JANA BUJHA

রাগ করার প্রয়োজন হয় কখন? / Best 2024

রাগ করা যে খারাপ কাজ তা সকলেই জানে কিন্তু তারপরও সকলেই কোন না কোন সময় রাগ করেছে। এই যে আপনাকে জিজ্ঞেস করছি, জীবনে রাগ করার প্রয়োজন হয় কখন জানেন কি? বা এর প্রয়োজনীয়তা আছে কি? আপনি শেষ কবে কার সাথে রাগ করেছেন? না আমাকে উত্তর দিতে হবে না। নিজেকেই নিজে উত্তরটা দিয়ে চলুন বাকী লিখাটা পড়তে শুরু করি।

 

রাগ করার প্রয়োজন হয় কখন?

 

রাগ করার প্রয়োজন হয় কখন?

 

আমাদের জীবনে সব কিছু আমার মত করে হবে এমনটা ভাবা বোকামী ছাড়া আর কিছু নয়। তাই জীবনে কোন না কোন সময় আমরা প্রত্যেকেই কোন না কোন কারনে রাগ করেছি কিন্তু কেউ কেউ রাগকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারেন আর কেউ কেউ নিয়ন্ত্রন করতে পারেন না।

 

রেগে গেলেন তো হেরে গেলেন এই কথা ছোট বেলা থেকে শুনতে শুনতে আমাদের হজম হয়ে গেছে। আর রাগের যে কত কুফল তা আমরা সকলেই জানি কিন্তু আজ আমি আপনাদের রাগ করার সুফল নিয়ে বলতে চাচ্ছি।

 

 

রেগে গেলেন তো হেরে গেলেন কথাটা কী সবসময় সত্য?

 

এই কাথাটা কী সবসময় ঠিক? না ঠিক না। কেন ঠিক না সেটাই বলতে চাচ্ছি। আমাদের জীবনে ব্যাল্যান্স করে চলতে হয়ে। রাগ, আনন্দ, দুঃখ, হাসি-কান্না, আক্ষেপ, অনুসূচনা ইত্যাদি নানা ধরনের আবেগ-অনুভূতি রয়েছে।

 

 

এই প্রতিটি অনুভূতি আমাদের জীবনের অংশ। তাই হাত, পা , ছাড়া যদি শুধু পুরো শরীরটা আপনার থাকে তাহলে কী আপনাকে স্বংয়সম্পূর্ণ বলা যাবে না। তেমনি আপনার মধ্যে সব গুলো অনুভূতির মিশ্রণ না থাকলেও কিন্তু আপনি স্বয়ংসম্পূর্ণ
হবেন না।

 

আমাদের যে অনুভূতি আছে তা কখনও ইতিবাচক আবার কখনও নেতিবাচক আচরনকে প্রকাশ করে। যদি আপনার মাঝে নেতিবাচক এর প্রাধান্য বেশী থাকে তখন মানুষ আপনাকে পছন্দ করবে না।

 

 

আবার প্রয়োজনে যদি নেতিবাচক রুপ এরও প্রকাশ করতে না পারেন তাহলে কেউ মূল্যায়নও করবে না। তাই আমাদের জানতে হবে আমাদের আবেগ- অনুভূতি গুলো কখন কতটুকু ব্যবহার করবো।

 

(রাগ করার প্রয়োজন হয় কখন)

তাই আজকে এমনই একটি বিষয় নিয়ে আলোচনা করতে চাচ্ছি তা হলো রাগ করার প্রয়োজনীয়তা।
কখন, কোথায় আপনার রাগ করা প্রয়োজন। কিভাবে রাগ করা প্রয়োজন? (রাগ করার প্রয়োজন হয় কখন)

 

 

জীবন থেকে শিখি (রাগ করার প্রয়োজন হয় কখন)

 

জীবন থেকে যে শিক্ষা পেয়েছি সেখান থেকে বাস্তব দুটি ঘটনা বলার চেষ্টা করছি। তাহলে আমার মত আপনারও উপলব্ধি হতে পারে, যে সত্যিই কী রাগ করা প্রয়োজন?

