JANA BUJHA

সরকারি চাকরি পাওয়ার গল্প

সরকারি চাকরি পাওয়ার গল্প


সরকারি চাকরি পাওয়ার গল্প একেক জনের এক একটা। চাকরিটা অনেক মূল্যবান কিন্তু তা আমাদের অধিকংশ ছেলে-মেয়ে কি উদ্দেশ্য নিয়ে চাকরীটা করতে চায় সেটাই এই গল্পে তুলে ধরার চেষ্টা হয়েছে। 

সম্প্রতি একটা জ্বরে আক্রান্ত হয়েছে
দেশের শিক্ষিত বেকার সমাজ। রোগটা ভয়াবহ হয়ে ঘাড়ে চেপে বসেছে।  অবশ্য এই রোগের পেছনে অন্যতম কারণ সকলেরই জানা। বাজারে এখন সরকারি চাকরির হেব্বি কদর। 



বিয়ের বাজারে তো কথাই নাই, ছেলে তো গাজা খায়, ছেলের নাকি মেয়েদের সাথে মেলামেশার অভ্যাস ছিল, খুব গভীর মেলামেশা প্রতিউত্তরে পাত্রীপক্ষের অভিভাবক আরে এসব ছেলেরা কিছু করতেই পারে বয়সের দোষ, বিয়ের পর সব ঠিক হয়ে যায়।



এসব বড় কথা নয় ছেলে প্রথম শ্রেণীর নাগরিক বিসিএস দিয়ে চাকরি করে সেটাই বড় কথা। কোন
এক বিয়ের আগে ছেলে পক্ষ মেয়েদের বাড়ি যায়
মেয়ে দেখার জন্য। তখন
মেয়ের নানাকে বলা হয়,
নানা ছেলেকে দেখেন কথা
বলেন ছেলের সাথে। 




মেয়ের নানা বলে
আমি আর
কি দেখবো সরকারইতো দেখেছে ছেলেকে তা
না হলে
কি বিসিএস পেয়েছ। এমনই এক গল্প চলছিল রমেশ দাদার আড্ডাখানায়। রাহাত যখন
এই গল্প বলছিল তখনই রমেশ দা
ভাবলেন
ভাবা যায়
একজন বিসিএস পেয়েছে বলেই কি সে
দুধে ধোয়া তুলসি পাতা হবে ? (সরকারি চাকরি পাওয়ার গল্প)



মেয়ে বিয়ে দেওয়ার জন্য ছেলের আচার ব্যবহার, আদবকায়দা, মানসিকতা এইসব কিছুই দেখার প্রয়োজন নেই
?
যোগ্যতা একটাই বিসিএস। বিয়েটা কি ছেলে করে না
কি ছেলের চাকরিটা করছে তার কিছুই বুঝে পায়
না রমেশ। বিড়বিড় করেই নানা প্রশ্ন মুখ ফুসকে বের হয়ে
যেতে চায়
রমেশের।



 রমেশদা হাসে আর বলে 
মার্কেটের অবস্থা তাহলে ভালই। রমেশ মনে
মনে ভেবে চললো,  জ্বরে আক্রান্ত শিক্ষিত সমাজ কিছুদিন আগেও বেসরকারী চাকরীতে হুমরি খেয়ে পড়তো।



যেই নাকি সরকারি চাকরীর  বেতনটা বেড়ে গেল তাদের গলা সুর বদলে গেল। আগে বলতো ধূর সরকারি চাকরি কেউ করে
নাকি। ফকিন্নি মার্কা থার্ডক্লাস যবে কেউ যায় নাকি। এই পাঁচ টাকা বেতনের চাকরীর চেয়ে মানুষের বাড়ি কাজ করা
ভাল। 



আর এখন সব সম্মান সরকারি চাকরিতে। মূল কারণ আন্দাজ করতে কষ্ট হওয়ার কথা না।


রমেশদা হাসে আর বলে ওরে টাকা টাকারে তোর পেছনে যে না ছুটে সেই বড় অভাগা
এই সরকারি চাকরির জ্বরে আক্রান্ত হয়ে এখন শিক্ষিত মস্তিষ্কের ভাবনাগুলো কত আপডেট হয়েছে দেখুন। (সরকারি চাকরি পাওয়ার গল্প)



তার পাশের রুমে থাকে এক বড় ভাই সম্প্রতি বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ডিভিএম থেকে পাশ করে বেরিয়েছে। কয়দিন হলো ভাইজান সোনালী ব্যাংকের সিনিয়র অফিসার হয়েছেন। 

আরো পড়ুনঃ


রমেশ
বলে

ভাই আপনি না পশু চিকিৎসক আর এখন সারাদিন সুদকষার হিসাব কষছেন ব্যাপারটা কেমন হয়ে গেল না
?
রমেশ দেশের অবস্থা খারাপ জীবনতো চালাতে হবে নাকি
?
রমেশদা হেসে চলে আসে।



এর কয়দিন পরেই সাবইন্সপেক্টর এর রেজাল্ট হয়, সেই ভাইজান তো মহাখুশি এবার সে সবাইকে মিষ্টি খাওয়ালো। দুইদিন পরে রমেশ ভাইজান কে বলে, ভাই আপনি সোনালী ব্যাংক ছেড়ে দেবেন
?



ভাইজান অবাক দৃষ্টিতে, রমেশ কই থাকো তুমি
?
দেশের কী হালচাল কিছু বোঝো না নাকি
?
বাঁচতে হলে পাওয়ার দরকার
এক

ধমকে  ৫০ জন কেপে উঠবে, কেউ দম ফেলতে পারবে
না । আর

পুলিশের চাকরি বলে কথা



রমেশ ওর খুশিতে নিজেও খুশি না হয়ে পারল না।
 এরপর ভাইজানকে রমেশ জিজ্ঞেস করল আর একটা কথা বলি ভাই।
 পুলিশে গেলে কি ঘুষ খাবেন
?
 রমেশ দেখ কারো পাছায় লাথি মেরে ঘুষ নেয়ার ইচ্ছা আমার নেই, তবে কেউ দিতে চাইলে তো আর না করা যায় না। 



এটা আবার বেশি সতীপনা দেখায়।
 তাছাড়া এটা আমার কাছে অভদ্র আচরণ মনে হয়।
 রমেশ অবাক, অভদ্র আচরণ ভাই
!
আপনি পারবেন ভাই
এই কাজ করতে।
জীবনে অনেক উন্নতি করবেন ভাই।
 টাকাই জীবনের সব তাই না
?



হ্যাঁ তাইতো, টাকা ছাড়া কেউ দাম দেয় না কি, তোমার টাকা আছে তোমার পরিবার খুশি, শ্বশুরবাড়ি, বউ, ছেলেমেয়ে,মা-বাবা,আত্মীয়স্বজন সবাই খুশি।  টাকা না
থাকলে বলবে,
কি লাভ এত পড়াশোনার।
ছেলে পড়াশোনায় ভালো কিন্তু বলদ একটা ,ছেলে মানুষের ইনকাম টাই
সব।

বুঝলে
? (
সরকারি চাকরি পাওয়ার গল্প)



রমেশ ভাবল আর
কথা বলে লাভ নাই।
 ভাইজানের মস্তিষ্কে গরম ভাতের মত টাকা ফুটছে।
আর কিছু বলার দরকার নেই।
রমেশ চলে আসার আগে বলে আসে ভাই জীবনের জন্য টাকা, নাকি টাকার জন্য জীবন
?

Leave a Comment