JANA BUJHA

উকুন দূর করার তেল।Best Lice removal oil 2023

উকুন দূর করার তেল এর অভাব নেই বাজারে। কিন্তু এখানে উকুন দূর করার উপায় হিসেবে বেসিক কিছু তেল এর বিষয়ে আমরা আলোচনা করবো। 

উকুন দূর করার তেল

মাথার উকুন হল পরজীবী পোকা যা মাথার ত্বক এবং চুলের খাদে থাকে। এগুলি সরাসরি মাথার সাথে যোগাযোগের মাধ্যমে বা চিরুনি, টুপি বা বালিশের মতো ব্যক্তিগত জিনিস ভাগ করে

 

 

নেওয়ার মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। উকুনের উপদ্রব সাধারণত স্কুল, ডে কেয়ার সেন্টার এবং ঘনিষ্ঠ যোগাযোগের বাড়িতে ঘটে। চুলকানি, লালভাব এবং চুলের খাঁজে নিট (উকুন ডিম) এর উপস্থিতি একটি সংক্রমণের সাধারণ লক্ষণ। এই উকুন দূর করার তেল বিষয়ে এখন আমরা আলোচনা করবো-

Table of Contents

উকুন দূর করার তেল ব্যবহারের উপকারিতা

 

উকুন তেল ঐতিহ্যগত রাসায়নিক চিকিত্সার তুলনায় অনেক সুবিধা প্রদান করে। এখানে কিছু মূল সুবিধা রয়েছে:

 

প্রাকৃতিক এবং নিরাপদ

 

উকুন দূর করার তেল প্রাকৃতিক নানা গাছপালা, লতাপাতা এবং ভেষজ থেকে তৈরী হয়। যে কারণে এই প্রত্যেকটি তেল হচ্ছে নিরাপদ এবং এগুলোতে তেমন কোন রাসায়নিক থাকে না যা বিষাক্ত হবে। তাই অ্যালার্জির সমস্যা বা জ্বালা-পোড়ার সমস্যা হয় না। তাই নিরাপদে ব্যবহার করা যাবে এই প্রাকৃতিক তেল।  

 


কার্যকরী উকুন অপসারন

 

অধিকাংশ উকুন দূর করার তেল যেহেতু প্রাকৃতিক উপাদান থেকে তৈরী হয় সেহেতু এগুলো যেমন নিরাপদ ঠিক তেমনি কার্যকর। এই তেল গুলোর অধিকাংশ তেল উকুনের শ্বাসযন্ত্রের সিস্টেমে প্রবেশ করে এবং তাদের শ্বাসরোধ করে যার ফলে উকুন মারা যায়।

 

 

মাথার ত্বক এবং চুলের পুষ্টি নিশ্চিত করে

 

প্রাকৃতিক উপাদান এর কারনে মাথার ত্বক এবং চুল হাইড্রেট থাকে। শুষ্কতা কমাতে এবং মাথার ত্বকে ক্ষত দূর করতে এই তেল ভালি কাজ করে। 

 

 

নূন্যতম পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া

 

এসব তেলে নূন্যতম পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া থাকে। যদি সঠিক নির্দেশ অনুসারে তেল ব্যবহার করা হয় তাতে চুলের বা মাথার ত্বকের তেমন কোন ক্ষতি হয় না। তাই এটা অত্যন্ত কার্যকর এবং ভাল হয় মাথার ত্বকের জন্য।

উকুন দূর করার তেল হিসাবে টি- ট্রি ওয়েল

 

উকুন দূর করার তেল- চা গাছের তেল কেন উকুন মারতে পারে ?  চা গাছের তেলের প্রধান সক্রিয় উপাদান হল  terpinen-4-ol , যা অত্যন্ত শক্তিশালী অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল হিসেব কাজ করে।  এই তেল মাথায় প্রয়োগ করলে উকুনের শ্বাস বন্ধ হয়ে যায়। টি-ট্রি ওয়েল উকুনকে শ্বাস নিতে বাঁধা প্রদান করে। যে কারণে উকুন অক্সিজেন নিতে পারে না এবং মারা যায়।

