হল এই সোনা। তাই পর্জাপ্ত পরিমানে সোনা ক্রয় করতে গেলে আপনার অর্থের প্রয়োজনও প্রচুর। তাই এই ব্যাবসা শুরু করার আগে প্রাথমিক পর্বেই আপাকে প্রচুরপরিমানে অর্থ সংগ্রহ করতে হবে।

২)প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি-

 সোনার গহনা তৈরির কাজ কাজ করার জন্য বেশ কিছু বিশেষ জন্ত্রপাতির প্রয়োজন হয়। উদাহরন স্বরুপ বলা যেতে পারে স্বর্ন পরিক্ষক যন্ত্র, মেটাল কিট ইত্যাদি।

এ ছাড়াও আরও অনেক যন্ত্র এই কাজে ব্যাবহ্রিত হয়ে থাকে। আর এই যন্ত্রগুলি কোনো একটি অচল হয়ে থাকলে উৎপাদনের কাজ আরও অনেক বেশি কঠিন হয়ে যায়। তাই আপনাকে প্রাথমিক পর্বে এই সব যন্ত্রের ব্যাবস্থা করতে হবে।

৩)দক্ষ কর্মচারি-

সোনার গহনা তৈরির জন্য সোনার উপর যে কারুকার্জ করা হয় তা খুবই সুক্ষ। তাই এই কাজ যারা করবে, তাদের এই কাজে পারদর্শী হতে হবে। তাই এই ব্যাবসা শুরু করার আগে আপনাকে দেখে নিতে হবে যে যাদের আপনি নিজের কর্মচারি হিসেবে বা শ্রমিক হিসেবে নিয়োগ করছেন তারা এই কাজে দক্ষ কিনা।

ব্যাবসা শুরু করার পদ্ধতি

আমরা ইতিমধ্যে জেনে গেছি যে এই ব্যাবসা শুরু করতে কি কি উপাদান প্রয়োজন। তবে এই ব্যাবসা শুরু করার জন্য একটি নির্দিস্ট পদ্ধতি অনুসরণ করতে হয় আর এই ব্যাবসা শুরু করতে গেলে আপনাকে এই পদ্ধতিটি সম্পর্কে জানতেই হবে। তাই আসুন আর সময় নস্ট না করে জেনে নিই এই পদ্ধতি সম্পর্কে।

১)অর্থসংস্থান-

 আমরা আগেই জানিয়েছি যে এই ব্যাবসায় সবচেয়ে বেশি পরিমানে যা প্রয়োজন তা হল অর্থ। তাই ব্যাবসার পরিকল্পনা পর্বেই বা তারও আগে আপনাকে প্রয়োজনীয় অর্থের সংস্থান করে ফেলতে হবে।

২)কাঁচামাল ক্রয়ের ব্যাবস্থা-

এই ব্যাবসার মূল কাঁচামাল হল সোনা। তাই এই ব্যাবসায় নামার আগে আপনাকে দেখে নিতে হবে যে কোন ব্যাবসায়ি সবচেয়ে কম এবং ন্যায্য দামে সঠিক গুনমানের সোনা বিক্রয় করছে। বাজারে সমীক্ষা করলেই এই প্রস্নের উত্তর আপনি পাবেন। আর সেই উত্তর পেয়ে গেলে আপনার উছিত যত তাড়াতাড়ি সম্ভব সেই ব্যাবসায়ির সাথে চুক্তি স্বাক্ষর করে সোনা ক্রয়ের ব্যাবস্থা করা।

৩)কর্মশালা গঠন ও কর্মচারী নিয়োগ-  

এই কাজ আপনার ব্যাবসার প্রস্তুতি পর্বের শেষ কাজ। এর পরেই আপনি আপনার কর্মচারিদের সহায়তায় সোনার গহনা প্রস্তুত করে ব্যাবসায়িক কর্মকান্দ শুরু করতে পারেন।

এতক্ষন ধরে আমরা সোনা সংক্রান্ত ব্যাবসার বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচোনা করলাম। আমরা আগেই কিছু এমন ব্যাবসার ক্ষেত্রের কথা বললাম যেখানে সরাসরি গহনা উৎপাদন না করেও আপনি সোনার ব্যাবসার সাথে যুক্ত থাকতে পারেন।

 

তারপর আপনাকে আমরা সোনার ব্যাবসার জন্য প্রয়োজনীয় উপাদান এবং সোনার ব্যাবসা শুরু করার পদ্ধতি সম্পর্কে বললাম। এইগুলি জানা থাকলে আপনি সহজেই নিজের সোনা সংক্রান্ত ব্যাবসা শুরু করতে পারবেন।

