JANA BUJHA

কেন পড়াশোনার সময় মেরুদণ্ড সোজা রেখে বসা উচিত?

কেন পড়াশোনার সময় মেরুদণ্ড সোজা রেখে বসা উচিত?

 কিভাবে পড়লে ভাল কার্যকরী পড়াশোনা করা যাবে এবং সেই সাথে কেন মেরুদন্ড সোজা করে পড়া উচিত? আমরা যারা ছাত্র
আছি, আমাদের জীবনকে সাফল্যমন্ডিত করতে অবশ্যই আমাদেরকে পড়াশোনা করতে হবে।



আর আমরা
প্রত্যেকেই পড়াশোনা করি। কিন্তু কিভাবে বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে কার্যকরী উপায়ে আমরা পড়াটা
তৈরি করব তা আমরা অনেকেই জানিনা। তাই ভালোভাবে পড়াশোনা করার জন্য যেমন দরকার পরিবেশ,
তেমন দরকার হচ্ছে বৈজ্ঞানিক উপায়ে পড়াশোনার পদ্ধতি গুলো জানা।


 তাই এখন আলোচনা করব
কিভাবে পড়লে ভাল কার্যকরী পড়াশোনা করা যাবে এবং সেই সাথে কেন মেরুদন্ড সোজা করে পড়া
উচিত?

 

 আমরা একেক জন একেক ভাবে পড়াশোনা করি। কেউ বিছানায়
শুয়ে শুয়ে পড়তে পছন্দ করে আবার কেউ দাঁড়িয়ে পড়তে পছন্দ করে। কেউবা আবার মেঝেতে
বসে পড়তে পছন্দ করে, আবার কেউ গান শুনতে শুনতে পড়তে পছন্দ করে, আবার কেউ কেউ টেবিলে
বসে ঝুঁকে পড়তে পছন্দ করে। 


প্রত্যেকেই বিভিন্নভাবে বিভিন্ন কায়দায় পড়াশোনা করলেও
পড়াশোনার জন্য নির্দিষ্ট কিছু নিয়মকানুন রয়েছে। যা অনুসরনে ভাল পড়াশোনা করা যায়।
সেই সব নিয়ম কানুনের মধ্যে প্রথম যে বিষয়টি নিয়ে বলা উচিত তা হলো মেরুদন্ড সোজা করে
পড়তে বসা।

 

হ্যা, পড়াশোনার
সময় অবশ্যই মেরুদন্ড সোজা করে পড়তে বসা উচিত। কারণ আমরা যখন কুঁজো হয়ে ,মেরুদন্ড
বাঁকা করে পড়তে বসবো তখন আমাদের ক্লান্তি চলে আসবে। কারণ কুঁজো হয়ে বসার ফলে  আমাদের শরীরে ঠিক মতো রক্ত চলাচল করতে পারে না। তাই
যেন ক্লান্তি না আসে, তাই সোজা হয়ে পড়া উচিত।


 কেউ কেউ আবার বিছানায় শুয়ে গা এলিয়ে বই পড়েন
এইভাবে বই পড়া কখনো উচিৎ নয়। আর যখন বিছানায় গা এলিয়ে কেউ পড়ে তখন তার ঘুম এসে
যাওয়াটাই স্বাভাবিক।

 

 পড়াশোনা করার
ক্ষেত্রে তা হলে করনীয় কি

পড়াশোনা করার বেলায়
সবসময় পিঠ সোজা রেখে উঁচু জায়গায় বইখাতা রেখে পড়াশোনা করা উচিত। টেবিল-চেয়ার হলে
ভালো না হলে মেঝেতে বসে ছোট টুলের ওপরে বই খাতা রেখে পড়া যেতে পারে। শুধু পড়াশোনার
সময় নয় আমরা যখন হাঁটাচলা করব তখনও আমাদের শিরদাঁড়া বরাবর সোজা রাখা উচিত। 



কুঁজো
হয়ে বসলে ও বাঁকা হয়ে চলাফেরা করলে ঘাড় ও শিরদাঁড়ায় বিভিন্ন সমস্যা দেখা দিতে পারে।
এতে আমরা অসুস্থ হয়ে যেতে পারি। তাই মনোযোগ বৃদ্ধির জন্য আমাদের পুরো শরীরে অবশ্যই
ভালোভাবে রক্ত চলাচল প্রয়োজন।


যখন রক্ত চলাচলে
বাধা বিঘ্ন সৃষ্টি হয় তখন কেমন যেন শরীরে ঝিঝি ধরে যায়। যখন একনাগাড়ে আমরা এক জায়গায়
বসে থাকি তখন দেখা যায় পায়ে বা হাতে আমাদের ঝি ঝি ধরে যায়। এর কারণ হচ্ছে রক্ত চলাচলের
অসুবিধা। 


তাই আমরা অনেকেই বুঝতে পারি না যখন পড়ার সময় আমরা কুঁজো হয়ে বসি তখন ঠিক
ভাবে রক্ত চলাচল হয় না। যে কারণে ক্লান্তি চলে আসে, আর এই ক্লান্তির কারনে হয়তো ঘুম
ধরে যায় অথবা মনোযোগ ধরে রাখা যায়না। তাই পড়ার সময় অবশ্যই মেরুদন্ড সোজা করে পড়া
উচিত।


জানালার পাশে কেন
পড়া উচিৎ নয়?

