JANA BUJHA

শিশুর ওজন কম হলে করনীয় ও কম জন্ম ওজনের শিশু

শিশুর ওজন কম হলে করণীয় কি হবে তা নিয়ে অনেকের নানা মতামত থাকতে পারে। তবে আমরা এখানে কম জন্ম ওজনের শিশু নিয়ে কিছুটা আলোচনা করেছি।

শিশুর ওজন কম বা কম জন্ম ওজনের শিশু কাকে  বলে :

নবজাতকের   জন্ম ওজন যদি ২৫০০ গ্রামের নীচে হয় সেই শিশুকে কম-জন্ম ওজন শিশু বলা হয়।

 

শিশুর ওজন কম বা কম জন্ম ওজনের শিশুর বৈশিষ্ট্য :

1.শরীরের  তাপমাত্রা  নিয়ন্ত্রণ  করার  ক্ষমতা  কম  থাকে ।

  1. শারীরিক বৃদ্ধি ও মানসিক বিকাশ  স্বাভাবিক  শিশুদের চেয়ে কম/ধীরে হয় ।
  2. রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম থাকে ।
  3. শিশুরা নাজুক থাকে ।
  4. খাওয়ার ব্যাপারে অনীহা থাকে ।

 

শিশুর ওজন কম বা কম  জন্ম ওজনের  শিশুর  ঝুঁকি :

O সহজে রোগে আক্রান্ত হয় (ডায়রিয়া, জন্ডিস, জ্বর ইত্যাদি)

O বৃদ্ধি ও বিকাশ  ধীরে হয়

O মৃত্যু হতে পারে ।

 

আরো পড়ুনঃ

চুলকানো ও স্কেবিস রোগ কী, কারণ, প্রতিরোধ ও প্রতিকার?

 

 

শিশুর ওজন কম হওয়ার বা জন্মকালীন স্বল্প ওজনের কারণ কি কি

১. মায়ের বয়স  বিশ  বছরের  কম বা পঁয়ত্রিশ  বছরের বেশী

২.কম ব্যবধানে গর্ভবতী হওয়া (২ বছরের কম)

৩.  মায়ের গর্ভাবস্থায় অধিক পরিশ্রম করা এবং কম বিশ্রাম নেওয়া  মায়ের  গর্ভকালিন  ওজন  বৃদ্ধি  কম থাকা ।

৪. মায়ের পুষ্টি কম

৫. মায়ের পুষ্টি কম

৬. মায়ের গর্ভকালীন বা প্রসবকালীন সমস্যা

  • মারাত্মক রক্তস্বল্পতা
  • প্রি-একলাম্পসিয়া
  • সংক্রমণ
কম জন্ম ওজনের শিশুর যত্ন
                          শিশুর ওজন কম 

 

শিশুর ওজন কম কিভাবে প্রতিরোধ করা যেতে পারে 
  • মাকে (গর্ভবতী) পুষ্টিকর/ সুষম খাবার খাওয়ানো । মায়ের সঠিক যত্ন নেয়া ।
  • গর্ভাবস্থায় মায়ের ওজন পর্যবেক্ষণ করা।
  • সময়মত বাড়তি খাবার খাওয়ানো ।

 

  • পর্যাপ্ত বিশ্রাম নেয়া ।
  • পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখা ।
  • টিকা নেয়া ।

 

  • মহিলাদের ২০-৩৫ বছরের মধ্যে সন্তান গ্রহণ করার পরামর্শ দেওয়া।
  • দুটি সন্তানের মধ্যে কমপক্ষে ২ বছরের ব্যবধান রাখা ।
  • নিয়মিত প্রসব পূর্ববর্তী পরিচর্যা গ্রহণ করা ।
  • বিভিন্ন উপদেশ অনুসরণ করা ।
কম জন্ম ওজনের শিশুর বিশেষ যত্নের ব্যাপারে মা-বাবার সঙ্গে যা যা আলাপ করা দরকার :