 

তাই আর এক মুহুর্ত সময়ও না নস্ত করে এক্ষুনি নিজের ব্যাবসার জন্য পরিকল্পনা শুরু করুন। আমাদের এই প্রবন্ধ থেকে আপনি সাহায্য নিতে পারেন। তাহলে আপনার পরিকল্পনা আরও  মজবুত হবে এবং আপনাকে তা সাফল্যের দিকে নিয়ে যাবে।

 

বাংলাদেশে স্বর্ণ আমদানির জন্য লাইসেন্স পাওয়ার আবেদনপত্র বিতরণ শুরু করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক।

অভিযোগ রয়েছে, বাংলাদেশে যে বিপুল পরিমাণ স্বর্ণের কেনাবেচা হয় তার একটা বড় অংশ আসে চোরাই পথে। এবং বিরাট এই ব্যবসা থেকে সরকার কোন শুল্ক পায় না।

বাংলাদেশে স্বর্ণ আমদানির লাইসেন্স পাওয়ার আবেদনপত্র বিতরণের বিষয়টি স্বর্ণ নীতিমালা ২০১৮-র একটি অংশ হিসেবে এসেছে। গত বছর অক্টোবরে মন্ত্রিসভায় নীতিমালাটি অনুমোদিত হয়।

আবেদনপত্র বিতরণ শুরু হয়েছে চলতি বছর ১৮ই মার্চ থেকে।

কিন্তু কতজন এখন পর্যন্ত এই আবেদন পত্র নিয়েছেন? বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র সিরাজুল ইসলাম বলছিলেন, এখন পর্যন্ত কেউ এই আবেদনপত্র সংগ্রহ করেনি।

তবে তিনি আশ্বস্ত করেন এই বলে যে লাইসেন্স প্রথা চালু হলে মানুষ হয়রানির শিকার হবেন না।

“সরকারের যে নিয়ম আছে, যেমন শুল্ক দেয়া হয়, তাহলে এখানে অন্য কোন সমস্যা থাকার কথা না,” তিনি বলছেন, “বরং এই লাইসেন্স দেয়ার ফলে ব্যক্তি পর্যায়ে মানুষ হয়রানি মুক্ত হবে । এবং সরকার লাভবান হবে কারণ সরকার এখান থেকে শুল্ক পাবে।”

বাংলাদেশে স্বর্ণ নীতিমালা তৈরি হয় ২০১৮ সালে।ছবির উৎস,NURPHOTO

বাংলাদেশে স্বর্ণ নীতিমালা তৈরি হয় ২০১৮ সালে।

এই লাইসেন্স নিতে হলে এক কোটি টাকার মূলধন, ট্রেড লাইসেন্সসহ সরকারের সংশ্লিষ্ট অন্যান্য লাইসেন্স থাকতে হবে এবং ব্যাংকে অফেরতযোগ্য পাঁচ লক্ষ টাকা পে অর্ডার হিসেবে জমা দিতে হবে।

এই আবেদনপত্র যেকোন প্রতিষ্ঠান বা ব্যক্তি নিতে পারেন।

এদিকে সরকারি উদ্যোগকে স্বাগত জানালেও দুটি ইস্যুকে তুলে ধরেছেন স্বর্ণ ব্যবসায়ীরা।

তাদের সংগঠন বাংলাদেশ জুয়েলারি ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্ট এসোসিয়েশন বলছে, প্রথমেই সরকারকে সহনশীল মাত্রায় শুল্ক নির্ধারণ করতে হবে। তা না হলে ক্ষতির মুখে পড়বে ব্যবসায়ীরা।

এই সমিতির সভাপতি আনোয়ার হোসেন বলছিলেন, বাংলাদেশে সোনার দাম বেশি হলে মানুষ ভারতে গিয়ে সোনা কেনে।

“সেজন্যই আমরা বলছি, একটি মনিটরিং কমিটি গঠন করতে হবে এবং পার্শ্ববর্তী দেশের সাথে সঙ্গতি রেখে শুল্ক নির্ধারণ করতে হবে।”

“ইন্টারন্যাশনাল মার্কেটে সাধারণত স্বর্ণের দাম বাংলাদেশের চেয়ে কম। ব্যাংক থেকে ইস্যু করা পিওর সোনার ওপর সরকার একটা শুল্ক বসায়। সেটাতেও দাম কিছুটা বাড়ে,” তিনি আরো বলছিলেন, “আমাদের কথা হল – এসব করে দামটা যেন আমাদের পার্শ্ববর্তী দেশের তুলনায় না বেড়ে যায়।”