 

 

ঘটনা-১

 

 প্রতিদিন সকালে মালিবাগ থেকে নতুন বাজার যাই। বনানীতে আমার অফিস সে জন্য নতুন বাজার নেমে গুলশান হয়ে বনানী চলে যাই। এই রোডে রাইদা, অনাবিল, ভিক্টর ক্লাসিক, গ্রেট তুরাগ , নূরে মক্কা ইত্যাদি বেশ কিছু বাস চলাচল করে।

 

(রাগ করার প্রয়োজন হয় কখন)

প্রতিদিন এর মত আজকেও বাসে উঠলাম। যে দিন যে বাসে সুযোগ পাই সেই বাসেই উঠি। আমি আজকে উঠলাম গ্রেট তুরাগে। বাসে মুটামুটি ভিড়। হাতেগুনা কিছু মানুষ দাঁড়িযে আছে। এক ২৫/৩০ বছর বয়সের  ছেলে তার কাঁধে ব্যাগ নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। তার ব্যাগ গিয়ে বার বার পেছনে বসে থাকা লোকটির মুখে লাগছে।

 

 

সেই লোকটি দুইবার বলার পরও আবার যখন ব্যাগ গিয়ে মুখে লাগলো তখন সেই লোক খুব করে ক্ষ্যাপে গেলেন। ছেলেটিও রাগ দেখালো বললো বাসে ভীড় এমন কিছুতো হতেই পারে।

(রাগ করার প্রয়োজন হয় কখন)

(রাগ করার প্রয়োজন হয় কখন)

তখন পাশে থাকা লোকগুলো তাকে আচ্ছা করে ধরে বসলো। আরে তোমারে তো উনী বার বার বলছেন তারপরও তুমি সতর্ক হলে না কেন। যার গায়ে ব্যাগ লেগেছে তিনিতো রেগে ফায়ার।

 

 

প্রশ্ন হলো এখানে দুই ব্যক্তিই রাগ করেছে। কার রাগ করাটা যুক্তিযুক্ত মনে হয় আপনার কাছে?

 

(রাগ করার প্রয়োজন হয় কখন)

এরপর রামপুরা অনেক লোক নেমে গেল। পেছনের কিছু সিট ফাঁকায় পড়ে আছে। আমার বিপরীত পাশে বসে থাকা এক আঙ্কেল এর কাছে হেল্পার ভাড়া চাইলো।

 

তিনি ৫০ টাকার একটি নোট বের করে দিলেন। হেল্পার তার কাছ থেকে ২০ টাকা নিয়ে চলে যাচ্ছে। আঙ্কেল খুব ভদ্রভাবে বললেন এই কত টাকা রাখলা? মালিবাগ থেকে নতুন বাজার এর ভাড়া ১৫ টাকা। হেল্পার বলে ২০ টাকা ভাড়া।

(রাগ করার প্রয়োজন হয় কখন)

আঙ্কেল ১৫ টাকা সে ২০ টাকা। আমিসকালে একবার যাই আর বিকালে একবার আসি, প্রতিদিন আমি ১৫ টাকা দিয়ে যাওয়া আসা করি। হেল্পার বলে ভাড়া ২০ টাকা। আপনার না পোষালে নেমে যান গাড়ি থেকে। এইবার আঙ্কেলও রেগে গেলেন।

 

 

এই ছেলে তুমি বাস থেকে নামার কথা বল কেন। বেয়াদপ কোথাকার। উনার বয়স হয়ত ৬০-৬৫ এর মতন হবে। হেল্পার ৫ টাকা দিবে না আর আঙ্কেল ১৫ টাকাই দিবে। অবশেষে হেল্পার টাকা নিয়ে চলে গেল আঙ্কেলকে টাকা ব্যাক দেয় নি।

