বয়ঃসন্ধিকালে পরিবর্তন এবং করণীয় বিষয় গুলো একজন অভিভাবককে ও কিশোর- কিশোরিকে জানা জরুরি।
বয়ঃসন্ধিকাল কাকে বলে,কী সমস্যা হয়,ছেলে এবং মেযেদের পরিবর্তন ইত্যাদি জানবো।
বয়ঃসন্ধিকাল কাকে বলে/ বয়ঃসন্ধিকাল english meaning
বয়ঃসন্ধিকাল কাকে বলে এই প্রশ্নের জবাব অনেকে অনেকভাবে হয়ত দেবে। কিন্তু এককথায় উত্তর হলো ছেলেদের শুক্রানু এবং মেযেদের ডিম্বানু তৈরী যখন থেকে শুরু হয় তখন থেকে বয়ঃসন্ধি শুরু। জীবনের যে সময়টাতে একজন শিশু প্রাপ্তবয়স্ক হতে শুরু করে এবং তার মধ্যে প্রজনন ক্ষমতা তৈরী হয় সেই সময়কালকে বয়ঃসন্ধিকাল বলে।
অর্থাৎ, যৌন পরিপক্বতার জন্য যে সময়ে মানুষের শারীরিক ও মানসিক পরিবর্তন আসে সেই সমযকালই বয়ঃসন্ধিকাল। বয়ঃসন্ধিকাল english meaning হলো Puberty।
তখন মানুষের মস্তিষ্ক থেকে গোনাডে শুক্রানু এবং ডিম্বানু তৈরীর সংকেত যায়। যার ফলে গোনাড নানা হরমোন তৈরী করে। ফলশ্রুতিতে ছেলে বা মেয়ের অস্তি, পেশী, স্তন, ত্বক, কন্ঠসহ শাররিক নানা পরিবর্তন দেখা দেয়। সেই সাথে মানসিকও নানা পরিবর্তন দেখা দেয় যেমন, কেউ অবমূল্যায়ন করলে সহ্য করতে না পারা, নিজের মতামত এর প্রাধান্য প্রতিষ্ঠা করা ইত্যাদি।
বয়ঃসন্ধিকালের সময়কাল কত/ বয়ঃসন্ধিকাল বয়সসীমা কত/ বয়ঃসন্ধিকালের সময়সীমা কত
-
বয়ঃসন্ধিকালের সময়কাল বা বয়সসীমা বা সময়সীমা ছেলে ও মেয়েদের কিছুটা ভিন্ন হয়।
-
সাধারণত ছেলেদের আগে মেয়েদের বয়ঃসন্ধিকালীন পরিবর্তন শুরু হযে যায়।
-
উইকিপিডিয়ার তথ্য মতে, মেয়েদের বয়ঃসন্ধিকালের সময়সীমা ৯ থেকে ১৪ বছর।
-
ছেলেদের বয়ঃসন্ধিকারের সময়কাল ১০ থেকে ১৭ বছর।
-
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্য মতে ১০ থেকে ১৯ বছর বয়সটাকে কৈশর বলা হযে থাকে।
-
এই বয়সের যে কোন সময় বয়ঃসন্ধি শুরু হতে পারে। ১০ বছর হলেই যে বয়ঃসন্ধি শুরু হয়ে যাবে এমন না।
-
আবার ১৯ বছর বয়স এর পরও কারও কারও বয়ঃসন্ধিকালীন পরিবর্তনগুলো থাকতে পারে।
-
মেয়েদের বয়সন্ধিকাল এর সময়সীমা ১০/১১ বছর থেকে ১৮/১৯ বছর পর্যন্ত। (তথ্য- বিশ্লেষণ ডট কম)
-
ছেলেদের বয়ঃসন্ধিকাল এর সময়সীমা ১২/১৩ বছর থেকে ১৮/১৯ বছর পর্যন্ত। (তথ্য- বিশ্লেষণ ডট কম)
ছেলেদের বয়ঃসন্ধিকাল কখন শুরু হয়/ ছেলেদের বয়ঃসন্ধিকাল কখন শেষ হয়/ মেয়েদের বয়ঃসন্ধিকাল কখন শুরু হয়
-
চিকিৎসকের মতে ছেলেদের বয়ঃসন্ধিকাল শুরু হয় বা হতে পারে ১১ থেকে ১৫ বছর এর মধ্যে। (তথ্য- বিবিসি ডট কম)
-
মেয়েদের ৯/১০ থেকে ১৩ বছর বয়সের মাঝে যে কোন সময় বয়ঃসন্ধিকাল শুরু হতে পারে। (বয়ঃসন্ধিকালে পরিবর্তন)
বয়ঃসন্ধিকালে পরিবর্তন ও করনীয় বিস্তারিত আলোচনা
বয়ঃসন্ধিকালে একজন ছেলে এবং মেয়ের নানা পরিবর্তন দেখা দেয়। এখানে ছেলেদের এবং মেয়েদের পরিবর্তন গুলো আলাদা
করে আলোচনা করা হচ্ছে। আর পরবর্তিতে কি কি করনীয় রয়েছে তাও ছেলে এবং মেয়েদের ক্ষেত্রে আলাদা আলোচনা করা হবে।
বয়ঃসন্ধিকালে ছেলেদের পরিবর্তন/ বয়ঃসন্ধিকালে ছেলেদের শারীরিক পরিবর্তন/বয়ঃসন্ধিকালে ছেলেদের কি সমস্যা হয়/ বয়ঃসন্ধিকালে ছেলেদের পরিবর্তন
ছেলেদের নানা পরিবর্তন দেখা দেয় যেমন, শারীরিক, মানসিক, সামাজিক, হরমোনাল। এখানে আগে শারীরিক বিষয়
তুলে ধরা হলো। (বয়ঃসন্ধিকালে পরিবর্তন)
বয়ঃসন্ধিকালে ছেলেদের উচ্চতা বৃদ্ধি পায় যা সবচেয়ে বেশী লক্ষণীয়
