অবিশ্বাসীদের অবস্থা কেমন হতে পারে তা নিয়ে নানান জনের নানান চিন্তা থাকতে পারে। আজকের ছোট গল্প থেকে অবিশ্বাসীদের অবস্থা ও পরিণতি কেমন হয় তা বুঝা যাবে।
ছোট গল্পঃ অবিশ্বাসীর পরিণতি
তারা দুই ভাই। খুব মিল তাদের মধ্যে। রাতে দুই ভাই একই বিছানায় ঘুমায় আর অতি মাত্রায় খুঁনসুটি এক সময় ঝগড়ায় রুপ নেয় যদিও সে ঝগড়া আধাঘন্টার বেশী স্থায়ী হয় না। ছোট গল্প
তাদের দুই ভাইয়ের সম্পর্ক যেন অন্য যে কোন ভাইদের জন্য দিক নির্দেশনা দেয়, যে কিভাবে ভাই ভাই একসাথে মিলেমিশে থাকা যায়। এক ভাই অন্য ভাইয়ের জামা কাপড় পড়ে, একসাথে খেলতে যায়, ঘুরতে যায়। এমন বন্ধুর মত ভাইদের মধ্যে হঠাৎ এক বিপত্তিকর ঘটনার উদয় হল।ছোট গল্প
দুই ভাই একদিন ঘুরতে গেল । ছোট ভাই টয়লেটে গেল আর বড় ভাই দাড়িয়ে আছে একটা বট গাছ তলায়। সেখানে এক গণক সেই গাছের নিচে শুয়ে ছিল। বড় ভাই খুব আগ্রহ নিয়ে এগিয়ে গেল গণকের দিকে। আপনি কি মানুষের হাত দেখে তার ভাগ্য বলে দিতে পারেন?ছোট গল্প
গণক কিছুক্ষণ চুপ রইল আর বলল হাত দাও । হাত নেড়েচেড়ে দেখার পর গণক বলল তুমি তোমার ভাইয়ের দ্বারা কষ্ট পাবে এমন কি মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে।ব্যাস ঘটনা যা ঘটার তা কিন্তু শুরু হয়ে গেল।
ছোট ভাই ফিরে এলো আর দুজন আবার ঘুরার উদ্দেশ্যে রওনা হল। কিন্তু বড় ভাইয়ের আগের মত আর হাসিখুশী নেই। ছোট ভাই কয়েকবার জিজ্ঞেস করল কিরে ভাই তোর কি কিছু হইছে? মুখটা এমন পেচার মত করে রাখছিস কেন? উত্তরে- কই কি হবে। কিছুই না, চল বাসায় চলে যাব।ছোট গল্প
আরো পড়ুনঃছোট গল্প
সেদিন রাতে বড়ভাই খুবই চুপচাপ, কোন কথাবার্তা,হাসিঠাট্টা নেই। বড় সারা রাত ঘুমায় নি। ঘুমায়নি এই জন্য যে ,যদি তার ভাই রাতে তাকে হত্যা করে। আর অন্যদিকে ছোট ভাই দিব্যি ঘুমাচ্ছে।
এভাবে বেশ কয়েকদিন কেটে গেল, আস্তে আস্তে বড় ভাই অসুস্থ হতে থাকলো। কারণ সে সারারাত সজাগ থাকে সকাল থেকে তো আবার ব্যস্ত দিন শুরু হয়ে যায়। তাই আর ঘুম হয় না কিন্তু এইদিকে ছোট ভাই খুব স্বাভাবিক জীবনযাপন করতে লাগলো। তার কোনো সমস্যাই নেই।ছোট গল্প
ছোট গল্পঃ অবিশ্বাসীর পরিণতি-২
সে স্বাভাবিক আছে অন্যদিকে বড় ভাইয়ের স্বাস্থ্যের অবনতি ঘটতে থাকলো। তার মেজাজ খিটখিটে হয়ে গেল, কাওকেই সহ্য হয় না তার। আর রাতে এখন দুই ভাই একসাথে ঘুমাতেও যায়
না। বড় ছোট এর সাথে কথায় বলেতে চায় না বলা চলে।