এখন আসি পরিবেশের
কথা, আমাদের কখনোই জানালার ঠিক সামনাসামনি
মুখোমুখি বসে পড়া উচিত
নয়। কেননা যখন আমরা বাইরের দিকে তাকাবো তখন হয়তো বাহিরের
প্রকৃতি, মানুষ, পশু-পাখি আমাদের নজরে চলে আসবে। 


আর আমরা যা দেখি আমাদের ব্রেইনে সেই
ইনফরমেশন সাথে সাথেই চলে আসে, আবার আমরা যা শুনি সেইটাও আমাদের ব্রেইনে ইনফর্মেশন হিসেবে
চলে আসে। তাই এমন জায়গায় পড়তে হবে যেখানে আলো-বাতাস ঠিকই আছে কিন্তু বাহিরের পরিবেশ
পরিস্থিতি যেন কোনোভাবেই মনোযোগে বিঘ্ন না ঘটায়।

 

কখন ঘুমালে পড়াশোনা
ভাল হয়

 ঘুম আমাদের জন্য অনেক উপকারী কিন্তু আমরা অনেকেই
আছি যারা রাত জেগে পড়তে খুব ভালোবাসি। কিন্তু রাত জেগে পড়লে আমাদের ঘুমের ব্যাঘাত
ঘটে।


আর ঘুম ঠিকমতো নাহলে কোন পড়াই আমাদের মস্তিষ্ক ধরে রাখতে পারেনা। ঘুম হচ্ছে মস্তিস্ককে
শান্ত রাখা আর মস্তিষ্ককে কার্যকরী রাখার অন্যতম উপায়। তাই রাত জেগে না পড়ে আমাদের
উচিত অনেক ভোরে উঠে পড়তে বসা।

 

 

ব্রেইন যেভাবে সচল
থাকে

পড়তে বসার আগে আমরা
অজু করে বা হাত মুখে পানি দিয়ে ফ্রেশ হয়ে পড়তে বসতে পারি। পড়তে বসার আগে আমরা তিনবার
বা পাঁচবার , সাতবার ডিপ ব্র্যাথ( মানে হচ্ছে এক নাক বন্ধ করে জোরে শ্বাস নিতে হবে
এবং


কিছুক্ষণ সময় শ্বাস আটকে রেখে তারপর আস্তে আস্তে মুখ দিয়ে ছাড়া) নিতে পারি। এতে
করে আমরা যখন পড়তে বসবো তখন আমাদের ব্রেইনে অক্সিজেন সরবরাহ হবে আর যখন অক্সিজেন সরবরাহ
হবে তখন আমাদের ব্রেইনের রক্তসঞ্চালন ত্বরান্বিত হবে, যাতে করে মনোযোগ বৃদ্ধি পায়।

 

 কাজ শেষ করে পড়তে বসা

আমরা অনেকেই তড়িঘড়ি
করে পড়ার চেষ্টা করি কিন্তু তা করা উচিত নয়। হাতে যদি কোন জরুরি কাজ থাকে তবে সেই
কাজটি শেষ করে তারপরেই পড়তে বসা উচিত। না হলে আমাদের পড়ার সময় কাজের জন্য কোনো না
কোনো সময়ে মনোযোগ বিঘ্ন হতে পারে।


পড়তে বসতে এসে কাজ নিয়ে চিন্তা যে ওই কাজটি বেশি
জরুরী। খুব দ্রুত আমাদের ওই কাজটি করতে হবে তাই পড়ার আগে হাতে যদি জরুরী কোন কাজ থাকে
তাহলে সেটি শেষ করে ফেলাই ভালো।

 


ডিজিটাল ডিভাইস এর ব্যবহার

                                                                                                       

এখন মোবাইল ফোন নেই এমন ছাত্র খুঁজে পাওয়া হয়তো দুষ্কর। প্রত্যেকেরই
একটা-না-একটা মোবাইল ফোন রয়েছে। তাই পড়ার আগে অবশ্যই আপনার মোবাইল ফোনটা কে এমন দূরত্বে
রাখতে হবে এবং সুইচ অফ করে রাখতে পারলে আরও ভাল। এতে করে কোন ধরনের ডিস্টার্ব তৈরি
হবে না এবং  মনযোগ দিয়ে পড়া যাবে।

Leave a Comment