 

 

চায়ের তেল এর সুগন্ধ উকুন সহ্য করতে পারে না। মাথার ত্বকে উকুনকে হাটতে এবং চলাফেরা করতে প্রতিবন্ধকতা তৈরী করে। এই তেল উকুনের চারপাশে একটা বলয় তৈরী করে ফেলে। 

চায়ের তেলে অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল বৈশিষ্ট রয়েছে, যা মাথার ত্বকে  উকুনের কামড়ের ফলে যে প্রদাহ ও চুলকানি হয় তা কমাতে পারে। 

চা গাছের তেল সপ্তাহে ২ থেকে ৩ বার ব্যবহার করলেই আশানুরুপ ফল পাওয়া যায়। তবে আপনার উকুন আক্রমন এর উপর ভিত্তি করে চিকিৎসক এই তেল মাথায় দেয়ার পরামর্শ দিবেন। 

 

নারিকেল তেল

উকুন দূর করার তেল – নারিকেল তেল যেভাবে উকুনকে ধ্বংষ করে। 

 

উকুনের শ্বাসরোধ করা 

 

নারকেল তেলের উচ্চ সান্দ্রতা রয়েছে আর এই সান্দ্রতার জন্য মাথার উকুনের দম বন্ধ হয়ে যাওয়ার উপক্রম হয়। চুলে তেল প্রয়োগ এর ফলে একটি পুরো তৈলাক্ত স্তর তৈরি হয় যা উকুনতে আবৃত করে ফেলে এবং চলাফেরা করতে ও শ্বাস নিতে বাধা প্রদান করে। তেল উকুনের শ্বস-প্রশ্বাস এর যে ছিদ্র রয়েছে তা বন্ধ করে দেয়। যার ফলে শেষ অব্দি উকুন মারা যায়। 

 

 

চলাফেরায় বাধা দেয়া- 

তেলের ঘন সামঞ্জস্য বা বন্ধন এর জন্য উকুন গতিশীল থেকে স্থিতিশীল হয়ে যায়। উকুন দূর করার তেল মাথার ত্বকে তেলের আবরণ হয় তা ঘন হওয়ার কারনে উকুনের চলতে কষ্ট হয়। তাছাড়া চুলের গোড়ায় বা চুলে আটকে থাকার ক্ষমতাকেও কমিয়ে দেয়।

উকুনের প্রজননে বাঁধা দেয় নারিকেল তেল

উকুন যে ডিম পারে , যা নিট নামে পরিচিত। এই ডিম বা নিট চুলের খাদের সাথে শক্তভাবে আটকে থাকে। নারকেল তেল এর তৈলাক্ত প্রকৃতি ডিম এবং চুলের মধ্যে বন্ধনকে দুর্বল করে দেয়। আর যখন চিড়ুনী করা হয় তখন সব নিট চিরুনির সাথে চলে আসে। ফলে উকুন এর বংশবৃদ্ধি ধ্বংস করতে নারিকেল তেল এর অবদান রয়েছে। 

চুল এবং মাথার ত্বকের পুষ্টি: 

 

নারকেল তেল চুল এবং মাথার ত্বকের জন্য খুবই উপকারী।এটিতে ময়শ্চারাইজিং বৈশিষ্ট্য রয়েছে যা শুষ্কতা মোকাবেলা করতে এবং উকুনের দ্বারা সৃষ্ট চুলকানি কমাতে  সহায়তা করে। নারকেল তেল চুলের শ্যাফটে প্রবেশ করতে পারে আর যে কারনে সঠিকভাবে  পুষ্টি প্রদান করে এবং চুলের সামগ্রিক স্বাস্থ্যের উন্নতি করতে পারে। 

 

 

উকুন দূর করার জন্য যেভাবে নারিকেল তেল প্রয়োগ করা উচিৎ 

  • উচ্চ মানের নারিকেল তেল নিতে হবে। জৈব, কোল্ড প্রেস এবং এক্সট্রা ভার্জিন তেল নিলে ভাল ফল পাওয়া যাবে। 