 

স্বর্ণ ব্যবহারে উপকারিতা কি?স্বর্ণের বর্তমান দাম|স্বর্ণের দাম

  • তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ কর
  • নিরাময় করে ক্ষত
  • ত্বকের সমস্যা দূর করে

 

  • রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়
  • চিকিত্সায় স্বর্ণ ব্যবহার
  • মেনোপজের সময় উপকারী

নারীর সৌন্দর্য ফুটিয়ে তুলতেই নয় স্বর্ণ ব্যবহার হয় আপনার স্বাস্থ্যকে ভাল রাখতেও । শুধু নিজের সমৃদ্ধির জন্য নয়  বা সম্পদ হিসেবেই নয় স্বাস্থ্যকে ঠিক রাখতে ব্যবহার হয় স্বর্ণ। তাই এখন জানব স্বর্ণ ব্যবহার এর উপকারগুলো- 

তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে: 

স্বর্ণে  প্রদাহ বা ক্ষত  বিরোধী বৈশিষ্ট্য রয়েছে। উনবিংশ শতাব্দীর শুরুর দিকে একজন চিকিৎসক একটা পরীক্ষার মাধ্যমে এটি প্রমাণ করেন। 

অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি বৈশিষ্ট্য  শরীরের ফোলাভাব ও শরীরের ব্যাথা কমাতে সাহায্য করে। স্বর্ণের মধ্যে এই বৈশিষ্ট্য পাওয়া যায়। যে কারণে প্রদাহ ঠিক করতে স্বর্ণ কার্যকরি ভূমিকা রাখে। তবে এই বৈশিষ্ট্য যে শুধু স্বর্ণে পাওয়া যায় তা না অন্যান্য ধাতু যেমন তামাতেও এই বৈশিষ্ট্য রয়েছে। 

নিরাময় করে ক্ষত

বহু আগে থেকেই শরীরে ক্ষত সারাতে স্বর্ণ ব্যবহার হয়ে থাকে। সাধারণত স্বর্ণ ব্যবহার করে সংক্রামন রোধ করা হয়ে থাকে। তাই স্বর্ণের ব্যবহার বহুদিক থেকে। তবে প্রদাহ , ক্ষত নিরাময়ে তা ভালভাবে কার্যকর। 

ত্বকের সমস্যা দূর করে: 

শুনলে হয়ত অবাক হবেন যে স্বর্ণ আপনার ত্বকের সমস্যা দূর করতে পারে। স্বর্ণ আপনার ত্বকের ফুসকুরি,ক্ষত,একজিসা, ছত্রাকের সংক্রামণ দূর করতে পারে। ত্বকে রক্ত চলাচল বৃদ্ধিতে এর ভূমিকা রয়েছে। 

অ্যান্টি-এজিং প্রভাব:

সোনা কোলাজেন উৎপাদনকে উদ্দীপিত করে বলে মনে করা হয়, যা ত্বকের স্থিতিস্থাপকতা বজায় রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

এটি সূক্ষ্ম রেখা এবং বলির উপস্থিতি হ্রাস করতে অবদান রাখতে পারে, কিছু অ্যান্টি-এজিং স্কিনকেয়ার ফর্মুলেশনগুলিতে সোনাকে একটি চাওয়া-পাওয়া উপাদান হিসাবে তৈরি করতে পারে।

ত্বক উজ্জ্বল করা:

কিছু স্কিন কেয়ার প্রোডাক্ট দাবি করে যে তাদের পণ্য ব্যবহার করলে ত্বক উজ্জ্বল হয়ে যাবে কারণ তাদের প্রডাক্টে সোনা মিশ্রিত রয়েছে। সোনার কনা থাকার কারণে তা ত্বকের মধ্যে উজ্জ্বলতা ফিরিয়ে আনে। 

স্বর্ণের বর্তমান দাম

রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়:

অবিশ্বাস্য হলেও নাকি সত্য যে স্বর্ণের অলংকার মানুষের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। এভাবেই স্বর্ণ মানুষকে রোগ থেকে রক্ষা করে। 

চিকিত্সায় স্বর্ণ ব্যবহার:

 আকুপাংচারের মতো চিকিৎসায় ব্যবহার করা হয়ে থাকে স্বর্ণ। আকুপাংচারের চিকিত্সকরা শরীরে শক্তি প্রবাহ বাড়াতে  এবং ব্যথা কমাতে স্বর্ণের টিপড সূঁই ব্যবহার করেন। শরীরের জয়েন্টগুলোতে ব্যথা এবং ফোলা নিরাময়ে এটি বিশেষভাবে কার্যকর হয়।

স্বর্ণের বর্তমান দাম

মেনোপজের সময় উপকারী:

গবেষকরা বলেছেন, স্বর্ণ শরীরের বিভিন্ন সমস্যা যেমন শীতল হয়ে যাওয়া কিংবা হঠাৎ জ্বর আসা থেকে রক্ষা করতে পারে।  বিশেষজ্ঞরা আরও বলেন, যেসব মহিলার মেনোপজের সময় চলছে তাদের প্রবলেম কমাতেও পারে স্বর্ণের গহনা।

সবমিলে কথা হলো স্বর্ণ আপনাকে সুস্থ্য রাখতে সাহায্য করবে। 

স্বর্ণ ব্যবহারের অপকারীতা/ নেতিবাচক দিকসমূহ

স্বর্ণের অলংকার ব্যবহার যেমন  উপকারী পাশাপাশি কোন কোন ক্ষেত্রে তা অপকারিও । 

এলার্জি প্রতিক্রিয়া:স্বর্ণের বর্তমান দাম

কিছু ব্যক্তির ক্ষেত্রে সোনা অ্যালার্জির কারণ  হতে পারে।  যা স্বর্ণ-মিশ্রিত স্কিনকেয়ার পণ্যগুলিতে উপস্থিত থাকে। আপনার মুখ বা শরীরে এই জাতীয় পণ্যগুলি ব্যবহার করার আগে, অ্যালার্জি পরীক্ষা করার জন্য ত্বকের একটি ছোট অংশে কিছুটা ব্যবহার করে দেখুন। যদি কারও সমস্যা থাকে তাহলে সতর্ক হয়ে যেতে হবে। 

  1. ত্বকের জ্বালা:

স্কিনকেয়ার এর  উপাদান ত্বকে জ্বালা, লালভাব বা চুলকানির কারণ হতে পারে। তবে সবার জন্য যে একই হবে তা কিন্তু নয়।  আপনি যদি কোনও  অনুভব করেন তবে এটি ব্যবহার বন্ধ করে চর্মরোগ বিশেষজ্ঞের সাথে পরামর্শ করার পরামর্শ দেওয়া হয়।

  1. পণ্য বিশুদ্ধতা:

স্কিনকেয়ার পণ্যগুলিতে ব্যবহৃত সোনার গুণমান এবং বিশুদ্ধতা গুরুত্বপূর্ণ। অমেধ্য বা নিম্নমানের সোনা ত্বকের প্রতিক্রিয়া হতে পারে। নিশ্চিত করুন যে পণ্যটি একটি স্বনামধন্য ব্র্যান্ডের, এবং ব্যবহৃত সোনা উচ্চ বিশুদ্ধ।

  1. বিভ্রান্তিকর দাবি:

কিছু স্কিনকেয়ার পণ্য সোনার উপকারিতা সম্পর্কে অতিরঞ্জিত দাবি করতে পারে, যা বৈজ্ঞানিক প্রমাণ দ্বারা সমর্থিত নাও হতে পারে। পণ্যের গুনমাণ 

সমালোচনামূলকভাবে মূল্যায়ন করা এবং স্কিনকেয়ার পেশাদারদের কাছ থেকে পরামর্শ নেওয়ার কথা বিবেচনা করা অপরিহার্য।

স্বর্ণের বর্তমান দাম

  1. পরিবেশগত প্রভাব:

স্বর্ণ উত্তোলন এবং প্রক্রিয়াজাতকরণের পরিবেশগত পরিণতি হতে পারে, যার মধ্যে বাসস্থানের ব্যাঘাত এবং খনিতে বিষাক্ত রাসায়নিকের ব্যবহার রয়েছে। যে কারণে আশেপাশের মানুষের নানা সমস্যা দেকা দিতে পারে। 

  1. খরচ বিবেচনা:

গোল্ড-ইনফিউজড স্কিনকেয়ার পণ্যগুলি প্রায়শই প্রচলিত পণ্যগুলির চেয়ে বেশি ব্যয়বহুল। ভোক্তাদের খরচের কথা বিবেচনা করলে বোঝা যাবে যে খরচ এবং সুবিধাগুলির মাঝে কত  পার্থক্য বোজা যাবে। 