ছেলেদের হাড় এই সময় দ্রুত বৃদ্ধি পায়। যে কারণে দ্রুত লম্বা হতে দেখা যায়। অল্প দিনের মাঝে কযেক ইঞ্চি লম্বা হয়ে যেতে পারে।
সাধারণত ১৮ বছর পর্যন্ত ছেলেরা দ্রুত এবং সর্বোচ্চ বৃদ্ধি পায়। এরপর খুব একটা লম্বা হয় না। তবে সবার ক্ষেত্রে তা একরকম হয়
না।
প্রাথমিক যৌন বৈশিষ্ট্যগুলোর প্রকাশ
যৌন অঙ্গগুলোকে ২ টি ভাগে ভাগ করা যায়। যে গুলো অভ্যন্তরীন এবং যৌন অঙ্গগুলোর মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সেগুলো হলো
প্রাথমিক যৌন বৈশিষ্ট্য হিসেবে বিবেচনা করা হয়। যেমন, অন্ডকোষ, পুরুষাঙ্গ, শুক্রানু ( বীর্য এরসাথে বের হয়), বীর্য ইত্যাদি।
এই প্রাথমিক যৌন বৈশিষ্ট্যগুলো প্রথম প্রকাশ পায়। তাই ছেলেদের এই সময় অন্ডকোষ বড় হয়, পুরুষাঙ্গ বড় ও মোটা হয়, বীর্য বের
হয়, শুক্রানু তৈরী হয় । বয়ঃসন্ধির শুরুতেই এই পরিবর্তনগুলো শুরু হয়ে যায়। (বয়ঃসন্ধিকালে পরিবর্তন)
সেকেন্ডারি যৌন বৈশিষ্ট্যগুলোর বিকাশ
সেকেন্ডারি বা মধ্যম যৌন বৈশিষ্ট্যগুলো অধিকাংশই বাহ্যিক। এই বৈশিষ্ট্যগুলো প্রকাশের ফলে ছেলে মেয়েদের থেকে আলাদা হয়।
সাধারণত শারীরিক পরিবর্তনগুলোই এই সেকেন্ডারি পর্যায়ে পরে। যে যে পরিবর্তনগুলো হয়-
১. মুখে দাড়ি, গোঁফ গজায়।
২. লোমের বৃদ্ধি পায় শরীরে এবং লোম বড় হয়।
৩. বুকে লোম উঠতে পারে।
৪. কাঁধ প্রশস্ত হয়।
৫. বুকের প্রশস্ততা বৃদ্ধি পায়।
৬. নাভীর নিচে ও পায়ুপথে লোম আস্তে। আস্তে বৃদ্ধি পায়।
কন্ঠসরের গভীরতা
বয়ঃসন্ধির সময় আরেকটি উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন হল কণ্ঠস্বরের গভীরতা। স্বরযন্ত্র বা ভয়েস বক্স বয়স বৃদ্ধির সাথে সাথে
কণ্ঠনালীগুলি লম্বা এবং ঘন হয়। যার ফলে কন্ঠের একটা গাম্ভীর্যভাব দেখা যায়। কন্ঠস্বর মোটা, ভারী ও ভরাট হয়ে যায়।
(বয়ঃসন্ধিকালে পরিবর্তন)
পেশী বৃদ্ধি ও সুঠাম দেহ
টেস্টোস্টেরন বৃদ্ধির ফলে ছেলেদের পেশী ভর বৃদ্ধি পায়। হাতের বাহু কিছুটা বৃদ্ধি পায়, হাতের শিরা-উপশিরা স্পষ্ট হতে থাকে।
দেহের চামড়া টান টান ভাব নেয়। শক্তি বৃদ্ধি পেতে থাকে। ইত্যাদি নানা পরিবর্তন হয়। (বয়ঃসন্ধিকালে পরিবর্তন)
ত্বকে পরিবর্তন
বয়ঃসন্ধিকালে ছেলেদের ত্বকে পরিবর্তন আসতে পারে। যেমন তৈলাক্ত ত্বক এবং ত্বকে ব্রন উঠে।
শরীরের গন্ধ বৃদ্ধি পেতে পারে
বয়ঃসন্ধির সময়টাতে শরীরে ঘর্ম গ্রন্থিগুলো সক্রিয় হতে থাকে। যার ফলে শরীরে একটা সতন্ত্র গন্ধ তৈরী হয়।
এই গন্ধ কারও কারও ক্ষেত্রে খুব তীব্র হয় আবার কারওস ক্ষেত্রে কিছুটা কম তীব্র হয়।
এই জন্য নিয়মিত গোসল করা ও সুগন্ধি ব্যবহার করা উচিৎ।
আরো পড়ুনঃ
বয়ঃসন্ধিকালে ছেলেদের মানসিক ও আবেগীয় পরিবর্তন
মেজাজ এর পরিবর্তনঃ
বয়ঃসন্ধির সময় ছেলেদের হরমোনের উঠানামা ও পরিবর্তন এর ফলে ছেলেদের মেজাজ এর ব্যাপক পরিবর্তন হয়ে যায়।
তখন রাগ, দুঃখ, নিঃসঙ্গতা অনুভব, যে কোন কিছুতে বিরক্তিভাব অনুভব করা ইত্যাদি নানা মেজাজের পরিবর্তন দেখা দিতে পারে।
আবেগ এর পরিবর্তনঃ
এই সময় অল্প কোন বিষয় নিয়ে খুব বেশী উদ্বেগ দেখানো আবার অনেকের ক্ষেত্রে ডন্ট কেয়ার/ কাওকে কিছু মনে না করা ভাব
দেখানো আবেগ প্রকাশ পেতে পারে। বিশেষ কিছু মানুষ এর প্রতি ভালবাসা অনুভব করা। প্রিয় মানুষ হিসেবে কাওকে বেছে নিতে
