কেউ বৃদ্ধ বয়সে আর কেউ যৌবনে আবার কেউ কেউ কৈশরেই একটি সমস্যা নিয়ে দিনের পর দিন ভুগছেন তা হলো কোমর ব্যাথা। এই কোমর ব্যাথার কারণে অনেকেই কাজ করতে পারেন না, আবার চলা-ফেরা, মুভ করতেও নানা সমস্যায় পড়তে হয়।
তাই এই সমস্যা যে জটিল এক সমস্যা তা তিনিই বোঝেন যিনি ভুক্তভোগী। আর সেই সব মানুষদের জন্যই আমাদের আজকের লিখার বিষয় কোমর ব্যাথার কারণ ও প্রতিকার। (কোমর ব্যাথা)
কোমর ব্যথার নানা কারণ রয়েছে এর মধ্যে অন্যতম কারণ হচ্ছে বসা। দীর্ঘ সময় বসে কাজ করার ফলেই কোমর ব্যথা বেশি হয়। বিশেষ করে যারা অফিস আদালতে বসে দীর্ঘ সময় ধরে কাজ করেন তাদেরই কোমর ব্যথা বেশি দেখা দেয়। (কোমর ব্যাথা)
এছাড়াও বসার চেয়ারের কাঠামোগত ত্রুটির কারণে কোমর ব্যথা দেখা যায়। দীর্ঘ সময় বসে কাজ করার ফলে কোমরের সামনের মাংসপেশী সংকুচিত হয় এবং পেছনের মাংসপেশী প্রসারিত হয়।
এর ফলে দেখা দেয় ভারসাম্যহীনতা, যাকে বলা যায় মাসকুলার ইমব্যালেন্স।এর ফলে মেরুদন্ডের হাড়ের ডিস্কে বেশি চাপ পড়ে। ব্যথার সূত্রপাত হয়।
চেয়ারে বসে সামনের দিকে ঝুঁকে কাজ করার ফলে এই ব্যথা আর প্রাদুর্ভাব বেশি লক্ষ্য করা যায়। এই মাসকুলার ইম ব্যালেন্স এর জন্য কোমরের ডিস্ক এর স্থান চ্যুতিও ঘটে। একে বলা হয় প্রলাপল লাম্বার ইন্টার ভার্টিব্রাল ডিস্ক। (কোমর ব্যাথা)
বসার নিয়ম না মেনে বা না জানায় পিঠের হারের বক্রতা দেখা দেয়। একে বলে কাইফোসিস। শুধুমাত্র বসার চেয়ারের পরিবর্তন এনে একটি প্রতিহত করা যায়। কোমর ব্যথা প্রতিরোধ করার
জন্য বিশেষ চেয়ার পাওয়া যায়। বলা হয় ব্যালেন্স টুল। এসব চেয়ারে বসে কোমরের অবস্থা ঠিক রেখে কাজ করা যায়। কোমর ব্যথা থেকে মুক্তির জন্য অবশ্যই সবাইকে সঠিক ভঙ্গিতে বসতে হবে।
আরো পড়ুনঃ
-
এপেন্ডিসাইটিস কেন হয় লক্ষণ কারণ ব্যাথা প্রতিরোধ পরীক্ষা চিকিৎসা
-
টাইফয়েড এর লক্ষণ||কিভাবে ছড়ায়||চিকিৎসা
এছাড়া ফ্র্যাকচার হলেও কোমর ব্যাথা হয়ে থাকে। কেউ যদি কোমরে আঘাত পায় সে কারনেও ব্যাথা হতে পারে। আঘাত এর কারণে মাংসপেশী বা হাড়ে চাপ লাগে যার ফলে এই চাপ ব্যাথার সৃষ্টি করে।
মানুষের মেরুদন্ডের যে ডিস্কগুলো থাকে সেগুলোতে যে জেল থাকে তা বয়স বাড়ার সাথে সাথে বের হয়ে যেতে পারে। আর এই জন্য ব্যাথা তৈরী হতে পারে। বিশেষ করে এই সমস্যাটা বয়স্ক লোকদের ক্ষেত্রে বেশী হয়ে থাকে।
এইসব কারণ ছাড়াও ক্যান্সার, পেটে পাথর, বাত এর সমস্যার জন্য কোমরে ব্যাথা হতে পারে। (কোমর ব্যাথা)
কোমর ব্যথা দূর করার ঘরোয়া উপায়
সাধারণত আমরা কিছু হলেই ডাক্তার এর কাছে চলে যাই চিকিৎসার জন্য। কিন্তু প্রাথমিকভাবে কিন্তু আমরা ঘরেই এর ব্যাথার কিছুটা চিকিৎসা করতে পারি। আর ঘরে চিকিৎসার জন্য আমাদের কিছু কাজ করতে হবে যা আলোচনা করা হলো।
১. নারকেল তেল ও কর্পূর মালিশ
পরিমাণ মতো নারকেল তেল গরম করুন। এর সাথে যোগ করুন সামান্য কর্পূর। ভালোভাবে ফোটানোর পর স্বাভাবিক তাপমাত্রায় ঠান্ডা করুন। খবরের যে স্থানে ব্যাথা সেই জায়গায় আলতো মালিশ করুন। ব্যথা দ্রুত কমে যাবে।
২. গরম জল এবং নীলগিরি তেল
চুলাতে জল গরম করুন এর সাথে যোগ করুন দুই তিন ফোটা নীলগিরি তেল। বড় কোনো সুপার শপে খুব সহজেই নীলগিরি তেল কিনতে পাবেন। সহনীয় পর্যায়ে আসলে এই মিশ্রণটি কোমরে মালিশ করুন। অর্থাৎ দ্রুত কমে যাবে। (কোমর ব্যাথা)
৩. সরিষার তেল এবং রসুন
প্রাচীনকাল থেকে ব্যবহার হইয়া আসা খুব কার্যকরী একটি মালিশ হচ্ছে সরিষার তেল এবং রসুন।সরিষার তেল গরম করুন, সাথে যোগ করুন রসুন কুচি।
বিশেষ করে দেশী রসুন ব্যবহার করার চেষ্টা করবেন। কুসুম গরম অবস্থায় কোমরের যে স্থানে ব্যথা সেখানে আলতো করে মালিশ করুন। ভালো উপকার পাবেন। (কোমর ব্যাথা)
৪. পান পাতা এবং ঘি
পান পাতায় ঘি মালিশ করুন।খাঁটি ঘি নেয়ার চেষ্টা করবেন। কুসুম গরম করে পিঠে লাগান। (কোমর ব্যাথা)
৫. আদা চা
খেতে পারেন আদা চা।এতে কোমর ব্যথা অনেকটা কমে যায়।
৬. গরম জলের সেক
এটি খুব ভালো কাজে দেয় কোমর ব্যথায়। দিনে দুইবার গরম পানির সেক দিতে পারেন।(কোমর ব্যাথা)
৭. কোমর ব্যাথা কমাতে কাঁচা হলুদ বা হলুদের গুঁড়া
কাঁচা হলুদ আমাদের শরীরের জন্য বেশ উপকারী। এক্ষেত্রে হালকা কুসুম গরম পানির সাথে কাঁচা হলুদ বা হলুদের গুঁড়া মিশিয়ে সপ্তাহে ২/৩ দিন পান করতে পারেন। এটি শরীরে কোমর ব্যথা রোধ করার সাথে সাএথ অন্যান্য ব্যথাও দূর করতে সহায়তা করে।