JANA BUJHA

রাস্তায় চলাফেরা করতে যে বিষয়গুলো জেনে রাখা উচিৎ/ Best 2024

মানুষ তার প্রয়োজনে এক স্থান থেকে আরেক স্থানে যাতায়াত করার জন্য রাস্তার ব্যবহার করে। তাই আজকে আমরা রাস্তায় চলাফেরা করতে যে বিষয়গুলো জেনে রাখা উচিৎ সেই বিষয়গুলো নিয়েই কথা বলব। 

রাস্তায় চলাফেরা করতে যে বিষয়গুলো জেনে রাখা উচিৎ

 

 

রাস্তায় চলাফেরা করতে যে বিষয়গুলো জেনে রাখা উচিৎ:

 

আমাদের সমাজে একটা প্রবাদ এর প্রচলন আছে, আর তা হলো “পথ পথিকের সৃষ্টি করে না পথিকই পথের সৃষ্টি করে”। আরে ভাই যে যাকেই সৃষ্টি করুক না কেন মূল কথা হলো পথের জন্যই পথিক আর পথিকের জন্যই পথ, পথ আর পথিকের মিতালীতে চলে দেখ রথ।

 

 

উপরের দুলাইন পড়ে সহজেই অনুমান করতে পেরেছেন যে আমি কোন বিষয় নিয়ে আলোচনা করতে যাচ্ছি।হ্যাঁ ঠিক ধরেছেন আজ আমি রাস্তার আদি-অন্ত নিয়ে আলোচনা করবো।

 

 

মানুষ তার প্রয়োজনে এক স্থান থেকে আরেক স্থানে যাতায়াত করার জন্য রাস্তার ব্যবহার শুরু করেছিল সেই বহুকাল আগে।

 

দিনকে দিন জ্ঞান-বিজ্ঞান এর প্রসারে রাস্তা-ঘাট হয়েছে কাঁচা থেকে পাঁকা আর পাকা থেকে যে আর কি হতে পারে সেই জ্ঞান আমার একেবারে ফাঁকা। তবে যাই হোক একটা সময় চলতো গরুর গাড়ীর চাকা আর এখন চলে টায়ারের চাকা।

 

 

সময়ের প্রয়োজনে মানুষ প্রথম রাস্তার ব্যবহার শুরু করেছিল। সেই রাস্তাকে আরও উত্তম রুপে ব্যবহারের জন্য গাড়ি-ঘোড়া কত কিছুই না আবিষ্কার হয়েছে।

 

 

এত উন্নতির ফলে জীবনযাত্রা হয়েছে অতি সহজ। কিন্তু এত সহজ আর উন্নত জীবন পাওয়ার পরও রাস্তায় কেন জীবন দিতে হচ্ছে লাখো মানুষের। এর জন্য দায়ী কে?

 



রাস্তার ইতিহাস:

 


মানুষের মাঝে একটি ধারণা প্রচলিত ছিল যে, জীবজন্তুর পদাঙ্ক অনুসরণের মাধ্যমে রাস্তার উৎপত্তি হযেছিল। কিন্তু এই ধারণাকে অনেকেই নাকচ করে দেন। কারণ জীবজন্তু সুনির্দিষ্ট কোন পথ অনুসরন করে চলে না কিন্তু মানুষকে তার গন্তব্যে যেতে সুনির্দিষ্ট পথেই যেতে হবে।

 

 

অন্য দিকে মানুষ জীবজন্তুর চেয়ে বুদ্ধিমত্তায় অনেক বেশী এগিয়ে। তাই জীবজন্তুর পদাঙ্ক অনুসরণের মাধ্যমে রাস্তার উৎপত্তি এই কথার তেমন কোন ভিত্তি না থাকলেও তা মানব সমাজে একটা সময় প্রচলিত ছিল।

(রাস্তায় চলাফেরা করতে যে বিষয়গুলো জেনে রাখা উচিৎ)

 

আনুমানিক খ্রিস্টপূর্ব ১০০০০ বছর পূর্বে কাঁচা সড়কে পথচারী চলাচল শুরু করেছিলেন। আরো কিছু তথ্য মতে জানা যায়, মিশরে বিশ্বের সবচেয়ে প্রাচীন ও প্রসিদ্ধ রাস্তা নির্মাণ হয়েছিল।

 

 

এটি আনুমানিক খ্রিস্টপূর্ব  ২৬০০ থেকে ২২০০ সালের মধ্যে। আবার খ্রিস্টপূর্ব ৪০০০ অব্দে মধ্যপ্রাচ্যের রাস্তার সন্ধান পাওয়া যায়।

 

 

আবার প্রাচীন ভারতে খ্রিস্টপূর্ব ৩০০০ সালের দিকে ইটের তৈরি রাস্তার সন্ধান মেলে। খ্রিস্টপূর্ব ৫০০ সালে একটি ব্যয়বহুল রাস্তা নির্মাণ করা হয়েছিল যা পারস্য অর্থাৎ ইরানে অবস্থিত। যা পরবর্তীকালে সবচেয়ে সুন্দর মহাসড়কের মর্যাদা লাভ করেছিল। এই রাস্তার নামকরণ করা হয়েছিল রয়েল রোড।