চাওয়া ইত্যাদি নানা পরিবর্তন হতে পারে। (বয়ঃসন্ধিকালে পরিবর্তন)
স্বপরিচয় তুলে ধরতে চাওয়া
বয়ঃসন্ধির সময় অনেকে স্ব-পরিচয় তুলে ধরতে চায়। সে নিজেকে অন্যের সাথে তুলনা করে। এবং নিজেকে অন্যদের থেকে
আলাদা করে প্রকাশ করতে চায়। নিজেকে নায়ক এর মত করে প্রকাশ করার ইচ্ছা থাকে মনে মনে। সকলে যেন তাকে প্রশংসা
করে, সবাই যেন তাকে মূল্যায়ন করে সেটা মন থেকে চায়। আর সে জন্য তার মধ্যে নানা পরিবর্তন লক্ষ করা যায়।
জ্ঞানীয় পরিবর্তনঃ
বয়ঃসন্ধির সময়কালে তাদের জ্ঞানীয় পরিবর্তন হতে দেখা যায়। তাদের মস্তিষ্ক ব্যাপকভাবে বিকাশ লাভ করে। সিদ্ধান্ত নিতে পারা,
যে কোন সমস্যা সমাধান করার চেষ্টা এবং নানা সমস্যা সমাধান করতে পারা, বিমূর্ত চিন্তা করা, বুদ্ধি ও চিন্তা-ভাবনা করে কাজ করা
ইত্যাদি নানা পরিবর্তন আসতে পারে ছেলেদের বয়ঃসন্ধির সময়টাতে।
বয়ঃসন্ধিকালে ছেলেদের যৌন ও প্রজনন পরিবর্তন
যৌন পরিপক্বতা
যৌনজীবনের সূচনা হয় এই বয়ঃ}সন্ধির সময়টাতেই। তাদের বীর্যপাত হতে পারে। তাছাড়া এই বয়সে স্বপ্ন দোষ শুরু হতে পারে।
হয়ত স্বপ্নে বিপরীত লিঙ্গের কোন কাল্পনিক নারীর সাথে যৌন মিলন দৃশ্য সে দেখতে পারে। আর তখন ঘুমের মধ্যে বীর্যপাত হতে
পারে। তাছাড়া বিপরীত লিঙ্গের প্রতি আকর্ষণ অনুভব হলেই পুরুষাঙ্গ দিয়ে পাতলা আঠালো পানির মত বীর্য বের হতে পারে।
আর এই লক্ষণগুলো প্রত্যেকটাই স্বাভাবিক। যে বিষয়গুলো কিশোর ছেলেদের জানা দরকার।
শুক্রানু উৎপাদনঃ
বয়ঃসন্ধির সময়টাতে বীর্যএর সাথে শুক্রানু বের হয়। আর অন্ডকোষ এই সময়টাতেই শুক্রানু তৈরী করতে থাকে। এই শুক্রানুর
জন্য যে ছেলেদের প্রজনন ক্ষমতা লাভ করে। এই শুক্রানুর জন্যই বাচ্চা হয়ে থাকে। যৌন ইচ্ছা ও বিপরীত লিঙ্গের প্রতি আকর্ষণ
বয়ঃসন্ধির সময়কালে যৌন ইচ্ছা বৃদ্ধি পায়। বিপরীত লিঙ্গের সাথে মিলিত হওয়ার ইচ্ছা জাগে।
বিপরীত লিঙ্গের কাছাকাছি গেলেযৌনমিলনের ইচ্ছা বাড়তে পারে এবং পুরুষাঙ্গ উত্থান হতে পারে। তাছাড়া বিপরীত লিঙ্গের
শারীরিক অঙ্গ,- প্রতঙ্গ দেখে ব্যাপক আকর্ষণ অনুভব করতে পারে। বয়ঃসন্ধির অন্যতম পরিবর্তন এর মধ্যে একটা হল যৌন ইচ্ছা বা বিপরীত লিঙ্গের প্রতি আকর্ষণ।
যা প্রবলভাবে কাজ করে।
বয়ঃসন্ধিরকালে ছেলেদের হরমোনাল পরিবর্তন টেস্টোস্টেরন বৃদ্ধিঃ
টেস্টোস্টেরনকে পুরুষ হরমোন বরা হয়। এই হরমোনের উৎপাদন এর জন্যই নারী- পুরুষ আলাদা হয়ে থাকে। অন্ডকোষ থেকে
এই হরমোন এর উৎপাদন হয়ে থাকে। এই হরমোনের জন্য মুখের দাড়ির বৃদ্ধি, কন্ঠস্বর গভীর হওয়া, পেশীর বিকাশ হয়ে থাকে।
তাই টেস্টোস্টেরন বৃদ্ধি খুব গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তনের জন্য দায়ী।
গোনাডোট্রপিন- রিলিজিং হরওমোন ( জিএনআরএইচ)
মস্তিষ্কের একটি অংশ হাইপোথ্যালামাস থেকে জিএনআরএইচ নামক একটি হরমোন নিঃসরন করে। এটি পিটুইটারী গ্রন্থিকে
লুটিনাইজিং হরমোন এবং ফলিকল হরমোন নিঃসরন করার জন্য সংকেত দেয়। এই হরমোন গুলো টেস্টোস্টেরন উৎপাদন
করতে এবং শুক্রানু তৈরী করতে অন্ডকোষকে উদ্দীপিত করে।
ইস্ট্রোজেন প্রধানত মহিলাদের সাথে যুক্ত থাকলেও ছেলেদের মাঝেও কিছু পরিমান উৎপন্ন হয়। আর এর জন্য হাড়কে বৃদ্ধিতে
অবদান রাখে। আর পরবর্তিতে বৃদ্ধির সমাপ্তির দিকে পরিচালিত করে। মনস্তাত্বিক ও সামাজিক অবস্থানগত পরিবর্তনবন্ধুত্ব বা
