JANA BUJHA

রাগ নিয়ন্ত্রণের উপায় কী / Best 2024

রেগে গেলেন তো হেরে গেলেন – এটি একটি চিরন্তন বানী। মানুষের জীবনে যে যত বেশি রাগী সে জীবন যুদ্ধে তত বেশি ক্ষতির সম্মুখীন হয়ে থাকেন। কিন্তু রাগ হচ্ছে মানুষের একটি ন্যাচারাল বৈশিষ্ট্য। তাই রাগ আপনার আমার সবারই আছে। তাই চলুন জেনে নেই রাগ নিয়ন্ত্রণের উপায় কী। 

রাগ নিয়ন্ত্রণের উপায় কী?

 

কিন্তু এটাকে নিয়ন্ত্রণে রাখাই হলো সবচেয়ে বড় পরীক্ষা। আপনি এমন একজন ব্যক্তি দেখাতে পারবেন না যে রাগের মাথায় সিদ্ধান্ত নিয়ে সুন্দর ভাবে জীবন যাপন করছে। আবার এমন একজন লোকও দেখাতে পারবেন না যে লোকটি ঠান্ডা মাথায় চিন্তা করে সিদ্ধান্ত নেয় অথচ খারাপ পজিশনে আছে। 
আর তাছাড়া রাগ করলে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও কমে যায়। আপনি যতই হিসাব কষেন না কেন অতিরিক্ত রাগ ব্যক্তির জন্য সুফল বয়ে আনে এমন কোন ক্যালকুলেশন দেখাতে পারবেন না।

 

 

আর তাই সর্বোপরি আমাদের করনীয় হচ্ছে জীবনে সাফল্য নামক শিরোপাকে ছুয়ে দেখতে চাইলে আপনাকে অবশ্যই রাগ নিয়ন্ত্রণে রাখতেই হবে। আর রাগ নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য নিচে কয়েকটি পদ্ধতি আলোচিত হলো। (রাগ নিয়ন্ত্রণের উপায়)

 

 

সফলতার সাথে ধৈর্য ধরে ২১ দিন প্র্যাকটিস করতে পারলে আপনি নিশ্চিতভাবে আপনার রাগ নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসতে পেরেছেন বলে ধরে নিতে পারেন।

 

১. রাগ নিয়ন্ত্রণের উপায় হিসেবে মেডিটেশন-

 

যদি বেশি রাগী হয়ে থাকেন তাহলে রাগ নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসতে চাইলে মেডিটেশন পদ্ধতিটি খুবই কাজে দিবে আপনার জন্য। আমাদের মস্তিষ্কের যে অংশ থেকে রাগ উৎপন্ন হয় মেডিটেশন কারী ব্যাক্তির সেই অংশটি পুরোপুরি তার নিয়ন্ত্রণে থাকে মেডিটেশনের কারণে। (রাগ নিয়ন্ত্রণের উপায়)

 

 

আপনি পৃথিবীর যত বড় সাইকোলজিস্টের কাছেই যান না কেন আপনার রাগ নিয়ন্ত্রণের জন্য আপনাকে সবাই মেডিটেশন করতে বলবে। কারন রাগের কোনো প্রত্যক্ষ ওষুধ নেই। মেডিটেশনই একমাত্র চিকিৎসা পদ্ধতি যেটির মাধ্যমে রাগ পরিপূর্ণভাবে নিয়ন্ত্রণ করা যায়।

 

তাই আপনি যত বড় রাগী মানুষই হয়ে থাকেন না কেন রাগ পুরোপুরি নিয়ন্ত্রন করতে চাইলে নিয়মিত মেডিটেশন করা শুরু করুন।
আপনি নিয়মিত মেডিটেশন করলে আপনার রাগ নিয়ন্ত্রণে আসতে বাধ্য।
(রাগ নিয়ন্ত্রণের উপায়)

 

 

২. রাগ নিয়ন্ত্রণে শ্বাসের ব্যায়াম-

 

তৎক্ষণাৎ রাগ নিয়ন্ত্রণের জন্য নিঃশ্বাসের ব্যায়াম খুবই কার্যকরী। যখনই আপনার কোনো কিছুর উপরে খুব রাগ হবে তখনই সাথে সাথে যদি আপনি গুনে গুনে দশবার পেট ভরে শ্বাস নিয়ে আবার ত্যাগ করতে পারেন তাহলে আপনার রাগ আর প্রতিক্রিয়ায় রুপান্তরিত হবে না।

 

আর এভাবে যদি বেশ কিছুদিন রাগ উঠার সাথে সাথেই এ পদ্ধতিটি অবলম্বন করতে পারেন তাহলে আপনার রাগ অনেকাংশেই কমে যাবে। কারন আপনার মস্তিষ্কের রাগ  তৈরি করার অনুগুলো অতি ক্ষুদ্র তাই এইগুলো সক্রিয় হওয়া থেকে বিরত থাকবে। যেটা আপনার রাগ নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রে অনেক গুরুত্ব বহন করে। (রাগ নিয়ন্ত্রণের উপায়)

 

মনোবিজ্ঞানীদের ভাষায় আপনার রাগ যদি সক্রিয় হওয়ার তিন সেকেন্ডের মধ্যে প্রকাশ না পায় তাহলে সেই রাগ আর বাস্তবে রুপ নিতে পারে না। আর তিন সেকেন্ডের মধ্যে যদি রাগ ক্রিয়াতে রুপান্তরিত হয় তাহলে সেটি আরও ভয়ঙ্কর রূপ ধারণ করে।