  • হালকা তেলটি গরম করে নিতে হবে। 

  • চুলের গোড়া থেকে এবং মাথার ত্বকপেুরোটাতে তেল ভাল করে লাগিয়ে দিতে হবে। 

  • ভাল উকুননাশক চিড়ুনী দিয়ে কিছুক্ষণ পর থেকে আচড়িয়ে নিতে হবে। 

  • ভাল করে তেল দিয়ে সারারাত রেখে দিলে ভাল ফল আশা করা যায়। 

  • পরদিন মাথা উকুননাশক শ্যাম্পু বা নরমাল শ্যাম্পু দিয়ে ভাল  করে ধুয়ে নিতে হবে 

 

উকুন দূর করার তেল হিসেবে ল্যাভেন্ডার তেল

উকুন দূর করার তেল এর অন্যান্য তেলেরমত ল্যাভেন্ডার তেল অন্যতম। এর কারণ হল এর চমৎকার ঘ্রাণ এবং থেরাপেটিক বৈশিষ্ট্য। আর সেই সাথে উকুন দূর করার কার্যকরি শক্তি।

 

 

লিনালুল এবং লিনাইল অ্যাসিটেটের

ল্যাভেন্ডার তেলে লিনালুল এবং লিনাইল অ্যাসিটেটের মতো যৌগ রয়েছে, যা কীটনাশক হিসেবে কাজ করে।  এসব যৌগ উকুনের জন্য অনেক বিষাক্ত, যা উকুন এর  স্নায়ুতন্ত্রের ক্ষতি করে এবং আস্তে

 

আস্তে মৃত্যুর দিকে নিয়ে যায়। ল্যাভেন্ডার তেলের শক্তিশালী ঘ্রাণ উকুনদের জন্য এক অসহ্য ব্যাপার। এছাড়া লিনালুল এবং লিনাইল অ্যাসিটেটের কার্যকারিতার জন্য উকুনের বেঁচে থাাকা প্রায় অসম্ভব। 

 

 

প্রতিরোধক হিসেবে কাজ করেঃ

ল্যাভেন্ডার তেলের সুবাস উকুন তাড়ানোর জন্য যথেষ্ট। মাথার ত্বক এবং চুলে প্রয়োগ করা হলে, ল্যাভেন্ডার তেলের শক্তিশালী এবং মনোরম সুগন্ধ একটি প্রতিরোধক হিসাবে কাজ করে, যার ফলে চুলে উকুন হওয়ার সম্ভাবনা কম থাকে। এই উকুন দূর করার তেল প্রভাব পুনঃসংক্রমণ রোধ করতে সাহায্য করে এবং উকুনের বিরুদ্ধে একটি প্রতিরক্ষামূলক বাধা প্রদান করে।

 

 

 

প্রশান্তিদায়ক এবং শান্ত করার বৈশিষ্ট্য:

 ল্যাভেন্ডার তেলের প্রশান্তিদায়ক এবং শান্ত রাখার বৈশিষ্ট্য বিদ্যমান।  যা উকুন উপদ্রবের সাথে সম্পর্কিত অস্বস্তি এবং চুলকানি কমাতে  সহায্য করে। এটি মাথার ত্বকে একটি মৃদু এবং প্রশান্তির  প্রভাব ফেলে, উকুনের কামড়ের ফলে যে  প্রদাহ হয়  এবং জ্বালা হয় তা কমিয়ে শান্ত করে। 

উকুন ডিমের উপর সম্ভাব্য প্রভাব (নিট): 

উকুন দূর করার তেল, ল্যাভেন্ডার তেল প্রথমত প্রাপ্তবয়স্ক উকুনকে আক্রমন করে, কিন্তু  কিছু প্রমাণ রয়েছে যে এই তেল উকুনের ডিম বা নিটের ধ্বংস করতেও কাজ  করে। কিছু গবেষণায় দেখা গেছে যে ল্যাভেন্ডার তেল উকুনের ডিম ফুটতে বাধা দিতে পারে, তাদের কার্যক্ষমতা হ্রাস করতে পারে এবং নতুন উকুনগুলির বিকাশ লাভ বন্ধ করতে পারে।