পাটনার এর সাথে ঘনিষ্ট সম্পর্ক এই সময় ছেলেরা তার সমমনা কিছু বন্ধুর সাথে খুব ভাল সম্পর্ক গড়ে তুলে।ছেলেরা নতুন বন্ধু
খুঁজতে পারে। তাছাড়া ঘনিষ্ট বন্ধুর মতামতকে প্রাধান্য দেয়া এবং অন্যের সাথে তাল মিলিয়ে কাজ করা ইত্যাদি পরিবর্তন আসা
স্বাভাবিক।
তখন বন্ধুত্ব একটি খুব গুরুত্বপূর্ণ অংশ হয়ে উঠে জীবনের জন্য। স্বাধীনতা ও স্বায়ত্তশাসন বয়ঃসন্ধিকালে ছেলেরা
স্বাধীনতা চায়। নিজের যা ইচ্ছা এবং যা তার ভাল লাগে তাই সে করতে চায়। সে স্বায়ত্তশাসন দাবী করে। সে নিজের গোপনীয়তা
চায় এবং তার একটা নিজস্ব স্থানের ইচ্ছা জন্মাতে পারে। সে সবার মাঝে থেকেও নিজেকে একটু আলাদা করে রাখতে চাইতে পারে। মতামত প্রকাশ করতে চাইবে । এসব পরিবর্তন খুব স্বাভাবিক ।
আরো পড়ুনঃ
বয়ঃসন্ধিকালে মেয়েদের পরিবর্তন- শারীরিক পরিবর্তন
স্তনের বৃদ্ধিবয়ঃসন্ধির সময় মেয়েদের যে পরিবর্তনটা সবচেয়ে বেশী লক্ষণীয় হয় তা হলো স্তনের বিকাশ। শরীরে যখন ইস্ট্রোজেন
এর উঃপাদন শুরু হয় তখন থেকে স্তনের বৃদ্ধি লক্ষ করা যায়। আর ইস্ট্রোজেন এর মাত্রা যত বাড়তে থাকে স্তনের বৃদ্বিও
আনুপাতিক হারে বাড়তে পারে।
আর সেই সাথে স্তনের আকারও আস্তে আস্তে গোলাকার হতে থাকে। এটি মেয়েদের একটি স্পর্শকাতর,উত্তেজনাপূর্ণ,
সংবেদনশীল অঙ্গ হিসেবে বিকাশ লাভ কারে। (বয়ঃসন্ধিকালে পরিবর্তন)
শরীরের চুল বৃদ্ধি
কিশোরী মেয়েদের এই সময় শরীরের বিভিন্ন জায়গায় চুল বৃদ্ধি পেতে থাকে। বাহুর নিচে/ হাতের বগলে, নাভীর নিচে, যৌনাঙ্গের
পাশে, পায়ে ইত্যাদি জায়গায় লোম বৃদ্ধি পেতে থাকে। (বয়ঃসন্ধিকালে পরিবর্তন)
শারিরীক পরিবর্তন স্তনের বিকাশ
বয়ঃসন্ধির সময় সবচেয়ে লক্ষণীয় পরিবর্তনগুলির মধ্যে একটি হল স্তনের বিকাশ। শরীর যখন ইস্ট্রোজেনের উচ্চ মাত্রা তৈরি
করতে শুরু করে, তখন স্তন বড় হতে শুরু করে এবং আরও গোলাকার আকার ধারণ করে। এটি মেয়েদের জন্য একটি
উত্তেজনাপূর্ণ এবং কখনও কখনও চ্যালেঞ্জিং সময় কারণ তারা তাদের পরিবর্তনশীল শরীরের সাথে মানিয়ে নেয়।
(বয়ঃসন্ধিকালে পরিবর্তন)
শরীরের চুল বৃদ্ধি
বয়ঃসন্ধিও বিভিন্ন ক্ষেত্রে শরীরের লোম বৃদ্ধির সূত্রপাত করে। মেয়েরা তাদের বাহুর নীচে এবং পিউবিক অঞ্চলে চুলের উপস্থিতি
লক্ষ্য করতে পারে। শরীরের চুলের বৃদ্ধি হরমোনের পরিবর্তন দ্বারা প্রভাবিত হয় এবং ব্যক্তিদের মধ্যে তীব্রতা পরিবর্তিত হয়।
ঋতুস্রাব এবং মাসিকের সূত্রপাত
ঋতুস্রাব, বা মাসিক, বয়ঃসন্ধির সময় একটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ সময়। এই সময় থেকে একটি মেয়ের প্রজনন ক্ষমতার আরম্ভ হয়।
এই সময় মেয়েদের যোনী পথ দিয়ে প্রতিমাসে রক্ত বের হয়। আর এই রক্ত বের হওয়াটা একেবারে স্বাভাবিক। আর রক্ত বের হওয়ার
এই সময়টাকে মাসিক বলা হয়ে থাকে। (বয়ঃসন্ধিকালে পরিবর্তন)
প্রজনন ক্ষমতা
এই সময় মেয়েরা প্রজনন ক্ষমতা প্রাপ্ত হয়। তখন তাদের ডিম্বানু উৎপাদন হয়। এই ডিম্বানু যখন শুক্রানুর সাথে শিলিত হয় তখনই
মূলত বাচ্চা হয়ে থাকে। আর এই প্রজনন ক্ষমতার সূচনা হয়ে থাকে সেই বয়ঃসন্ধির সময় থেকেই । জরায়ু যে কাজ তা সে করতে
সামর্থবান হয়। (বয়ঃসন্ধিকালে পরিবর্তন)
শরীরের আকৃতি পরিবর্তন
বয়ঃসন্ধির সময়, কিশোরী মেয়েদের হাড় দ্রুত বৃদ্ধি পেতে থাকে। এর ফলে উচ্চতা বৃদ্ধি পায় এবং শরীরের অন্যান্যা অঙ্গ-প্রতঙ্গও