 

 

আঙ্কেলও বলে যাচ্ছে তোদের কাছে টাকা দিলেই বেশী নেয়ার ধান্দা। এরমাঝেই সে অন্য যাত্রীদের সাথে ভাড়া নিয়ে ঝামেলা করে ফেলছে। ব্যাপারটা হলো সে সবার কাছে ৫ টাকা বা ১০ টাকা বেশী করে চাইছে। আর এই রোডে যারা আসা-যাওয়া করে তারা প্রত্যেকেই ন্যায্য ভাড়াটা জানে।

 

 

দুইজন যাত্রীকে সে বাস থেকে নামিয়ে দিয়েছে এরই মাঝে। মোটামুটি সবাই চুপ করে আছে। বাস শাহজাদপুর পার হয়ে নতুন বাজার এর কাছাকাছি। আমি ভাবলাম জ্যামে বসে না থেকে নেমে যাই।

 

 

হেল্পারকে ভাড়া দিলাম ১৫ টাকা। কোথথেকে আসছেন? মালিবাগ থেকে নতুন বাজার। ২০ টাকা ভাড়া দেন। এই বলে সে একটা ধামকি দিয়ে উঠলো। আর আমারে ঠেকায় কে। প্রতিদিন ১৫ টাকা দিয়ে যাই তোমারে কেন ২০ টাকা দিব। হেল্পার বলে  ২০ টাকাই দিতে হবে আপনার।

(রাগ করার প্রয়োজন হয় কখন)

 

সাথে সাথে এমন এক ধমক দিলাম। বেয়াদপ কোথাকার। কি ব্যবহার করতেছ তুমি সবার  সাথে কিছু বলতেছি না দেইখা। তুই আঙ্কেল এর সাথে কি ব্যবহার করলি। তুইই খালী এই রোডে গাড়ি চালাস। বেয়াদপ কোথাকার। ব্যাস, বাসের সবাই তেরে  এসেছে।

 

 

আসলে বাসে যারা আছেন তাদের বেশীর ভাগই মহিলা ও মধ্য বয়স্ক পুরুষ। ওর কপাল ভাল বাসে স্টুডেন্ট ছিল না। আমার রাগ দেখে হেল্পার ভয় পেয়ে গেল। আশে পাশের সবাই ওরে ধমকাচ্ছে, তুই দুইটা লোককে নামিয়ে দিয়েছিস, তুই কতবড় হেল্পারটা আজ দেইখা দিব।

 

 

এবার হেল্পার ভয়ে চুপ হয়ে গেল। বাস জ্যাম ছেড়ে নতুন বাজার চলে আসলো ঐ আঙ্কেল
ও আমি একই সাথে নেমে গেলাম। আঙ্কেল আমার পিঠে হাত দিয়ে বললো বাবা ঠিক আছে কখনও কখনও
রাগেরও দরকার আছে।

 

 

আসলে আঙ্কেল এর ঐ কথার পরই মাথায় ঘুরঘুর করছে আসলেই কী আমাদের জীবনে রাগের
দরবার আছে? আমি সাধারণত রাগ প্রকাশ করি না। রাগ জিনিসটা আমার খুবই অপছন্দ। আমি আমার
এই জীবনে খুব বেশী হলে ৪ কি ৫ বার কারও সাথে রাগ প্রকাশ করেছি। মারামারিতো অনেক দূরের
কথা।

 

 

যাই হোক রাতে যখন বাসায় ফিরি তখন আমি আবার সেই বাসেই উঠি কাকতালীয়ভাবে।
ঐ হেল্পার বাসে থাকা অন্য আর একটা হেল্পারকে বলছে ঐ এই বড় ভাইই সকালে চেইত্তা গেছিল।

 


এরপর আমি দেখেও না দেখার ভাণ করে থাকি। মজার ব্যাপার হলো বাসের সবার কাছে ভাড়া নিল
কিন্তু আমার কাছে ও আসলোই না। আমার পাশের লোকের কাছ থেকে যখন ভাড়া নিল তখনও আমার কাছে
ভাড়া চায় নি।

