![]() |
গাঁদা ফুল |
গাঁদা ফুলের ইংরেজি নাম
Marigold Flower.
বৈজ্ঞানিক নাম: Tagetes erecta.
পরিবার: Asteracea
আমরা এই ফুল এত বেশী দেখতে পাই যে কারণে মনে হয় এই ফুল নিয়ে আরও কিছু বিষয়
জানা উচিৎ। তাই গাঁদা ফুল প্রেমীরা যেন গাঁদা ফুল এর ইংরেজী জানার সাথে সাথে এর পরিচয়,
কাজ, ব্যবহার, এবং উপকারীতা সম্পর্কে জানতে পারেন তাই আমারা এই আর্টিকেলে আরও নানা
বিষয় জানানোর চেষ্টা করছি। আশা করি অন্যান্য বিষয় গুলো জানা থাকলে গাাঁদা ফুলকে আরও
বেশী ভালবাসতে ইচ্ছা করবে। তাই চলুন এখন শুরু করা যাক।
গাঁদা ফুলের পরিচয় কী?
গাঁদা বা গন্ধা(গন্ধা/গেন্ধা/গেনদা/গাঁদা)
একটি সুগন্ধি ফুল ।যা সর্বত্র সহজে হয়ে থাকে এবং এটি একটি গুল্ম জাতীয় উদ্ভিদ। বাংলাদেশের গৃহস্থ বাগানের
সাধারণ ফুল গাঁদা। গাঁদা ফুল বিভিন্ন জাত ও রঙের দেখা যায়। এই ফুল সাধারণত উজ্জ্বল হলুদ, কমলা, গারো খয়েরি রঙের হয়ে থাকে। বাগানের সুভা বর্ধন
ছাড়াও বিভিন্ন উৎসব অনুষ্ঠান পূজা পার্বণে
ও গৃহ শয্যায় এর ব্যাপক ব্যবহার ফুলটিকে ভিন্নমাত্রা দিয়েছে।
গাঁদা ফুলের কী কী জাত ও প্রজাতি রয়েছে?
জাত: Edudicots শ্রেণীর এই উদ্ভিদটি সপুষ্পক উদ্ভিদ। এর প্রায় ৫৯ টি প্রজাতি রয়েছে।
যেমন: Tagetes erecta, Tagetes filifolia, Tagetes minuta, Tagetes lucida ইত্যাদি।
এছাড়া বিভিন্ন প্রজাতির হাইব্রিড রয়েছে। এই গাছের আদি নিবাস উত্তর ও দক্ষিণ
আমেরিকায়। বিশেষ করে মেক্সিকোতে এই গাছ অধিক জন্মে। এর কিছু প্রজাতি পৃথিবীর উষ্ণ
অঞ্চলের সর্বোচ্চই জন্মে।
![]() |
গাঁদা ফুল |
বাংলাদেশে কয় ধরনের গাঁদাফুল পাওয়া যায়?
বাংলাদেশে দুই ধরনের গাঁদা পাওয়া যায়।
আফ্রিকান গাঁদা: দেশীয় নাম রাজগাঁদা
। আর এর বৈজ্ঞানিক নাম: Tagetes erecta. এই জাতীয় হলুদ রঙের গাদাঁ গাছের আকৃতি
বেশ বড় । উল্লেখযোগ্য জাত সমূহ হল: ইনকা ,গিনি, গোল্ড, ইয়েলো সুপ্রিম ,গোল্ড স্মিথ
,ম্যান ইন দি মুন ইত্যাদি।
ফরাসি গাঁদা: দেশীয় নাম কালিগাদাঁ । আর বৈজ্ঞানিক
নাম: Tagetes patula। এই শ্রেণীর গাঁদা কমলাসহ
হলুদ হয়ে থাকে । এর জন্য এদের রক্ত গাঁদা ও বলা হয়। এর গাছ ক্ষুদ্রাকৃতির পাপড়ির
ঘোরায় কালো ছোপ থাকে । বিশেষ জাতসমূহ হলো মেরি টু ,হারমনি, লিজন অব অনার ইত্যাদি।
- মাটি দিয়ে আপেল ও কলা তৈরীর উপায়?