ছোট ভাইটা অনেক বার ক্ষমা চেয়েছে বড়র কাছে, আর বলেছে আমার যদি কোন অন্যায় থাকে তবে আমি তোর কাছে ক্ষমা চাই। তবুও তুই আর এমন করিস না দাদাভাই। কি হইছে তোর? বড় ভাইটা হাসে আর বলে কই কি হইছে কিছুই না।ছোট গল্প
তখন তাদের আম্মু ডাক্তারের কাছে নিয়ে গেল বড় ভাইকে। কিন্তু ডাক্তার অনেক পরীক্ষা-নিরীক্ষা করার পরও কোনো ধরনের রোগ খুঁজে পেল না। বড় ভাই এর শারীরিক অবস্থা দিনকে দিন খারাপ হতে থাকলো।ছোট গল্প
অসুস্থতার খবর শুনে একদিন তাদের বাসায় তাদের মামাতো ভাই জিসান ভাই আসলো। যে কিনা বড় ভাইয়ের (দাদাভাই) খুব কাছের মানুষ ।ছোট গল্প
তখন বড় ভাইটি তার মামাত ভাইকে বিস্তারিত ঘটনা খুলে বললো, যে একদিন এক গণক তার হাত দেখে বলেছে যে, সে তার ছোট ভাইয়ের হাতে হত্যা হতে পারে। এই কথা শুনে জিসানের আর বুঝতে বাকী নেই ঘটন্ কি ঘটেছে।
জিসান আবার খুব ধার্মিক মানুষ। সে সব কথা শোনার পর বলল- শোন প্রথম কথা
হচেছ ইসলামে গণক দেখানো শিরক করা। তুইতো আল্লাকে বিশ্বাস করিস তাই না? হ্যা করি। তাহলে
তুই বল জন্ম,মৃত্যু কার হাতে?
আল্লাহ মানুষের জন্ম,মৃত্যু নির্ধারণ করে রেখেছেন। কার কখন, কোথায়, কিভাবে মৃত্যু হবে তা আল্লায় ভাল করে জানেন। ঐ গণক শালাতো পাগল। তুই তোর বিশ্বাসটাকে গণকের মত পাগলের কাছে তুলে দিলি?ছোট গল্প
ভাই তোকে কি হত্যা করবে, কষ্ট দিবে, তুই নিজে নিজেইতো তোকে হত্যা করছিস। দেখ মূল ব্যাপর হচ্ছে গণক বলার আগে তুই তোর ছোট কে বিশ্বাস করতি এখন তুই আর ওকে বিশ্বাস করতে পারছিস না। অবিশ্বাস করছিস তোর ভাইকে। সেটাই তো মনে হচ্ছে আমার। নাকি?ছোট গল্প
ছোট গল্পঃ অবিশ্বাসীর পরিণতি-৩
আগে ছিলি তুই বিশ্বাসী, আর এখন তুই অবিশ্বাসী। যদি আল্লাহ তোর মৃত্যু তোর ভাইয়ের হাতে লিখে রাখেন, তাহলে তুই যেখানেই যাস আর যত সতর্ক থাকিস না কেন তোর মৃত্যু ওর হাতেই হবে। এটার নামই বিশ্বাস।ছোট গল্প
সেই দিন জিসান চলে গিয়েছিল। গণকের কথায় বিশ্বাস স্থাপনে যে তার কত বড় ক্ষতি হয়ে যাচ্ছে তাও সে উপলব্ধি করতে পারল। নিজে নিজে সে অনুতপ্তও হল।ছোট গল্প
সে আস্তে আস্তে সুস্থ হয়ে উঠলো। আর সে এই ঘটনার প্রেক্ষিতে এইটাই উপলব্ধি করলো যে-
বিশ্বাসী থাকে ভালো, অবিশ্বাসী নিজেকে পুড়ালো।
আপনার পোস্টটি পড়ে অনেক যুগোপযোগী বলে মনে হয়েছে কিন্তু বিশ্বাসী ব্যাক্তিত্বের মর্ম সম্পর্কে। ধন্যবাদ
কঠিন বাস্তবতা তুলে ধরেছেন
অল্প কথায়,খুব সুন্দর বিষয় উঠে এসেছে।
ভালো লাগলো