পরিবর্তন হতে দেখা যায়।। মেয়েদের নিতম্ব প্রশস্ত হয় এবং তাদের কোমর এর গঠন আরও সুগঠিত হয়। এই পরিবর্তনগুলি
একবারেই স্বাভাবিক এবং প্রাপ্তবয়স্কতার দিকে ন্যাচারাল উপায়েই বৃদ্ধি। (বয়ঃসন্ধিকালে পরিবর্তন)
শরীরের বিভিন্ন অংশে ব্রণ হওয়া ও ত্বকের পরিবর্তন বয়ঃসন্ধিতে মেয়েদের হরমোনের ওঠানামা বা উৎপাদনের জন্য শরীরে
বিভিন্ন জায়গায় ব্রণ হতে পারে। ত্বকের তেল উৎপাদন এর ছিদ্র বন্ধ হয়ে যেতে পারে। সে জন্য ব্রণ এবং দাগ সৃষ্টি হতে পারে।
তাছাড়া কারও কারও শরীরে বা ত্বকে তৈলাক্তভাব তৈরী হতে পারে। বিশেষ করে অনেকের মুখে অনেকবেশী তেল তৈরী হতে দেখা
যায়। (বয়ঃসন্ধিকালে পরিবর্তন)
বয়ঃসন্ধিতে মেয়েদের মানসিক এবং মানসিক পরিবর্তন মেজাজের পরিবর্তন এবং হরমোনের ওঠানামা বয়ঃসন্ধিতে হরমোনের
উৎপাদন, ওঠানামাসহ নানা পরিবর্তন নিয়ে আসে যা মেজাজের পরিবর্তন এবং মানসিক ওঠানামার কারণ হতে পারে। মেয়েরা
আনন্দ এবং উত্তেজনা থেকে শুরু করে দুঃখ এবং জ্বালা ও যন্ত্রনাসহ নানা আবেগ এর পরিবর্তন এর সম্মুখীন হয়।
(বয়ঃসন্ধিকালে পরিবর্তন)
আর এই পরিবর্তনগুলো একজন কিশোরীর জন্য খুব স্বাভাবিক ঘটনা। যৌন অনুভূতি এবং বিপরীত লিঙ্গের প্রতি আকর্ষণ অনুভব
করাবয়ঃসন্ধির এই সময়টাতে মেয়েরা যৌন অনুভূতি পায়। তারা যৌন চাহিদা পূরণ করতে চায়। তারা বিপরীত লিঙ্গর প্রতি যৌন
অনুভূতি এবং আকর্ষণ অনুভব করে। এই অনুভূতিগুলি বিভ্রান্তিকর এবং অপ্রতিরোধ্য হতে পারে। তাই স্বাস্থ্যকর সম্পর্ক,
ঠিক- বেঠিক এবং যৌন স্বাস্থ্যের বিষয়ে প্রপার শিক্ষা এবং নির্দেশনা পাওয়া মেয়েদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
আত্মপরিচয় এবং আত্মসম্মান
বয়ঃসন্ধি হল নিজেকে- আবিষ্কার এবং ব্যক্তিগত পরিচয় অন্বেষণের একটি ভাইটাল সময়। মেয়েরা তাদের চেহারা, ক্ষমতা, নিজের
অবস্থান, পারিবারিক বা সামাজিক জায়গায় দৃঢ় করতে চায়। এই বয়ঃসন্ধিতে মেয়েদের আত্ম-সম্মান এবং আত্ম-গ্রহণযোগ্যতার
একটি শক্তিশালী অনুভূতির প্রকাশ পেতে পারে। (বয়ঃসন্ধিকালে পরিবর্তন)
জ্ঞানীয় এবং মস্তিষ্কের বিকাশ শারীরিক পরিবর্তনের পাশাপাশি, বয়ঃসন্ধির সময় মেয়েদের জ্ঞানীয় এবং মস্তিষ্কের বিকাশ
করতে সচেষ্ট হয়। বয়ঃসন্ধিকালে মস্তিষ্কের উল্লেখযোগ্য পুনর্ব্যবহার হয়, যা সিদ্ধান্ত গ্রহণ, সমস্যা সমাধান এবং মানসিক
নিয়ন্ত্রণকে প্রভাবিত করে। এই সময় কিশোরীদের সমালোচনামূলক চিন্তাভাবনা করার দক্ষতা এবং জটিল পরিস্থিতি বিশ্লেষণ
করার ক্ষমতার উন্নতি লাভ করে।
সামাজিক সম্পর্ক উন্নয়ন বয়ঃসন্ধি এমন একটি সময় যখন সামাজিক সম্পর্ক ক্রমশ গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে। মেয়েরা ঘনিষ্ঠ বন্ধুত্বের
সন্ধান করে। তাছাড়া রোমান্টিকতার প্রতি ব্যাপক আগ্রহ তৈরি হয়। সে তার খুব কাছের কিছু লোক বাছায় করে নেয়। কেউ কেউ
খুব লাজুক হয়ে থাকে। তাই অন্যদের সাথে কথায় বলে না সেক্ষেত্রে তার সাথে সমাজের বা পরিবারের অনেক দূরত্বই থেকে যায়।
বয়ঃসন্ধিকালে করনীয় কি কি
বয়ঃসন্ধিকালে একজন ছেলে ও একজন মেয়ের কিছু বিষয়ে এলমোস্ট একই বিষয় অনুসরন করা উচিৎ। তবে কিছু ক্ষেত্রে পার্থক্য
রয়েছে আর সেই সব বিষয়গুলো আমরা এখন আলোচনা করতে যাচ্ছি। বয়ঃসন্ধি কালকে বুঝতে হবে বয়ঃসন্ধি যেহেতু একজন