 

নিরাপদ এবং প্রাকৃতিক বিকল্প:

 উকুন চিকিত্সার জন্য উকুন দূর করার তেল ল্যাভেন্ডার ব্যবহারের একটি সুবিধা হল এটি রাসায়নিক ভিত্তিক পণ্যগুলির মধ্যে একটি নিরাপদ এবং প্রাকৃতিক বিকল্প। যারা প্রাকৃতিক প্রতিকার পছন্দ করেন বা সংবেদনশীল ত্বকের অধিকারী তাদের জন্য এটি বিশেষভাবে উপকারী। তাই পুরো মাথায়  ভাল করে তেল লাগিয়ে নিতে হবে। আর যেহেতু নিরাপদ তাই যদি কম বেশীও হয়ে যায় তাতেও খুব একটা সমস্যা নেই।

 

ল্যাভেন্ডার তেল যে উপায়ে মাথার ‍উকুন মেরে ফেলতে পারেঃ

শ্বাসরোধ: 

ল্যাভেন্ডার তেলের একটি ঘনত্ব ভাব রয়েছে যা  উকুনের শ্বাসরোধ করতে পারে। মাথার ত্বক এবং চুলে তেল ব্যবহার এর পর, এটি একটি শারীরিক প্রতিবন্ধকতা তৈরি করে যা উকুনকে ঢেকে রাখে এবং তাদের স্পাইরাকল (শ্বাসপ্রশ্বাসের খোলা) বন্ধ করে দেয়। এটি উকুনকে অক্সিজেন থেকে বঞ্চিত করে শ্বাসরোধ করে, এবং অবশেষে উকুনকে সিশ্চিতভাবে  মৃত্যুর দিকে নিয়ে যায়।

 

নিউরোটক্সিক প্রভাব: 

ল্যাভেন্ডার তেলে প্রাকৃতিক যৌগ রয়েছে যেমন লিনালুল এবং লিনাইল অ্যাসিটেট, যার নিউরোটক্সিক বৈশিষ্ট্য রয়েছে। এই যৌগগুলি উকুনগুলির স্নায়ুতন্ত্রকে ব্যাহত করতে পারে, তাদের নড়াচড়া, খাওয়ানো এবং পুনরউঃপাদন করার ক্ষমতাতে বাঁধা দিতে পারে। ফলস্বরূপ, উকুনগুলি অক্ষম হয়ে যায় এবং শেষ পর্যন্ত মারা যায়।

প্রতিরোধক বৈশিষ্ট্য:

 ল্যাভেন্ডার তেলের শক্তিশালী এবং স্বতন্ত্র গন্ধ উকুন নিরোধক হিসাবে কাজ করে। উকুন এই সুগন্ধ দ্বারা তাড়ানো হয়, যার ফলে তাদের মাথার ত্বকে হামাগুড়ি দেওয়ার এবং চুলে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা কম থাকে। এই প্রতিরোধক প্রভাব উকুন উপদ্রব প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে এবং পুনরায় সংক্রমণের বিরুদ্ধে চলমান সুরক্ষা প্রদান করতে পারে।

প্রজননের ব্যাঘাত:

 ল্যাভেন্ডার তেল মাথার উকুনের প্রজননেও ব্যাঘাত করতে পারে। এটি পরামর্শ দেওয়া হয়েছে যে ল্যাভেন্ডার তেল উকুন ডিম (নিট) এর হ্যাচিং প্রতিরোধ করতে পারে এবং তাদের কার্যকারিতা হ্রাস করতে পারে। ডিম ফুটতে বাধা দিয়ে বা নিটের  বিকাশ ব্যাহত করে, ল্যাভেন্ডার তেল উকুনের জীবনচক্র ভাঙতে সাহায্য করে এবং তাদের উৎপাদন কমিয়ে দেয়।