(রাগ নিয়ন্ত্রণের উপায়)

 

যখন আপনি রাগ উঠার সাথে সাথে নিঃশ্বাসের ব্যায়াম শুরু করবেন তখন রাগ প্রতিক্রিয়াশীল হওয়ার সময়টুকু পার হয়ে যায় এবং রাগ নিয়ন্ত্রণে চলে আসবে। তাই পরবর্তী সময় থেকে যখনই রাগ উঠবে তখনই গুনে গুনে দশবার পেট ভরে নিঃশ্বাস নিন।

 

 

৩. রাগ নিয়ন্ত্রণে অবস্থান পরিবর্তন :-

 

আপনার দাড়িয়ে থাকা অবস্থায় যদি রাগ হয় তাহলে বসে পড়ুন আর বসে থাকা অবস্থায় রাগ উঠলে সম্ভব হলে শুয়ে পরুন।
সাইকোলজিস্টদের মতে অবস্থানের মুভমেন্ট বা পরিবর্তন রাগ নিয়ন্ত্রণে অনেক সহায়তা করে।

 

তাই তৎক্ষনাৎ রাগ নিয়ন্ত্রণে করতে চাইলে দ্রুত অবস্থান পরিবর্তন করুন। এতে আপনার রাগ অনেকাংশেই কমে যাবে।

(রাগ নিয়ন্ত্রণের উপায়)

 

৪. রাগ নিয়ন্ত্রণের উপায় হিসেবে উল্টো থেকে ১০ পর্যন্ত গোনা:-

 

রাগ নিয়ন্ত্রণ করার সবচেয়ে দারুন পদ্ধতি হচ্ছে রাগ যখন উঠবে তখন মস্তিষ্কককে ব্যস্ত রাখা। আর এটার সবচেয়ে সহজ এবং কার্যকরী মাধ্যম হতে পারে উল্টো থেকে দশ থেকে এক পর্যন্ত গোনা।

(রাগ নিয়ন্ত্রণের উপায়)

 

এই কাজটি করার ফলে মস্তিষ্ক খানিকটা অন্যদিকে ব্যস্ত থাকে এবং মস্তিষ্কের চিন্তা ভাবনা ডাইভার্ট হওয়ার কারনে রাগ নিয়ন্ত্রণে চলে আসে।

 

কারন রাগের তাৎক্ষণিক ইফেক্টের প্রতিক্রিয়া যদি মস্তিষ্ক না উৎপন্ন করতে পারে তাহলে রাগের কার্যকারীতা তখন বিলুপ্ত হয়ে যায়। তাই পরবর্তী সময় রাগ উঠার মুহূর্তে চট করে দশ থেকে এক পর্যন্ত উল্টো করে গুনতে শুরু করে দিন। রাগ নিয়ন্ত্রণে চলে আসবে ইনশাল্লাহ।

(রাগ নিয়ন্ত্রণের উপায়)

 

৫. একা থাকুন

 

যার কথাবার্তা বা ব্যবহারে আপনার রাগ উঠেছে তিনি হতে পারেন আপনার আত্মীয় বা গুরুত্বপূর্ণ কোন ব্যক্তিত্ব। এখন মনে করুন রাগের মাথায় আপনি আপনার সামনে অবস্থানরত ব্যক্তির সাথে খুবই অসঙ্গতিপূর্ণ আচরন  করে ফেললেন। 

 

যেই আচরন আপনি সুস্থ মস্তিষ্কে কখনো করার চিন্তাও করতেন না। আর এই আচরনের পরিপ্রেক্ষিতে আপনার ঐ লোকের সাথে সম্পর্ক পুরোপুরি নষ্ট হয়ে গেল। (রাগ নিয়ন্ত্রণের উপায়)

আর পরবর্তীতে আপনি যতই অনুশোচনা করেন না কেন একবার কারো নজরে আপনি অবনতির জায়গায় চলে গেলে সেটা কখনো পূর্বের অবস্থায় ফিরে আনা যায় না।

 

তাই রাগ হওয়ার সাথে সাথে আপনার রাগ প্রকাশের আগেই আপনি জায়গা ত্যাগ করে একা থাকার চেষ্টা করুন। পরবর্তীতে মাথা ঠান্ডা হলে তার সাথে আপনি কেন তার এই আচরন বা ব্যরহার মেনে নিতে পারেননি তা আলোচনা সাপেক্ষে সমাধান করুন। (রাগ নিয়ন্ত্রণের উপায়)

উপরোক্ত আলোচনারআলোকে নিয়মিত ২১ দিন যদি চলতে পারেন তাহলে আপনি নিশ্চিত থাকতে পারেন আপনার রাগ কিছুটা
হলেও নিয়ন্ত্রণে চলে আসবে।

 

রাগ নিয়ন্ত্রনকে অভ্যাসে পরিণত করতে পারলে আপনার রাগ অল্প কিছু দিনের মাঝেই নিয়ন্ত্রণে চলে আসবে বলে আশা করা যায়। রাগকে নিয়ন্ত্রণ করতে শিখুন জীবন অনেকটা আনন্দের হবে যাবে। কেননা জীবন অনেক সুন্দর যদি একে ঠিকভাবে পরিচালনা করা যায়।

(রাগ নিয়ন্ত্রণের উপায়)

Leave a Comment