 

 

মনে মনে খুব হাসলাম। আর এর মাঝে বেশ কয়েকজন এর সাথে তার ঝগড়া করা হয়ে গেছে।
তারপর আমি যখন মালিবাগ চলে আসলাম বাস থেকে নামলাম তারপরও আমার কাছে হেল্পার ভাড়া চায়
না। পরে আমি ১৫ টাকা দিয়ে বললাম এই নাও ভাড়া নাও।

 

 

হাত দুটো গুটিয়ে সুন্দর করে টাকাটা নিয়ে গেল। তখন ভাবলাম আসলেই কখনও কখনও
রাগের প্রয়োজন আছে। এই ছোট্ট একটা ঘটনা কিন্তু জীবন থেকে শিক্ষা কিন্তু ছোট নয়। কখনও
কখনও রাগ প্রকাশ করতে হয়।

 

 

এখন আর একটা ঘটনার কথা মনে হচ্ছে
যেখানে আমি রাগ করেছিলাম এবং সেটা ছিল কার্য়করি রাগ। সেই সময় রাগটা না করলে বরং অন্যায়
করা হত।

 

(রাগ করার প্রয়োজন হয় কখন)

আরো পড়ুন……..

 

 

ঘটনা-২

 

তখন বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র। সম্ভবত ৩য় সেমিস্টারে পড়ি। আমাদের বান্ধবী মিষ্টির বিয়ে। আমরা ফ্রেন্ডরা মিলে কিছু কেনাকাটা করতে গেলাম ময়মনসিংহ শহরে।

 

(রাগ করার প্রয়োজন হয় কখন)

একেক জন একেকটা জিনিস এর সন্ধান করতে বিভিন্ন জায়গায় চলে গেছে। আমি , স্বর্ণা আর কণিকা মিলে গেলাম ফুল কিনতে। গাঁদা, গোলাপ আরও কি কি ফুল যেন কেনার কথা তেমন মনেও নেই এখন।

 

 

গাঙ্গিনারপাড় মোড়ে ফুলের দোকানে আমরা ফুল দেখছি। কিন্তু ফুল যে খুব ভাল তাও না অথচ দাম বেশী। আমি দোকানের সামনে দাঁড়িয়ে আছি ওরা ফুল নিয়ে দড়দাম করছে। দোকানের ভেতরে দুটি ছেলে ওদের ইভটিজিং করছে।

 

 

আমি বাহির থেকে দেখছি এবং বুঝতে পারছি কিন্তু আমলে নিচ্ছি না। ওরা একজন আর একজনকে কি একটা বলে আর হাসাহাসি করছে। বান্ধবীদের শরীর নিয়ে যে ওরা এমন করছে তাতে কোন সন্দেহ নেই।

 

 

কিন্তু স্বর্ণা আর কণিকার ঐ দিকে কোন খেয়ালই নেই। এর মাঝেই একটা ছেলে মোবাইল দিয়ে স্বর্ণার ছবি তুলে ফেললো। আর থাকতে পারলাম না। বাহির থেকে দোকানের ভেতরে ঢুকেই মোবাইলটা হাত থেকে টান দিয়ে নিয়ে নিলাম। একটা ছেলে বললো ঐ ভাই কি সমস্যা?