 উকুন দূর করার উপায় হিসেবে ইউক্যালিপটাস তেল 

 

ইউক্যালিপটাস তেল ইউক্যালিপটাস গাছের পাতা থেকে তৈরী করা হয়, যা বৈজ্ঞানিকভাবে ইউক্যালিপটাস গ্লোবুলাস নামে পরিচিত। এটি তার মনোরম সুবাস এবং ঔষধি বৈশিষ্ট্যের জন্য ব্যাপকভাবে স্বীকৃত। তেলটিতে ইউক্যালিপটাসসহ আরও কিছু যৌগ রয়েছে যে কারনে তেলটি সম্পূর্ণ আলাদা এবং ইউনিক। 

ইউক্যালিপটাস তেলে যে যে  বৈশিষ্ট্য থাকে

ইউক্যালিপটাস তেলে অ্যান্টিসেপটিক, অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল, অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি এবং কীটনাশক বৈশিষ্ট্য রয়েছে। এই বৈশিষ্ট্যগুলির জন্য উকুন দূর করতে এই তেল কার্যকর হয় ব্যাপকভাবে। অন্যান্য তেলরমত এই তেল ব্যাপকভাবে কাজ করে উকুন নির্মূলে। 

কিভাবে ইউক্যালিপটাস তেল উকুন মেরে ফেলে?

ইউক্যালিপটাস তেল তার শক্তিশালী কীটনাশক বৈশিষ্ট্যের মাধ্যমে উকুনকে মেরে ফেলে। অ্যান্টিসেপটিক, অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল, অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি ইত্যাদি যৌগ থাকার কারনে তা মূলত উকুনেকে শ্বাসরুদ্ধ করে এবং এর ডিমগুলোকে ধ্বংস করে। অবশেষে তাদের মৃত্যু হয়।

ইউক্যালিপটাস তেলের শক্তিশালী সুগন্ধ উকুনকে তাড়ায়। মাথায় যেন তারা টিকতে না পারে সে বিষয়টি নিশ্চিত করে। মানুষের জন্য যেটি খুব ভাল লাগার বিষয় উকুনের জন্য তা অত্যন্ত অসহ্য ও যন্ত্রনাদায়ক। 

 

অন্যান্য  তেলেরমতই এটি শ্বাসরুদ্ধ করা, উকুনকে হাটতে না দেয়া, বাইরে একটা আবরন তৈরী করা ইত্যাদি নানা উপায়ে উকুনের বিনাশ করে ইউক্যালিপটাস।

 

কিভাবে ইউক্যালিপটাস তেল ব্যবহার করতে হবে

 

উকুন চিকিৎসার জন্য ইউক্যালিপটাস তেল ব্যবহার করার জন্য যথাযথ প্রয়োগ এবং সুরক্ষা সতর্কতা মেনে চলা প্রয়োজন। কীভাবে কার্যকরভাবে ইউক্যালিপটাস তেল ব্যবহার করবেন সে সম্পর্কে এখানে একটি ধাপে ধাপে নির্দেশিকা রয়েছে:

 

ইউক্যালিপটাস তেল পাতলা করে নিতে হবেঃ

নারিকেল তেল বা ওলিভওয়েল এর সাথে কয়েকফোঁটা ইউক্যালিপটাস তেল মিশিয়ে তেলকে পাতলা করে নিতে হবে। পাতরা তেল মাথার ত্বকের সাথে ভাল করে মিশে যাবে। সেই সাথে ত্বকের  জ্বালা-পোড়া দূর করবে ।

Read More… শিশুর ওজন কম হলে করনীয় ও কম জন্ম ওজনের শিশু

ত্বকের এবং চুলের গোড়ায় তেল পৌঁছে দিতে হবেঃ

সাধারণত মাথার ত্বকে বা চুলের গোড়ায়ই উকুন বাস করে। আর তাই একদম ভেতর থেকে তেল ব্যবহার করতে হবে। চুলের গোড় ভাল করে ভিজিয়ে তেল লাগাতে হবে। সাধারনত উকুন মাথার তালুতে বেশী থাকে। তাই তালু এবং এর আশেপাশে ভাল করে তেল লাগাতে হবে যেন উকুনের বংশ হয়ং নির্বংশ। 