মানুষের বিকাশের একটা ধাপ তাই নতুন নতুন পুরিবর্তন আসবে সেটাই স্বাভাবিক। (বয়ঃসন্ধিকালে পরিবর্তন)
তাই ছেলে বা মেয়ের আগে জানতে হবে তার এই যে শারীরিক বা মানসিক পরিবর্তন তা হলো বয়ঃসন্ধি কাল। আর যখন সে আগে
থেকেই বুঝতে পারবে যে এই সব পরিবর্তন খুব স্বাভাবিক তখন সে বিব্রতবোধ করবে না এবং ঘাবড়ে যাবে না। তাই একজন ছেলের
বা মেয়ের প্রধমেই বয়ঃসন্ধি কালকে জানতে হবে বুঝতে হবে। আর এই জানাবোঝা করার পরিবার, আপনজন, শিক্ষক, বই সহ
নানা মাধ্যম থেকে পড়তে হবে এবং জানতে হবে।
বয়ঃসন্ধির সময় শারীরিক পরিবর্তনকে স্বাভাবিক ভাবা
বয়ঃসন্ধির সময় ছেলে ও মেয়েদের শারীরিক পরিবর্তন হয়ে থাকে। যেমন, ছেলেদের দাড়ি,গোফ গজানো, বগলে চুল ওঠা, কন্ঠস্বর
ভার হয়ে যাওয়া এবং মেয়েদের ক্ষেত্রে স্তন বৃদ্ধি পাওয়া, পিউবিক চুলের বৃদ্ধি হওয়া ইত্যাদি। তাই কিশোর কিশোরীদের এটা বুঝতে
হবে যে এই পরিবর্তন গুলো খুব স্বাভাবিক। এই পরিবর্তনগুলো সবার ক্ষেত্রেই হয়ে থাকে। (বয়ঃসন্ধিকালে পরিবর্তন)
আবেগগত এবং মনস্তাত্ত্বিক পরিবর্তন
বয়ঃসন্ধির এই সময়টাতে কিশোর কিশোরীর আবেগের পরিবর্তন হয়ে থাকে। কখনও সামান্য কারনেই রাগ উঠে, কোন একটা কিছু
না পেলে প্রচন্ড জেদ হয়, অনেক বেশী আকাশ-কুসুম কল্পনার জগতে থাকা, উচ্চতর আকাঙ্খা করা , সামান্য করনে দুঃখ
বোধ করা ইত্যাদি নানা আবেগ ও মনস্তাত্ত্বিক পরিবর্তন হতে পারে। কিশোর কিশোরী বয়সে যে এই পরিবর্তন গুলো হতেই পারে।
আর সেই জন্য তোমরা যারা কিশোর কিশোরী আছ তাদেরকে বুঝতে হবে যে আমি যে রাগ করছি বা আমি যে জেদ করছি তা
আমার বয়ঃসন্ধি সময়কালের জন্য। তাই তোমরা যখন নিজের মেজাজ ও আবেগ এর নিয়ন্ত্র হারিয়ে ফেলবে তখন মাথা ঠান্ডা করবে কেননা বয়ঃসন্ধি কালের পরে তুমি আর এমন অল্পতেই ক্ষেপে যাবে না।
স্বাস্থ্যকর অভ্যাস গড়ে তোলা বয়ঃসন্ধির সময় কিশোর-কিশোরীদের স্বাস্থ্যকর অভ্যাস গড়ে তোলা উচিত যা তাদের সামগ্রিক
সুস্থতায় অবদান রাখবে। অভ্যাস গুলোর মধ্যে রয়েছে সুষম খাদ্য বজায় রাখা, নিয়মিত ব্যায়াম করা এবং পর্যাপ্ত ঘুমানো ইত্যাদি।
এই অভ্যাসগুলিকে কিশোর- কিশোরীর দৈনন্দিন রুটিনে অন্তর্ভুক্ত করলে, তারা তাদের শারীরিক এবং মানসিক স্বাস্থ্যকে সবসময়
ভাল রাখতে পারবে।
আত্মবিশ্বাস এবং আত্মসম্মান তৈরি করা
বয়ঃসন্ধির সময় কারো কারো কখনও কখনও আত্ম-সচেতনতা এবং আত্ম-সম্মান কমতেও পারে। কিশোর-কিশোরীদের উচিত
তাদের বিবেক বুদ্ধি খাটিয়ে সবসময় সঠিক কাজটি করা। যেন পরিবার ও আশেপাশের মানুষজন তার কাজের জন্য
সম্মান করে। নিজের প্রতিটা কাজ ভেবে চিন্তে করা। (বয়ঃসন্ধিকালে পরিবর্তন)
হুটহাট করে একটা কাজ করে ফেললাম পরে দেখলাম এই কাজটি করা ভুল হয়েছিল এবং এটা আমার জন্য অনেক ক্ষতি ও
লজ্জাজনক তাহলে কিন্তু নিজের আত্মসম্মান নষ্ট হলো এবং সেই সাথে নিজের আত্মবিশ্বাসও কমে গেল নিজের প্রতি।
তাই নিজের আত্মবিশ্বাস ও আত্মসম্মান এর প্রতি সজাগ হতে হবে। (বয়ঃসন্ধিকালে পরিবর্তন)
ভালো সম্পর্ক বজায় রাখা
বয়ঃসন্ধির সময়, পরিবার, বন্ধুবান্ধব এবং সহকর্মীদের সাথে সম্পর্ক ক্রমশ গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে। কিশোর-কিশোরীদের সম্মান,
বিশ্বাস এবং কার্যকর যোগাযোগের উপর ভিত্তি করে সুস্থ সম্পর্ক বজায় রাখার চেষ্টা করা উচিত। (বয়ঃসন্ধিকালে পরিবর্তন)