- কাগজ দিয়ে গয়নার বাক্স তৈরীর উপায়
- নারী অধিকার কিভাবে প্রতিষ্ঠা পাবে?
- মোবাইল দিয়ে ইনকাম এর উপায়
গাঁদা ফুলের ও পাতার ঔষধি গুনাগুনগুলো
কী কী?
গাঁদা ফুলের আছে নানা রকম ওষুধি ক্ষমতা। গাঁদা ফুলে আছে ভিটামিন, মিনারেল
,যা শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। আসুন গাঁদা ফুলের নানা ধরনের ওষুধি গুণের
সাথে পরিচিত হই।
১. গাঁদা ফুলের পাতার রস কাটা ক্ষত এবং ঘা সারাতে
অত্যন্ত কার্যকরী। হঠাৎ শরীরে কোথাও কেটে গেলে
গাধা ফুলের পাতা ঘষে বা বেটে সেই জায়গায় প্রলেপ দিলে তৎক্ষণাৎ রক্ত বন্ধ হয়ে যায়। ব্যথা কমে যায় ও তাড়াতাড়ি
জোড়া লাগে পাতার রস দিয়ে ঘাত ধুয়ে দিলে
তা দ্রুত সেরে যায়।
২. বিশেষ করে গোসলের সময় ছোট বাচ্চারা পানি দিয়ে
খেলা করে । আর খেলা করতে করতে পানি অনেক সময় বাচ্চার কানে প্রবেশ করে। এতে কান পাকা
রোগ হয়। গাঁদা ফুলের পাতার রস কান পাকা রোগছাড়াও ছত্রাক নাশক হিসেবেও বেশ কার্যকরী।
৩. গাঁদা ফুলের নির্যাস টিউমারের বৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণ
করে। প্রাথমিক চিকিৎসা তো বটে টিউমারের মত কঠিন রোগ সারিয়ে তুলতে পারে।
৪. বেশ কিছু গবেষণায় দেখা গেছে যে গাঁদা ফুল ক্যান্সার
প্রতিরোধে সহায়ক। গাঁদা ফুলের প্রচুর পরিমাণে
এন্টিঅক্সিডেন্ট থাকে। যা ক্যান্সারের ঝুঁকি কমায় । ক্যান্সার সৃষ্টিকারী কোষের
অস্বাভাবিক বৃদ্ধি ও রোধ করতে সক্ষম গাঁদা ফুলের নির্যাস।
৫. বিভিন্ন ধরনের তেল ও সুগন্ধি তৈরি করতে গাঁদা ফুলের রস রাসায়নিক প্রক্রিয়ার
মাধ্যমে ব্যবহৃত হয়। গাঁদা ফুল রস যা মূলত ঔষধি গুণের জন্য বিখ্যাত বিভিন্ন দেশে হারের
ক্ষয় রোধ অর্থাৎ আর্থ্রাইটিসের সমস্যার কমাতে গাঁদা ফুল ভূমিকা রাখে। আবার এই ফুল
নিয়মিত খেলে ত্বক হবে মসৃণ ও ব্রণ মুক্ত।
- ৬. গাঁদা ফুলের পাপড়ি সামান্য
মাখন এর সাথে মিশিয়ে অল্প পরিমাণে কয়েকদিন খেলে পাইলসের রক্ত পড়া বন্ধ হয়।
৭. গাঁদা ফুল বেটে নারিকেলের তেলের
সাথে মিশিয়ে মাথায় লাগালে খুশকি দূর হয় এবং চুল কালো হয়।
তাই আমরা গাঁদা ফুলের গাছ আমাদের আঙিনায় রেখে যেমন পেতে পারি স্বর্গীয় শোভা তেমনি পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া হীন নান্দনিক
পরিবেশ। আর সেই সাথে খুব সহজে সারিয়ে তুলতে পারি আমাদের অসুস্থতা।