 

 

৩০ মিনিট রেখে ধুয়ে ফেলতে পারেন

কারও কারও মতে তেল লাগানোর ৩০ মিরিট পর মাধা ধুয়ে ফেলা ভাল। তাহলে ভাল ফলাফল পাওয়া যাবে। আবার কেউ কেউ পরামর্শ দেন যে এই তেল লাগানোর পর সারারাত রেখে দিলে ভাল ফলাফল পাওয়া যাবে। আর সকালে উঠে মাথা শ্যাম্পু করে ধুয়ে নিতে হবে। 

 

 

ধুয়া অবস্থায় চিরুনি করা

তেল ব্যবহারের পর যখন আপনি মাথা ধুয়ে নিবেন তখন চিরুনি করতে হবে। ভিজা চুলে চিরুনি করলে আপনার মাথা থেকে দূর হবে উকুন । এমনকি আপনার মাথা থেকে উকুনের যে ডিম আছে তাও দূর হয়ে যাবে অনায়াসে। উকুন দূর করার তেল তাই ভেজা চুলে চিরুনি করুন। 

 

ইউক্যালিপটাস তেল ব্যবহার করার কিছু সতর্কতাঃ

 

এই তেল ব্যবহারের ক্ষেত্রে আপনার কিছু সতর্কতা মেনে চলা উচিৎ

  • আপনার অ্যালার্জির সমস্যা আছে কি না তা ভাল করে চেক করে নিন। যদি আপনার তেল দিলে অ্যালার্জি দেখা দেয় তবে খুব সতর্কতার সাথে তেল দিতে হবে। 

 

  • অনেকের আছে যে মাথায় বেশিক্ষণ তেল দিয়ে রাখলে সর্দি লেগে যায়। তাই এই বিষয়টি আগে নিশ্চিত হন। আপনার মাথায় তেল বেশীক্ষণ লাগিয়ে রাখলে যদি সর্দি লেগে যায় তাহলে বেশীক্ষণ রাখা উচিৎ হবে না । 

  • এই তেল অন্য তেলের সাথে মিশিয়ে হালকা করে নিন। 

  • এই তেলের কিছু পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দিতে পারে তাই শিশু বা ছোট বাচ্চাদের ক্ষেত্রে অত্যন্ত সতর্কতার সাথে ব্যবহার করতে হবে। বিশেষ করে বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে কাজ করতে হবে। 

  • চোখে যেন না যায় সে দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। 

উকুন দূর করার তেল হিসাবে ব্যবহার করা যায় ওলিভ ওয়েল

উকুন দূর করা বা মারার জন্য যেসব তেল ব্যবহার করা হয় তার মধ্যে অন্যতম একটি হল ওলিভ ওয়েল। ওলিভ ওয়েল নানা ভাবে উকুনকে দমন করে।

  •   উকুনের শ্বাসরুদ্ধ করে

  • উকুনের চলাচলকে বাধাগ্রস্ত করে। 

  • উকুনের চারপাশে আবরন তৈরী করে

  • উকুনের নিট বা ডিম গুলোকে হালকা ভাবে চুলের সাথে আটকে রাখে। তাই চিরুনি করার সাথে সাথে নিটগুলো ঝরে পড়ে। 

আসলে শুধু  এই তেল নয় অন্যান্য তেলও ঠিক একই ভাবে এই কাজ গুলো করার মাধ্যমে উকুনকে মেরে ফেলে । তাই দেখা যাবে বারবার একই কথা বলা হচ্ছে। কিন্তু প্রতিটি তেল মূলত এইভাবেই উকুন নির্মূল করে। 

 

 