অনেকসময় মেজাজ এর কারনে বা নিজের জেদ এর জন্য আমরা কিশোররা অন্যের সাথে বাজে ব্যবহার করে থাকি এবং অন্যের
সাথে কথা না বলা,অভিমান করা,পাশ কাটিয়ে যাওয়াসহ নানা কাজ করে থাকি। কিন্তু হয়ত একটু ভাল ব্যবহার করলে তার ,
অন্যের কথা শুনলে এমন পরিস্থিতি তৈরী হতো না। তাই সকলের সাথে ভাল ব্যবহার রক্ষা করে চলতে হবে।
(বয়ঃসন্ধিকালে পরিবর্তন)
যৌন শিক্ষা এবং দায়িত্ব
বয়ঃসন্ধির সময় কিশোর-কিশোরীর ব্যাপক যৌন শিক্ষা গ্রহণ করা অপরিহার্য। এই সময় যে বিষয়টি প্রত্যক্ষভাবে সবচেয়ে বেশী
প্রভাবিত করে তা হলো যৌনতা। যৌন হরমোন গুলোর পরিবর্তন ও বৃদ্ধি কিশোর- কিশোরীর মাঝে ব্যাপক সাড়া ফেলে ।
আর যে কারনে অনেকে অনৈতিক নানা যৌন অভ্যাসে আসক্ত হয়ে পরে। তাই তাদের কে যৌন শিক্ষা দিতে হবে যেন তারা
তাদের পরিবর্তন গুলো জানার সাথে সাথে এটাও জানে যে তাদের কি করতে হবে এবং কি করা উচিৎ নয়।
(বয়ঃসন্ধিকালে পরিবর্তন)
সমর্থন এবং নির্দেশনা চাওয়া
বয়ঃসন্ধি একটি চ্যালেঞ্জিং সময় এই সময় কিশোর-কিশোরীরা নিজেদের বিভিন্ন অনিশ্চয়তা এবং প্রশ্নের সম্মুখীন হয়ে থাকে।
কিশোর-কিশোরীরা তারা তাদের বিশ্বস্ত প্রাপ্তবয়স্কদের কাছ থেকে সমর্থন এবং নির্দেশনা চেয়ে নিবে। সেই বিশ্বস্ত মানুষটি
হতে পারে পিতামাতা, শিক্ষক বা বড় ভাই বোন । তারা যে পরিবর্তনগুলি অনুভব করছে সে সম্পর্কে খোলামেলা এবং কার্যকর
কথাবার্তা বলতে হবে। না লজ্জা পেয়ে নিজের সমস্যা গুলোকে তাদের সাথে আলোচনা করে সঠিক সমাধান নিয়ে আসতে হবে।
পড়ুনঃ
একাডেমিক এবং ব্যক্তিগত জীবনের ভারসাম্য বয়ঃসন্ধিকালে, কিশোর-কিশোরীরা প্রায়ই নিজেদেরকে ব্যক্তিগত আগ্রহ এবং
শখের সাথে ক্রমবর্ধমান একাডেমিক চাহিদার সাথে ঝাঁপিয়ে পড়ে। তাদের পড়াশোনা এবং তাদের ব্যক্তিগত জীবনের মধ্যে
ভারসাম্য খুঁজে বের করা তাদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সময় ব্যবস্থাপনা, অগ্রাধিকার, এবং বাস্তবসম্মত লক্ষ্য নির্ধারণ
কিশোর-কিশোরীদের একটি সুস্থ ভারসাম্য বজায় রাখতে সাহায্য করে । (বয়ঃসন্ধিকালে পরিবর্তন)
পরামর্শ করে সিদ্ধান্ত নেয়া
কিশোর- কিশো্রীর প্রয়ই যে ভূলটি করে তা হলো হয়ত সহপাঠী বন্ধু বা বান্ধবীর কথা শুনে বা বুদ্ধিতে প্ররোচিত হয়ে নানা ভুল
কাজ করে বসে। তাই কোন কাজ করার সময় প্রথমে নিজে নিজে ভাবতে হবে, আমি যে কাজটি করছি তা কি ঠিক হচ্ছে? আর
সেই জন্য বড়দের পরামর্শ নিতে হবে। মা-বাবা, বড় ভাই -বোন এর পরামর্শ নিয়ে কাজ করতে হবে। (বয়ঃসন্ধিকালে পরিবর্তন)
চাপ সামলানো
বয়ঃসন্ধির সময় একাডেমিক চাপ, সামাজিক চাপ এবং ব্যক্তিগত চ্যালেঞ্জের কারণে মানসিক চাপের মাত্রা বেড়ে যেতে পারে।
তাই কিশোর-কিশোরীদের কার্যকর চাপ সামলানোর কৌশল শেখা উচিত। যেমন শিথিলকরন ব্যায়াম অনুশীলন করা, নানা শখের
কাজ শেখা, পরামর্শদাতার কাছে নিজের সমস্যার কথা খুলে বলা। আর এইভাবে কিশোর- কিশোরীরা তারা তাদের চাপ সামলাতে
পারে।
নিজের স্বাস্থ্যের যত্ন নেয়া
বয়ঃসন্ধির সময়টাতে নিজের স্বাস্থ্যের যত্ন নিতে হবে। লোমকোপ বৃদ্ধির জন্য শরীরে ঘাম হওয়া, মুখে ব্রন হওয়া, মেয়েদের
মাসিক হলে রক্ত পড়া , ইত্যাদি নানা পরিবর্তন দেখা যায়। আর এই পরিবর্তন গুলোর সাথে নিজেকে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে। নিয়মিত গোসল করতে হবে, স্কিন কেয়ার এর জন্য ভাল সাবান এবং ফেইস ওয়াশ ব্যবহার করতে হবে। সের্বপরি ভাল রাখতে নিজেকে যথার্থ ব্যবস্থা নিতে হবে।
