আমাদের সকলেরই হার্নিয়ার
লক্ষণ, কারণ, জটিলতা, প্রতিকার, চিকিৎসা সম্পর্কে জানা ও অবগত হওয়া উচিৎ কেননা এটা
আমাদের মাঝে একটা খুব কমন সমস্যা।
হার্নিয়া আমাদের
দেশে সচরাচর দেখা যায়, এটি এমন একটি সমস্যা। সাধারণতঃ শরীরে কিছু অংশ বাহিরের দিকে
বের হয়ে যাওয়াকে হার্নিয়া বলা হয়। প্রাথমিক অবস্থায় কেবলমাত্র গোড়ার দিকে সামান্য
ফোলা থাকে।
পরবর্তীতে ফোলা বাড়তে বাড়তে স্ক্রুটামে ঢুকে যায়। কুচকি ও অন্ডথলি
(Scrotum) অস্বাভাবিকভাবে ফোলে এবং ব্যথা থাকতে পারে। আমাদের পেটের ভিতরে থাকে খাদ্যনালী
যা মুখ থেকে পায়ু পর্যন্ত বিস্তৃত।
হার্নিয়ার ক্ষেত্রে পেটের দেয়ালের কিছু দূর্বল
অংশ দিয়ে ক্ষুদ্রান্তের অংশ বিশেষ ক্রুটামে যায় । তখন এ জায়গাটা ফুলে যায় । আর
এই ফুলে যাওয়াকেই চিকিৎসা বিজ্ঞানের ভাষায় নাম দেয়া হয়েছে হার্নিয়া।
হার্নিয়া রোগের কারণ :
আমাদের তলপেট ও পেটের
কিছু অংশ আছে যেগুলি পার্শ্ববর্তী অংশ থেকে অপেক্ষাকৃত দূর্বল। কোন কোন লোকের ক্ষেত্রে
জন্মগতভাবে এ অংশগুলো অন্যান্যদের তুলনায় অপেক্ষাকৃত বেশী দূর্বল থাকে।
পাশাপাশি পেটের
ভিতরে চাপ যদি বেশী হয়। যেমন-পুরানো কাশি, হাঁচি, কোষ্টকাঠিন্য, প্রস্রাব আটকে যাওয়া,
যেমন প্রোষ্টেটগ্রন্থি বড় হয়ে গেলে ইত্যাদি অবস্থায় ক্ষুদ্রান্তের কিছু অংশ দূর্বল
অংশগুলি দিয়ে বেরিয়ে আসে। এতে হার্নিয়া হয় ।
পুরুষদের হার্নিয়া
দেহের নানা জায়গায়
হার্নিয়া হতে পারে। উদর ও উরুর সংযোগ স্থানে এমনটি ঘটতে পারে। এরকম হলে পরে ইহা ব্যবস্থা
না নিলে অন্তকোষ পর্যন্ত চলে যেতে পারে। ইহাকে ইনগুইনো-ক্রোটাল হার্নিয়া বলে। এটা
মূলতঃ পুরুষদের বেলাতেই হয় ।
আরো পড়ুনঃ
মেয়েদের হার্নিয়া
মহিলাদের ক্ষেত্রে
উরুর ভিতরের দিকে স্ফীতি দেখা দেয়। এটাকে ফিমোরাল হার্নিয়া বলে । কিছু ক্ষেত্রে নাভির
চারপার্শ্বে বা কোন একপার্শ্বে ফুলে যায় । এটাকে আম্বিলিকাল হার্নিয়া বলা হয় ।
আগে কোন জায়গায়
অস্ত্রোপচার করা হয়েছে এমন জায়গায়তে ও হার্নিয়া হতে পারে । এটাকে ইনসিশনাল হার্নিয়া
বলে ।
হার্নিয়া রোগের উপসর্গ/লক্ষণঃ
১. কুচকি বা অন্ডকোষের থলি ফুরে যাওয়া।
২. নাভির ফুলে যাওয়া
।
৩. উরুর গোড়ার ভিতরের
দিকে ফুলে যাওয়া ।
৪. পূর্বে অপারেশন
করা হয়েছে এমন জায়গা ফুলে যাওয়া ।
হার্নিয়া রোগের ফলে কি কি জটিলতা হতে পারে
- 1. খাদ্যনালী আটকে এবং বন্ধ হয়ে যেতে পারে-
- 2.
প্রচন্ড ব্যথা, - 3.
বমি বমি ভাব,
- 4. বমি হতে পারে,
- 5.
পায়খানা/পায়ুপথে বাতাস না যাওয়া । - 6. আরো বিলম্ব হলে আটকে যাওয়া খাদ্য নালীর অংশে রক্ত সরবরাহ বিঘ্নিত
হয়ে গ্র্যাংগ্রিন (Gangrene) হতে পারে।
- 7.
পেরিটোনাইটিস - 8.
সেফটিসেমিয়া
- 9.
শক - 10.
মৃত্যু
হার্নিয়া রোগের চিকিৎসা :
এ রোগের একমাত্র
চিকিৎসা হলে সাজারী বা শল্য চিকিৎসা । রোগ সনাক্তকরে রোগীকে কোন অভিজ্ঞ সার্জন বা হাসপাতালে
সার্জারী বিভাগে যোগাযোগ করে অপারেশন করাতে হবে।
অবস্ট্রাকটিভ হার্নিয়া হলে জেনারের
ফিজিশিয়ান এর পরমার্শমত প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে দেরী না করে হাসপাতালে বা বিশেষজ্ঞের
কাছে অপারেশনের জন্য রোগীকে পাঠাতে হবে।