উকুন দূর করার তেল হিসাবে ব্যবহার করা যায় নিম তেল

উকুন দূর করার তেল হিসেবে নিম তেল খুব কার্যকর। এই তেল সর্বত্র পাওয়া যায়। এই তেলের যেসব উপাদানের কারনে উকুন মারা যায় তা আলোচনা করা হল-

 

  • নিম তেলের প্রাথমিক কাযৃকর উপাদান হলো Azadirachtin । এটি উকুনের খাদ্য গ্রহন এবং বৃদ্ধি প্রক্রিয়া ব্যাহত করে। আর শেষ অব্দি উকুনকে মেরে ফেলে। 

  • নিম্বিডিনঃ নিম্বিডিন এর  অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল এবং অ্যান্টিসেপটিক বৈশিষ্ট্যের জন্য উকুন নিধনে কার্যকরি। সাধারণত উকুন আক্রমনের ফলে মাথায় যে প্রদাহ ও ঘামাচি হয় তা দূর করতে মূলত নিম্বিন ব্যবহার করা হয়।

  • নিমবিন হলো আর একটি প্রধান যৌগ উপাদান। এটি কীটনাশক বৈশিষ্ট্যের অধিকারী এবং এটি ছত্রাকবিরোধী হিসেবে কাজ করে। এটি প্রদাহ বিরোধীও বটে। তাই নিম তেলর নিমবিন নানা ভাবে আপনার মাথার উকুনকে মারতে কার্যকর। 

  • উকুনকে মাথায় না আসার জন্য প্রাকৃতিক প্রতিরোধক হিসেবে কাজ করে স্যালানিন। স্যালানিন এর জন্য নিম তেল উকুন প্রতিরোধক বৈশিষ্ট্যের অধিকারী। 

  • নিমের তেলে প্রচুর পরিমান ফ্যাটি অ্যাসিড থাকে, যেমন ওলিক অ্যাসিড এবং লিনোলিক অ্যাসিড যা উকুনের দম বন্ধ করে দেয়।

  • অন্যান্য তেলের মতই নিম তেল ব্যবহার করতে হবে। প্রথমে তেলটি একটি পাত্রে নিয়ে কিছুটা পাতলা করে নিতে হবে। নারিকেল বা ওলিভ ওয়েল এর সাথে ১ঃ১০ অনুপাতে তেল মিশিয়ে নিন। এরপর  তা মাথায় লাগাতে হবে একদম চুলের গোড়া থেকে আগা পর্যন্ত। তেল যেন ভাল ভাবে মাথায় লাগে তা নিশ্চিত করতে হবে। সারা রেখে দিয়ে পর দিন শ্যাম্পু করে মাথা ধুয়ে নিতে হবে। 

উকুন দূর করার তেল হিসাবে ব্যবহার করা যায় নিম তেল

 

উকুন দূর করার তেল- রোজমেরি তেলটি রোজমারিনাস অফিসিনালিস নামক উদ্ভিদ এর পাতা থেকে তৈরী করা হয়। সাথারণত এই গাছ ভূমধ্যসাগরের আশেপাশে ব্যাপকভাবে পাওয়া যায়। রোজমেরির অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল, অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট বৈশিষ্ট্য রয়েছে।

যে কারনে তেলটি শুধু উকুনের চিকিৎসাই নয় সেই সাথে অন্যান্য কাজেও ব্যবহার করা হয়। যা আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য খুবই ভাল। এই তেল ভিটামিন এ, সি, এবং বি৬, ক্যালসিয়াম, আয়রন এবং 

 

ম্যাগনেসিয়াম এর  মতো প্রয়োজনীয় পুষ্টিগুনে সমৃদ্ধ।  যে কারনেই এই তেল খুবই উপারী একটা তেল। উকুন নিধন নয় চুল পড়া, চুলের স্বাস্থ্য ঠিক রাতার জন্যও এই তেল সমানভাবে সমাদৃত। 

 

Read more……..