 

 

 

এমন এক ধমক দিলাম আশেপাশের সব মানুষ থমকে গেল। তরা দুইটা অনেকক্ষণ ধইরা মেয়েগুলারে টিচ করতেছিস। সব দেখতেছি কিচ্ছু বলি নাই। ঐ তুই ছবি তুললি কেন? বলেই গেছি একটা থাপ্পড় দিতে।

 

(রাগ করার প্রয়োজন হয় কখন)

কণিকা আর স্বর্ণা আমারে ফিরালো। ঐ তোর মালিক কই? তর মালিকরে ডাক দে। ঐ বেটার ব্যবসা খায়া দিতাছস তরার মত কুত্তার বাচ্চারে বেতন কেন দেয় জিজ্ঞেস করবো। ঐ মালিকরে ডাক দে।

 

 

অল্প কিছুক্ষনের মাঝেই আশেপাশের সব মানুষ এক হয়ে গেছে। পাশের অন্য মালিকরা এসে এদের ধমকাচ্ছে। কেউ কেউ গালি দিচ্ছে। এটাই আমার জীবনের প্রথম এইভাবে রাগ করা। এরপর আমি বললাম ওর ফোন দিব না। ওরা ছবি তুললো কেন?

 

অন্যরা সবাই গালিগালাজ করছে। মজার ব্যাপার হলো মোবাইল এর স্ক্রিন ওপেন করে দেখি ছবি নাই। ভাবছিলাম পাশের দোকানের মালিককে দেখাবো যে এই দেখেন ওরা ছবি তুলছে।

 

কিন্তু হয়ত আমার হাতের চাপ লেগে ডিলেট হয়ে গেছে। আবার ভাবতেছি যদি ছেলোটা বলে যে প্রমাণ দেখান কই ছবি তুলছি? তাহলে বিপদ আছে।

 

 

 

তাই বুদ্ধিমানের কাজ এখান থেকে যত দ্রুত সম্ভব কেটে পড়া। ইতিমধ্যে যা হয়েছে তাতে আমি হিরো আর ওরা ধরা খাইয়া জিরো।  স্বর্ণা আর কণিকা আমার এই অবস্থা দেখে অবাক হয়ে গেল। কেননা এইভাবে যে আমি রাগ করছি হয়ত ওদের বিশ্বাসও হচ্ছে না।

 

 

আমার রাগ উঠলে আবার শরীর কাঁপাকাঁপি শুরু হয়ে যায়। তাই স্বর্ণা ,কণিকা আমাকে শান্ত করার চেষ্টা করছে। একটা দোকান থেকে কণিকা দৌঁড়ে পানি আনল। পানি খেয়ে কিছু সময় বিশ্রাম নিলাম। তখন মনে হচ্ছিল আরে রাগ করাতো বেশ কষ্টের। পরিশ্রম হয় তাই না? হা-হা-হা।

 

আশা করি এতক্ষণে বুঝেই গেলেন জীবনে কখনও কখনও কেন রাগ করতে হয়। তারপরও দেখি
আমরা কিছু শিখতে পারি কি না।

রাগ করার প্রয়োজন হয় কখন?

 

রাগ প্রকাশ এর আগে যা যা মাথায় রাখা উচিৎ এবং করণীয়:

 

১. রাগের উপযুক্ত কারণ থাকতে হবে।  (রাগ করার প্রয়োজন হয় কখন)

২. রাগ হচ্ছে প্রতিবাদের ভাষা। প্রতিবাদ করতে হলে রাগ কাজে দেয়। কিন্তু অযৌক্তিক প্রতিবাদ আপনার পক্ষে সমর্থন না এনে বিপদে ফেলবে।

 

যে ছেলেটা বার বার ব্যাগ লাগাচ্ছিল অন্যের গায়ে সেও কিন্তু প্রতিবাদী হয়ে রাগ করেছে কিন্তু কেউ তার পক্ষে ছিল না। (রাগ করার প্রয়োজন হয় কখন)

 

৩. রাগ করে নিজের ক্ষতি করা যাবে না। কেননা সাময়িক কোন একটা বিষয় নিয়ে রাগ হয়েছে কিন্তু যদি এমন কিছু করেন যা আপনাকে আরও বহুকাল এর জন্য ভুগতে হবে তাহলে লস আপনারই।

 