 

(রাস্তায় চলাফেরা করতে যে বিষয়গুলো জেনে রাখা উচিৎ)

আনুমানিক ৩১২ খ্রিস্টপূর্বাব্দে রোমান সাম্রাজ্যে মজবুত পাথর দিয়ে রোমান রোড তৈরি হয়। এটি ইউরোপ ও উত্তর আফ্রিকার মধ্যে সংযোগ স্থাপন করেছিল। এটি মূলত সামরিক প্রচার প্রচারণার জন্য ব্যবহার করা হতো।

 

২৯ টি প্রধান রাস্তার সাথে সংযোগ ঘটিয়ে ৭৮০০ কিলোমিটার বা ৫২,৯৬৪ (রোমান মাইল) পাকা সড়ক নির্মিত হয়েছিল। অষ্টম শতকে আরবের খলিফাদের দ্বারা অনেক রাস্তা নির্মিত হয়। ওই সময় রাস্তাগুলো আলকাতরার মাধ্যমে পাকা করা হতো।

 

 

আমরা এতক্ষণ রাস্তার ইতিহাস সম্পর্র্ক জানলাম। এখন রাস্তার অন্যান্য বিষয় সম্পর্র্ক জানাব।

 

 

 

রাস্তায় ডিভাইডার লেন: 

 


এই আলোচনার প্রথমেই দুটি প্রশ্ন করা যাক।

 

১. রাস্তার মাঝে ডিভাইডার কিভাবে আবিষ্কার হলো?

 

২. কেনই বা এর প্রয়োজনীয়তা দেখা দিল?

 

(রাস্তায় চলাফেরা করতে যে বিষয়গুলো জেনে রাখা উচিৎ)

আজ থেকে প্রায় ৮০ বছর পূর্বের কথা, তখন রাস্তার মাঝে আঁকা কোন ডিভাইডার ছিল না। একদিন
জুন ম্যাকক্যারল নামের একজন ডাক্তার গাড়িতে করে কাজে যাচ্ছিলেন।

 

হঠাৎ রাস্তার মোড়ে ঘুরতে গিয়ে দেখলেন একটা ট্রাক তার দিকে ছুটে আসছে। তিনি বাঁচার জন্য গাড়িটিকে একটি বালির ঢিবিতে উঠিয়ে দিলেন।

 

এ যাত্রায় তিনি প্রাণ হাতে পেয়ে উপলব্ধি করলেন এমন একটি নিয়ম থাকা উচিত যেন রাস্তায় এলোমেলো গাড়ি চলাচল করতে না পারে।

 

আরো পড়ুন:

(রাস্তায় চলাফেরা করতে যে বিষয়গুলো জেনে রাখা উচিৎ)

তিনি অনুধাবন করেছিলেন নিয়ন্ত্রণ ও সচেতনতার মাধ্যমে দুর্ঘটনা এড়ানো সম্ভব। তিনি তার এজেন্ডা একটি চেম্বার অফ কমার্স এবং রিভারসাইড কান্ট্রি বোর্ডের কাছে উপস্থাপন করেছিলেন। কিন্তু তারা এ প্রস্তাব নাকোচ করলে

 

তিনি নিজেই রং আর ব্রাশ নিয়ে মাঠে নেমে পড়লেন। সবশেষে ১৯৪০ সালে ডিভাইডার লেনকে
ট্রাফিক নিয়মের আওতায় আনা হয়।

(রাস্তায় চলাফেরা করতে যে বিষয়গুলো জেনে রাখা উচিৎ)

দিন দিন বৃদ্ধি পাওয়া যানবাহনের চাপ বৃদ্ধির ফলে আবিষ্কার হতে থাকে বিভিন্ন রকম ডিভাইডার লেন। আমাদের দেশের রাস্তার মাঝে সাধারণত চার প্রকার ডিভাইডার লেন দেখা যায়।

 

১. সাদা কিন্তু মাঝে মাঝে কাটালেন
২. একটানা সাদা রেখার লেন।


৩.
একটানা ডাবল (সাদা /হলুদ) লেন।
৪. একটানা হলুদ রেখার পাশে কাটা হলুদ রেখার লেন।

 

১. সাদা কিন্তু মাঝে মাঝে কাটালেন:

এমন লেন দেখতে পেলে আপনার বুঝতে হবে আপনি ওভারটেক করতে পারবেন। আপনার যদি তারা
থাকে তবে আপনি আপনার ইচ্ছামত গাড়ি চালাতে পারবেন। সামনে থাকা গাড়ি আপনি ওভারটেক করতে পারবেন। লেন পরিবর্তন করতে পারবেন।

 

এখানে ওভারটেকিং নিষেধ  এখানে ওভারটেকিং করলে দুর্ঘটনা ঘটার সম্ভাবনা কম। তবে অবশ্যই সতর্ক হয়ে গাড়ি চালাতে হবে।