কম্পিউটার ব্যবহারকারীদের চোখের যত্ন ৬ টি উপায়!
6 ways to care for the eyes of computer users

 

উকুন দূর করার জন্য যেসব উপাদান এতে রযেছে এবং যেভাবে কাজ করে

  •  Rosmarinus Officinalis (Rosemary) পাতার নির্যাস-  এটি হলো এই তেলের প্রধান উপাদান। এটি অন্যান্য উপাদানের সাথে মেশার পর খুব ভালভাবে কাজ করে উকুন নিধনে। 

 

  • কর্পুরঃ আমাদরে নানা প্রযোজনে কর্পূর ব্যবহার করা লাগে। কর্পূর কীটনাশক হিসেবে কাজ করে। কর্পূর মূলত একটি টেরপেন যৌগ। কর্পূর উকুনের বিরুদ্ধে একটি শক্তিশালী প্রতিরোধক হিসেবে কাজ করে। উকুনের প্রভাব দূর করতে এবং প্রদাহ থেকে মুক্তি পেতে কর্পূর খুব কার্যকর হয়। 

  • অন্য আর একটি উপাদান হলো সিনিওল যা  ইউক্যালিপটল নামেও পরিচিত। এটি  রোজমেরি তেলের খুব সক্রিয় উপাদান। এটিতে শক্তিশালী অ্যান্টিসেপটিক এবং অ্যান্টিফাঙ্গাল আছে, যা মাথার ত্বকে আঁচড়ের কারণে ঘটতে পারে এমন গৌণ সংক্রমণ প্রতিরোধে সহায়তা করে। 

 

  • রোজমেরি তেলে পাওয়া যায় আলফা-পাইনিন।  এটিতে কীটনাশক বৈশিষ্ট্য রয়েছে যা বিশেষভাবে উকুনকে ধ্বংস করে। এই উপাদানটি উকুনদের শ্বাসতন্ত্রকে ব্যাহত করতে সাহায্য করে, শেষ পর্যন্ত তাদের মৃত্যুর দিকে নিয়ে যায়।

  • ভ্যারভেনন হল রোজমেরি তেলে উপস্থিত একটি কেটোন যৌগ। এটি সক্রিয়ভাবে  প্রাকৃতিক কীটনাশক হিসাবে কাজ করে। এটি উকুনের স্নায়ুতন্ত্রকে কাজ করতে দেয় না। যে কারনে শেষে মৃত্যু ঘটায়। 

  • সাধারণত অন্যান্য তেলের মতই রোজমেরি তেল উকুনের শ্বাসরোধ করে হত্যা করে। 

  • উকুন যেন আক্রমন না করতে পারে সে জন্য একটা প্রতিরোধ ব্যবস্থা গড়ে তুলে। তের উকুনের চারপাশে একটা বলয় তৈরী করে ফেলে, যে কারণে উকুন চলতে পারে না। 

  • এই উকুন দূর করার তেল উকুনের খাদ্য গ্রহনে ব্যাঘাত ঘটায়। রোজমেরির ঘ্রাণে উকুন অসহ্য অনুভব করে। যে কারনে তার খেতে ইচ্ছা হয় না এবং ভাল ভাবে খেতেও পারে না।

  • এই তেল ব্যবহার করার জন্য আপনি অন্যান্য তেলের মত সারারাত মাথায় দিয়ে রাখতে পারেন এবং সকালে ধুয়ে নিতে পারেন। কিচু দিন টানা ব্যবহার করে দেখা ভাল। 

  • সপ্তাহে ৩/৪ বার এর বেশী ব্যবহার করা উচিৎ হবে না। 

  • এই তেল ব্যবহার এর ক্ষেত্রে কিছু সতর্কতাও আপনাকে নিতে হবে। যেমন, যদি আপনার অ্যালার্জির সমস্যা থাকে তবে খুব সতর্ক থাকতে হবে। 

  • শিশুদের ক্ষেত্রে আপনাকে আরও সতর্ক থাকতে হবে। যেন চোখে তেল না চরে যায়। 

 
 
উকুন দূর করার তেলের একটা ভিডিও দেযা হল। যা আপনি ঘরেই বানাতে পারবেন-
 

 

 

 

 

Leave a Comment