৪. যৌক্তিক কারণে রাগ করে যদি আপনি প্রতিপক্ষের সাথে জিতে যান তাহলে আপনি তামিল নায়কে পরিণত হতে পারবেন। যা ভদ্র ব্যবহার বা মিষ্ট কথায় কখনও সম্ভব নয়। তাই প্রয়োজনে রাগ প্রকাশ করা খারাপ না।

 

৫. রাগ প্রকাশ করতে হবে তখন যখন জনমত আপনার পক্ষে কথা বলবে। উপস্থিত জনতা যদি আপনার বিপক্ষে চলে যায় তাহলে কখনও রাগ নিয়ে বাড়াবাড়ি করবেন না। 

 

(রাগ করার প্রয়োজন হয় কখন)

৬. কার সাথে রাগ করছি তা মাথায় রাখতে হবে। মনে রাখা উচিৎ যাকে আপনার সকাল বিকাল প্রয়োজন তার সাথে রাগ করা বোকামী ছাড়া আর কিছু নয়।

ধরেন, বাসের হেল্পার আমার এমন কোন প্রয়োজনীয় ব্যক্তি নয় যে তাকে আমার খুব প্রয়োজন।

(রাগ করার প্রয়োজন হয় কখন)

আবার আমি যদি আমার অফিসের কলিক বা বসের সাথে রাগ করি তখন কিন্তু বার বার ভাবতে হবে। কেননা কিছুক্ষণ পরেই হয়ত তাকে প্রয়োজন বা আমার ব্যক্তিগত কোন প্রয়োজনে তার কাছে যেতেই হবে।

 

৭. রাগ থেকেই আসে জেদ। আপনি কারও উপর রাগ করে জেদ পুষে রাখবেন না। কেননা রাগ পুষে রাখলে আপনারই লস।

 

আপনি বার বার রাগের প্রতিশোধ নেয়ার জন্য ব্যস্ত থাকবেন, যা আপনার প্রডাক্টিভিটি নষ্ট করবে। অন্য কোন কাজে আপনাকে মনোযোগী হতে দিবে না।

 

৮. অনেকেই মারামারি করে ফেলে রাগের কারণে। কিন্তু সাবধান থাকা উচিৎ মারামারি করতে গিয়ে নিজের বিপদ ডেকে আনবেন না।

 

(রাগ করার প্রয়োজন হয় কখন)

৯. শুধু নিজের স্বার্থ উদ্ধার এর জন্য রাগ করা উচিৎ নয়। বিশেষ করে অন্যায়কে প্রতিহত করতে যে রাগ করা হয় সেটাই হলো সফল রাগ।

 

 

আর শুধু স্বার্থ উদ্ধার এর রাগে নিজের কোন মূল্য থাকে না। বরং আপনার প্রতি সবার বিরুপ মনোভাব সৃষ্টি হবে। কিন্তু অন্যায় এর জন্য যে রাগ সে জন্য আপনি হতে পারবেন হিরো।

 

১০. রাগ দেখানো মানে শুধু চিৎকার চ্যাচামেচি নয়। নিরব থেকেও রাগ প্রকাশ করা যায়।

 

১১. সাধারণ মানুষ রাগ করে হুটহাট যখন-তখন। আর জ্ঞানীরা রাগ করে বুঝে শুনে চূড়ান্ত পর্যায়ে।

 

১২. রাগের মাথায় নেয়া সিদ্ধান্ত কখনও ভাল সিদ্ধান্ত হতে পারে না। কেননা মানুষের সিদ্ধান্ত নেয়ার সময়
মাথা যেভাবে কাজ করতে হয় রাগের সময় তা সেভাবে কাজ করে না।

 

(রাগ করার প্রয়োজন হয় কখন)

১৩. রাগের সময় মাটির দিকে তাকোনো এবং সেই জায়গা ত্যাগ করা ভাল। তাহলে আস্তে আস্তে রাগ কমে যাবে এবং নিজেও স্বাভাবিক অবস্থানে চলে আসা যাবে।রাগ করার প্রয়োজন হয় কখন)

Leave a Comment