 

(রাস্তায় চলাফেরা করতে যে বিষয়গুলো জেনে রাখা উচিৎ)

২. একটানা সাদা রেখার লেন: 
আপনার
  গন্তব্যের জন্য যদি বড় কোন মহাসড়ক বা পাহাড়ি এলাকা পাড়ি দিতে হয়। তবে দেখবেন একটা সাদা রেখার হবে। এর অর্থ হল এখানে ওভারটেকিং নিষেধ এবং অত্যন্ত বিপদজনক।

 

এখানে লাইন পরিবর্তন বা ওভারটেকিং এর কোন অনুমতি নেই। অর্থাৎ আপনি যদি নিজ লেনে গাড়ির ড্রাইভ না করেন তবে দুর্ঘটনা ঘটার সম্ভাবনা অনেক বেশী। এরকম রাস্তায় কখনো  ওভারটেকিং বা লেন পরিবর্তন করা যাবে না। 

 

 

৩. একটানা ডাবল হলুদ রেখার লেন:

শহরের মধ্যে এমন লেন চোখে না পড়লেও মাঝে মাঝে হইওয়েতে এমন লেন দেখা যায়। এর অর্থ রাস্তায় ওভারটেকিং করার সম্পূর্ণ নিষেধ।

(রাস্তায় চলাফেরা করতে যে বিষয়গুলো জেনে রাখা উচিৎ)

কিন্তু কিছু কিছু সময়ের জন্য হয়তো পার্কিং করা যেতে পারে তা হবে রাস্তার বা পাশ ঘেঁষে। সামনে তেমন কোনো প্রতিবন্ধকতা না থাকলে লেন পরিবর্তন করা যাবে না।

(রাস্তায় চলাফেরা করতে যে বিষয়গুলো জেনে রাখা উচিৎ)

৪. একটানা হলুদ রেখার পাশে কাটা হলুদ রেখার লেন:
কখনো কখনো এমন ডিভাইডার লেন দেখা যায় যার একটা দাগ একটানা হলুদ রঙের কিন্তু অন্যটা কাটা কাটা।

 

এই লেন এর অর্থ হচ্ছে যে পাশে একটানা দাগ থাকে সেখানে ওভারটেকিং এবং ইউ ওভার স্পীড নিয়ন্ত্রণের জন্য প্রহরী ভেহিকেল ট্রাকিং সার্ভিস ব্যবহার করা যেতে পারে টার্ন  অত্যন্ত বিপদজনক।

 

কিন্তু যে পাশে কাটা কাটা আছে, সে  পাসের যানবাহন প্রয়োজন অনুযায়ী  লেন পরিবর্তন করতে পারবে। তবে অবশ্যই সর্তকতা অবলম্বন করতে হবে।

 

রাস্তায় গাড়ি চালানোর সময় অবশ্যই ডিভাইডার লেনের প্রতি নজর রাখতে হবে। নতুবা ঘটে যেতে পারে মারাত্মক দুর্ঘটনা। জীবন পড়তে পারে হুমকির মুখে।

 

 

গাড়ি চালানোর আগে চেক করা উচিত ফুয়েল ঠিক আছে কিনা? চাকায় হাওয়া আছে কিনা?ওভার
প্রিন্ট নিয়ন্ত্রণের জন্য প্রহরী ভেইকেল ট্রেকিং সার্ভিস ব্যবহার করা যেতে পারে।

 

 

সবশেষ কথা হলো- অসচেতনতা, অজ্ঞতা, জানার ইচ্ছা না থাকা, নিয়ম না মেনে চলা ও নিয়ম না জানার ইচ্ছা ইত্যাদি নানা কারণে প্রতিদিন কতশত মানুষ মারা যাচ্ছে। তবুও মানুষের মাঝে নেই কোন সচেতনতা, নেই কোন জানাবোঝার ইচ্ছা।

 

(রাস্তায় চলাফেরা করতে যে বিষয়গুলো জেনে রাখা উচিৎ)

তাই আমরা জানাবোঝা পরিবার ধারাবাহিকভাবে রাস্তায় চলাফেরা, ট্রাফিক আইন ইত্যাদি নানা বিষয়ে কন্টেন্ট প্রকাশ করে আমাদের পাঠকদের সজাগ রাখার চেষ্টা করবো ইনশাল্লাহ।  

 

 

সেই সাথে মনে রাখবেন সময়ের চেয়ে জীবনের মূল্য অনেক বেশি। ট্রাফিক আইন মেনে চলুন নিরাপদে থাকুন।  

 

 

0 thoughts on “রাস্তায় চলাফেরা করতে যে বিষয়গুলো জেনে রাখা উচিৎ/ Best 2024”

  1. রাস্তার ইতিহাস কিভাবে জানলেন? ভাল লাগছে এই বিষয়টি। আর রাস্তা নিয়ে বাংগালী যদি এত সচেতনই হইতো তাহলেতো আর এত সড়ক দুঘটনা হতো না🙂🙂🙂

    Reply

Leave a Comment