(ক) কম জন্ম ওজনের শিশুরা বেশী ঠান্ডা বা গরম সহ্য করতে পারে না বিধায় নবজাতকের তাপমাত্রা সঠিক রাখার জন্য বলা। এ ক্ষেত্রে মায়ের তাপমাত্রার মান তাপমাত্রা শিশুর  জন্য শ্রেয় ।

(খ) নবজাতকের তাপমাত্রা সটিক মাত্রায় রাখার জন্য গরম কাপড় দিয়ে শরীর ও মাথা ঢেকে রাখা। মাঝখানে না রেখে শিশুকে মায়ের বুকের সঙ্গে জড়িয়ে রাখা ।

(গ) কম জন্ম ওজনের শিশুদেরকে পরিমিত খাবার দেয়া ।

(ঘ) পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখা ।

(ঙ) গ্রোথ চার্টের মাধ্যমে বৃদ্ধি পর্যাবেক্ষণ করা।

(চ) জীবন রক্ষাকারী ৬টি টিকা সময়মত দেয়া ।

(ছ) মানসিক  বিকাশ   সম্পর্কে  সচেতন থাকা। যেমন-খেলাধুলা, কথা বলা,

বুঝতে পারা চিনতে পারা ইত্যাদি।

 

আমরা কমজন্ম ওজনের শিশুদের ব্যাপারে জানতে জানতে আরও ‍কিছু প্রশ্ন মাথায় আসতেই পারে। তাই কম জন্ম ওজনের শিশুদের নিয়ে নিচে কিছু প্রশ্ন- উত্তর তুলে ধরা হল।

 

১. জন্মের সময় শিশুর স্বাভাবিক ওজন কত?

সাধারণত জন্মের সময় শিশুর ওজন ৩.৫ কেজি হলে একদম পারফেক্ট। তবে ২.৫ কেজির কম হলেই সমস্যা। তাই এভারেজে ২.৫ থেকে ৩.৫ কেজির বাচ্চাকে স্বাভাবিক ওজনের বলে ধরে নেয়া যায়।

 

২. ৬ মাসে বাচ্চার ওজন বাড়ে না কেন?

 

ওজন না বাড়ার পেছনে অনেক কারণ থাকতে পারে। তবে এর মধ্যে একটি হল পাচনতন্ত্রের সমস্যা। মূলত বাচ্চারা যদি পর্যাপ্ত ক্যালরি না পায় এবং সেই ক্যা্লরি বার্ণ করতে না পারে তবে বাচ্চার ওজন বাড়া সম্ভব নয়। তাছাড়া অনেকদিনের ডায়রিয়া, লিভার সমস্যা, সিলিয়াক ডিজিজ এর মত কিছু রোগ বাচ্চার ওজন বাড়াতে ব্যাঘাত ঘটাতে পারে।

৩. নবজাতককে পুনরুজ্জীবিত করার সময় ঘরের বাতাস অক্সিজেনের চেয়ে ভাল পছন্দ কেন?

এই প্রশ্নের উত্তর স্বাবাবিক ভাবেই দেয়ার চেষ্টা করি। যে জিনিস প্রাকৃতিকভাবে পাওয়া যায় তা সবসময় খাটি হয়। কৃত্তিম মানেই এতে ভেজাল আছে। সিলিন্ডরে যে অক্সিজেন রয়েছে তা ১০০% অক্সিজেন কিন্তু তা কিন্তু কৃত্তিম। এই শতভাগ অক্সিজেন সেরিব্রিাল  সঞ্চালনের উপর খারাপ প্রভাব বিস্তার করে। তাই ঘরের বাতাসই শিশুর জন্য ভাল। কিন্তু যদি ‍ুশশুর অবস্থা খুব গুরুতর হয় সেক্ষেত্রে অক্সিজেন নতে হবে।

 

 

Leave a Comment