JANA BUJHA

রোজা রেখে দাঁত ব্রাশ করা যাবে কী?

 রোজা রেখে দাঁত ব্রাশ করা নিয়ে নানা মতানৈক্য রয়েছে। আপনি
কী চাইবেন সারাদিন রোজা রেখে সামান্য দাঁত ব্রাশের অসতর্কতার জন্য আপনার রোজা নষ্ট
হয়ে যাক?

রোজা রেখে দাঁত ব্রাশ করা যাবে কী?


রোজায় কী কী করা যাবে এবং কী কী করা যাবে না তা নিয়ে অনেকের মাঝেই
নানা বিভ্রান্ত রয়েছে। সেই সব বিভ্রান্তের সমাধান দিবেন আমাদের আলেমরা। কিন্তু
আলেমরা যখন একই বিষয় এর নানা মতামত দেন তখন আমাদের মত সাধারণ মানুষদের হয় নান
ঝামেলা। ঠিক তেমনি রোজা রেখে পেস্ট, মাজন,
পাউডার
দিয়ে দাঁত ব্রাশ করা যাবে
কি না তা নিয়ে আলেমদের মাঝে মতানৈক্য রয়েছে। এই লিখায় সেই বিষয় গুলো তুলে ধরবো এবং
তার একটা সমাধান দেয়ার চেষ্টা করবো।
 

 

রোজা রেখে দাঁত ব্রাশ করা 

 

আমাদের প্রতিদিনকার কাজের মাঝে প্রতিটি মানুষের একটি আবশ্যক কাজ হলো
ব্রাশ করা। ব্রাশ না করলে একেতে হবে মুখে দুর্গন্ধ
  এবং সেই সাথে হবে দাঁতের নানা সমস্যা। সাধারণত
আমরা সকালে ঘুম থেকে উঠে প্রত্যেকেই ব্রাশ করে থাকি। কিন্তু রোজার দিনে সকালে ঘুম
থেকে উঠে রোজা রেখে দাঁত ব্রাশ করা যাবে কী? এটাই আমাদের অনেকের মনে প্রশ্ন।
 


 

রোজা রেখে দাঁত ব্রাশ করলে রোজা মাকরুহ হবে

 

একদল আলেম বলছেন হ্যাঁ, ব্রাশ কার যাবে। অন্য আর একদল আলেম বলছেন না
যাবে না। ব্রাশ করলে রোজা মাকরুহ হবে। কোন আলেম বলেন যে পেস্ট, পাউডার এর মাঝে
ঝাল, টক, মিষ্টি থাকে। আর রোজা রেখে কোন প্রকার টেস্ট নেয়া যাবে না। যেহেতু পেস্ট
এর মাঝে টেস্ট রয়েছে তাই তা দিয়ে ব্রাশ করলে রোজা মাকরুহ হবে।
 


আরো পড়ুনঃ


রোজা রেখে দাঁত ব্রাশ করলে রোজা মাকরুহ বা ভেঙে যাবে

 না

 

অন্য আর একদল আলেম এর মতামত হলো – না রোজা রেখে দাঁত ব্রাশ করলে রোজা মাকরুহ হবে না। এমনকি রোজাও ভাঙবে না।
এর কারণ হচ্ছে ব্রাশ করে মানুষ মুখ এর দুগর্ন্ধ দূর করার জন্য। কেউ পেস্ট বা
পাউডার খাওয়ার উদ্দেশ্যে ব্যবহার করে না। তাহলে রোজা হচ্ছে খাবার-পানাহার থেকে
দূরে থাকা কিন্তু পেস্ট বা পাউডার দিয়ে দাঁত ব্রাশতো আর খাবার না। তাহলে রোজা
ভাঙারও কোন কারণ থাকে না।
 

 

রোজা রেখে দাঁত ব্রাশ করতে কি কি সর্তকতা অবলম্বন

 করতে হবে

 

১. রোজা রেখে দাঁত ব্রাশ
এর সময় যেন পেস্ট বা পাউডার গলায় চলে না যায় তা লক্ষ্য রাখতে হবে।
 

২. সেহেরির সময় শেষ হওয়ার আগেই ব্রাশ করে নেয়া ভাল । 

৩. সবচেয়ে ভাল হয় মেসওয়াক করা । মেসওয়াক করলে সুন্নত পালনও হবে এবং
একই সাথে রোজা ভাঙা বা মাকরুহ হওয়ারও সম্ভাবনা নেই।
 

৪. আমরা যারা ব্রাশ করে অভ্যস্ত হয়ে গেছি তারা অন্তত রোজার মাসে
মেসওয়াক করলে খুব কী সমস্যা হবে।
 

৫. যদি ব্রাশ করেনও সেক্ষেত্রে পেস্ট বা পাউডার কম পরিমাণ ব্যবহার
করতে হবে।
 

 


ব্রাশ করা নিয়ে সমাধান কী হবে তাহলে

 

সবশেষে সমাধান আপনার কাছেই । যেহেতু একেক আলেম একেক কথা বলেন তাহলে
চলুন সাধারণ সেন্স কি বলে তা চিন্তা করি।
 

 

১.আপনি বা আমি মুখের দুগর্ন্ধ দূর করার জন্য ব্রাশ করছি। মুখে
দুগর্ন্ধ নিয়ে অন্য আর একজনের সমস্যা তৈরীর চেয়ে ব্রাশ করে ফ্রেশ থাকা বেশ ভাল। আর
ইসলাম নিশ্চই ভাল যেটা সেটাকেই গ্রহণ করবে।

 

২. খুব বেশী প্রয়োজন হলে  মেসওয়াক ব্যবহার ভাল। তাই মেসওয়াক ব্যবহার করুন প্রয়োজনে দিনে ২/৩
বার।
 

৩. মোট কথা যেহেতু রোজা রেখে
দাঁত ব্রাশ
নিয়ে মতানৈক্য রয়েছে সেহেতু বিকল্প অপশন হিসেবে মেসওয়াক করাই বেস্ট
উপায়। যেখানে মাতানৈক্য বা নানা মতবাদ ও মতভেদ আছে সেখানে কেন আমাদের যেতে হবে
বিকল্প অপশন থাকা সত্ত্বেও?

 

তাই পবিত্র রোজার মাসে নিজেকে পবিত্র রাখতে অবশ্যই ব্রাশ করার দরকার
আছে। অবশেষে কথা হলো রোজা রেখে দাঁত ব্রাশ
করা যাবে।
যদি দাঁত ব্রাশ করা হয় তাহলে ‍রোজা ভেঙে যাবে না। তবে এক্ষেত্রে
সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে যেন ব্রাশ করার সময় পেস্ট বা পাউডার মুখে চলে
না যায়।
 

 

আর যেহেতু বিকল্প অপশন হিসেবে মেসওয়াক ব্যবহার করা যাবে সেক্ষেত্রে
কনফিউশনের মধ্যে না গিয়ে মেসওয়াক করাই বেস্ট অপশন। তাই রোজাদার হিসেবে রোজা রেখে দাঁত ব্রাশ এর ক্ষেত্রে
মেসওয়াক প্রথম প্রাধান্য এবং ২য় প্রাধান্য পাবে পেস্ট বা পাউডার দিয়ে ব্রাশ করা।
  

 

 

Leave a Comment