(বয়ঃসন্ধিকালে পরিবর্তন)
সুষম খাবার গ্রহণ
বয়ঃসন্ধির সময় যেহেতু শরীরে নানা পরিবর্তন আসে আর সেই পরিবর্তন এর সাথে নিজের দেহেরও পরিবর্তন আসে।
তাই পরিবর্তন এর সময় সুষম খাবার গ্রহণ করতে হবে। শাক-সবজি, মাছ- মাংস, বাদাম, ফল-মূল সহ সকল পুষ্টিকর খাবার গ্রহণ
তে হবে। (বয়ঃসন্ধিকালে পরিবর্তন)
ধর্মীয় বিধি-নিষেধ মেনে চলা
বয়ঃসন্ধির সময়টাতেই ছেলে মেয়েদের বিপরীত লিঙ্গের প্রতি আকর্ষণ বাড়ে। যে কারনে তারা যৌন কামনার বশে যৌন মিলনে
লিপ্ত হতে পারে। আর একমাত্র ধর্মীয় শিক্ষায় পারে এই অপরাধ থেকে মুক্তি দিতে।
কেননা কোন বাধায় যৌন অবিচার থেকে নিজেকে মুক্ত করতে পারে না একমাত্র সৃষ্টিকর্তার ভয় ছাড়া। তাই মহান
আল্লাহতালার নিষেধকে মানবে একমাত্র ধর্মীয় বিধি-নিষেধ পালনের মাধ্যমে। সে জন্য বয়ঃসন্ধি কালে অবশ্যই ধর্মীয় বিধি
নিষেধগুলো পালন করতে হবে। (বয়ঃসন্ধিকালে পরিবর্তন)
বয়ঃসন্ধির সময় অভিভাবকের করনীয়
অভিভাবক এর ভূমিকা সবচেয়ে বেশী । কিশোর কিশোরীদের শারীরিক, মানসিক যে পরিবর্তনগুলো দেখা দিবে এর জন্য তাদেরকে
প্রথমে অবগত করবে তাদে;র মা-বাবা এবং পরিবারের অন্য সদস্য। শুধু মা-বাবা ভাই বোনই নয় অন্যন্য সদস্য চাচা-চাচী,
নানা- নানূ, দাদা- দাদুসহ সকলেরই বয়ঃসন্ধিকালীন ছেলে-মেয়েদের প্রতি সতর্ক ও যত্নবান হতে হবে। (বয়ঃসন্ধিকালে পরিবর্তন)
- বয়ঃসন্ধি সম্পর্কে ছেলে -মেয়েদের জানাতে হবে। আর মা-বাবা এই সম্পর্কে বলবে। অথবা পরিবারে থাকা বড় ভাই বোনরা
বলবে বয়ঃসন্ধির পরিবর্তন সম্পর্কে তাদের জানাতে হবে।
- তাদের সাথে খোলামেলা আলোচনা করতে হবে।
- তাদের খাবার এর প্রতি যত্ন নিতে হবে। কোন খাবার খাবে আর কোন খাবার খাচ্ছে না তা খেয়াল রাখকে হবে।
সুষম খাবার নিশ্চিত করতে হবে। (বয়ঃসন্ধিকালে পরিবর্তন)
- প্রজনন ক্ষমতা লাভ, শরীরে বিভিন্ন পরিবর্তন ইত্যাদি তাদেরকে বুঝাতে হবে।
- বুঝিয়ে-শুনিয়ে, ভাল ব্যবহার করে তাদেরকে ভাল অভ্যাসের জন্য উৎসাহিত করতে হবে।
- যে কোন কাজে বা প্রতিযোগীতায় তারা মনোবল হারাতে পারে। তখন তাদের পাশে দাড়াতে হবে।
- তাদেরকে বার বার উৎসাহ দিতে হবে। (বয়ঃসন্ধিকালে পরিবর্তন)
- কিশোর-কিশোরীরা নিজেদের জন্য গোপনীয়তা আশা করতে পারে। অভিভাবকের উচিৎ তার মূল্যায়ন করা ।
সেই সাথে তারা যেন বেশীক্ষণ একা না থাকে সেই দিকেও খেয়াল রাখতে হবে।
- এই সময়টাতে ছেলে-মেয়েরা হস্তমৈথুন, পর্নোগ্রাফিতে আসক্ত হতে পারে। এই জন্য অভিাবকদের সজাগ হতে হবে।
- তাদেরকে অল্প বয়সে ফোন কিনে দেয়া যাবে না। (বয়ঃসন্ধিকালে পরিবর্তন)
- তারা কার সাথে মিশছে এবং তাদের কিসের প্রতি ইন্টাস্টে তা জাসতে হবে এবং সেই দিকে খেয়াল করত হবে।
যদি ভাল বন্ধু না থাকে সেক্ষেত্রে সুন্দর করে বুঝিয়ে বলতে হবে।
- এই বয়সে খুব বেশী টাকা- পয়সা তাদের হাতে দেয়া যাবে না । মূলত টাকা-পয়সা বেশী হলে নানা বাজে কাজে তারা খরচ করবে।
মাদকাসক্তও হয়ে যেতে পারে। তাই খুববেশী টাকা পয়সা তাদের কে দেয়া যাবে না।
- যখন যা চায় তাই দেয়া উচিৎ নয়। অনেক মা-বাবা বা অভিাভাবকরা এই কাজটা করে। সন্তান যখন যেটা
বায়না করে সেটাই দিয়ে দেয়। এটা করা উচিৎ নয়। (বয়ঃসন্ধিকালে পরিবর্তন)
আপনার প্রতিটা পোস্ট অনেক তথ্য বহুল।