  1. স্বতন্ত্র পরিবর্তন:

স্বর্ণের বর্তমান দাম

স্কিনকেয়ার অত্যন্ত আলাদা আলাদা স্বতন্ত্র।  একজন ব্যক্তির জন্য যা কাজ করে তা অন্যের জন্য কাজ নাও করতে পারে। ত্বকের ধরন, বয়স এবং ত্বকের অবস্থার উপর নির্ভর করে কোন স্কিনে কোন স্কিনকেয়ার কাজ করবে। তাই বাজারে যদি কোন কোম্পানী বলে যে আমাদের পণ্যে স্বর্ণ মেশানো তাই ব্যবহার করলেই পাবেন অনেক সুবিধা। তাহলে বিশ্বাস করার আগে নিজের স্কিন সম্পর্কে জানতে হবে। 

  1. ধাতুর প্রতি সংবেদনশীলতা:

নির্দিষ্ট ধাতুর প্রতি পরিচিত সংবেদনশীল ব্যক্তিরা স্বর্ণ-মিশ্রিত স্কিনকেয়ার পণ্য ব্যবহার করার বিষয়ে সতর্ক হতে পারে। যদিও সোনার অ্যালার্জি বিরল, যাদের নিকেলের মতো ধাতুর প্রতি সংবেদনশীলতা রয়েছে তারা অতিরিক্ত যত্ন নিতে চাইতে পারেন।

  1. সীমিত বৈজ্ঞানিক প্রমাণ:

যদিও কিছু গবেষণায় স্কিনকেয়ারে সোনার ন্যানো পার্টিকেলগুলির সম্ভাব্য সুবিধার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে, বৈজ্ঞানিক প্রমাণ এখনও বিস্তৃত নয়। ফলস্বরূপ, স্কিনকেয়ার পণ্যগুলিতে সোনার কার্যকারিতা সম্পর্কে যে দাবিগুলি করা হয়েছে তা  কিছুটা সন্দেহের সাথেই বিবেচনা করতে হবে। স্বর্ণের বর্তমান দাম

স্বর্ণের বর্তমান দাম

  1. মনস্তাত্ত্বিক কারণ:

ত্বকের যত্নে সোনার অনুভূত সুবিধাগুলি কখনও কখনও মনস্তাত্ত্বিক কারণগুলির দ্বারা প্রভাবিত হতে পারে। প্লেসবো প্রভাব বা মনস্তাত্ত্বিক প্রত্যাশার কারণে ব্যক্তিরা ভাল  অনুভব করতে পারে। 

স্বর্ণের বর্তমান দাম

  1. নকল পণ্যের জন্য সম্ভাব্য: স্বর্ণের বর্তমান দাম

সোনার মূল্যের পরিপ্রেক্ষিতে বাজারে নকল পণ্যের ঝুঁকি রয়েছে। ফর্মুলেশনে ব্যবহৃত সোনার সত্যতা এবং নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে গ্রাহকদের সম্মানিত উৎস থেকে স্কিনকেয়ার পণ্য কেনা উচিত।

স্বর্ণের বর্তমান দাম

  1. পরিবেশগত স্থায়িত্ব:

স্বর্ণ খনন এবং নিষ্কাশন প্রক্রিয়ার পরিবেশগত প্রভাব একটি উদ্বেগের বিষয়। পরিবেশগতভাবে সচেতন ব্যক্তিরা দায়িত্বশীল সোর্সিং এবং উত্পাদন পদ্ধতি সহ তাদের বেছে নেওয়া ব্র্যান্ডগুলির টেকসইতা অনুশীলনগুলি বিবেচনা করতে চাইতে পারেন।

  1. দীর্ঘমেয়াদী প্রভাব:

গোল্ড-ইনফিউজড স্কিনকেয়ার পণ্যগুলি ব্যবহার করার দীর্ঘমেয়াদী প্রভাবগুলি সম্পূর্ণরূপে বোঝা যায় না এবং বর্ধিত ব্যবহারের বিভিন্ন প্রভাব থাকতে পারে। ত্বকের স্বাস্থ্যের ক্রমাগত পর্যবেক্ষণ এবং এই বিষয়ে যে কোনো উদীয়মান গবেষণা সম্পর্কে অবগত থাকার পরামর্শ দেওয়া হয়।

কিভাবে আসল স্বর্ণ চেনা যাবে তার একটি ভিডিও দেয়া হল- দেখে নিতে পারেন

Leave a Comment