JANA BUJHA

শর্ট ফিল্ম স্ক্রিপ্টঃ বিকৃত নামে ডাকা

 

শর্ট ফিল্ম স্ক্রিপ্টঃ বিকৃত নামে ডাকা

স্থানঃ মজিদ ভাই এর দোকান

সময়ঃ বিকাল

চরিত্রঃ ১. আব্দুর রহিম ২. রায়হান মাহমুদ ৩. কবীর ৪. পিয়াস ৫. মজিদ ভাই
৬. স্কুলের ধর্ম শিক্ষক – আবুল বাশার।

 

১ম
দৃশ্য

( মজিদের দোকানের সামনে কবীর ,পিয়াস, রায়হানরা মিলে আড্ডা দিচ্ছে। তারা
চা খায় আর কথা বলে। খুব হাসাহাসি চলছে কোন বিষয় নিয়ে। দোকানে খুব বেশী মালপত্র নেই।
উপজেলা শহরের পাশেই মজিদের দোকান।

 

রায়হান এর চুল লম্বা, পড়নে লাল একটা শার্ট পড়া। কথা –বার্তায় কিছুটা মাস্তান
মাস্তান। পিয়াস ও কবীরের পড়নে হালকা কালারের টি-শার্ট। এমন সময় হেটে যাচ্ছে আব্দুর
রহীম)

 

রায়হানঃ   কিরে কই
যাস রহিমইয়া। আয় চা খায়া যা। কুত্তার দুধ দিয়া চা খাওয়ামো তরে।

পিয়াসঃ  কিরে রহিমইয়া। বড় ভাইরা ডাকছে কথা কানে যায় না?

রায়হানঃ আরে এই তেরা-ব্যাকা  রহিমইয়া ।

 

রহিমঃ ( ওদের দিকে রাগে
আসে, কিন্তু মাথা ঠান্ডা রেখে কথা বলে) রায়হান ভাই আপানি সবসময় আমার সাথে এইভাবে কথা
বলেন কেন? আমি কিন্তু আপনার বাসায় বিচার দিব।

কবীরঃ কিরে তর সাহসত কম
না? হ্যা, তুই সালাম-কালাম না দিয়ে কথা বলছিস। তর বইন কই নতুন পিরীত করতাছে জানস?

(রহিম চুপ হয়ে দাড়িয়ে থাকে, কোন কথা না বলে দাড়িয়ে থাকে)

 

২য়
দৃশ্য

পিয়াসঃ তর বইনে এইগুলা
কি শুরু করছে বল?

আব্দুর রহিমঃ ভাই আমারে এইগুলা
বলেন কেন? এইসব উল্টা-পাল্টা কথা বললে ভাল হবে না কিন্তু!!

রায়হানঃ ক্যান, কি করবি
তুই? আবার চোখ রাঙায়া কথা বলিস। ( এই বলেগায়ে ধাক্কা দেয়)

আব্দুর রহিমঃ শালার পুত, সবসময়
আমার সাথে মজা করছ। এই বলে হাতাহাতি শুরু হয়ে যায়।

 

পিয়াসঃ আরে তোরা কি করতেছিস।
রায়হান তুই কি পাগল নাকি।

( কিন্তু মারপিট চলতে থাকে। দোকানদার মজিদ ভাই এসেও ঝগড়া থামানোর চেষ্টা
করে। এমনসময় স্কুলের ধর্ম যাচ্ছেন এবং তাদের ঝগড়া থামালেন)

 

আরো পড়ুনঃ



৩য় দৃশ্য

বাশার
স্যারঃ
 কি রায়হান। ওর সাথে তোর কি নিয়ে
ঝগড়া। ও তর বয়সে অনেক ছোট, ওরে মারবি কেন।

আব্দুর
রহিমঃ
( রহিম কেঁদে কেঁদে স্যারকে বিচার দেয়) স্যার , রায়হান ভাই সবসময় আমারে
রহিমইয়া ,রহিমইয়া বলে ডাকে। আর নাম ভেংচায়া ডাকতে আমি ভাইরে না করছি তাও যেখানে পায়
সেখানেই এইভাবে ডাকে।

 

রায়হানঃ স্যার আমরাতো একটু
মজা করি। ও কিছু না। ওর সাথে আমাদের কোন সমস্যা নেই স্যার।

 

বাশার স্যাারঃ আচ্ছা ঠিক আছে।
মজিদ সবাইকে কেইক দাও। ( সবাই্ দোকানের বেন্ঞে বসে)

আচ্ছা, রায়হান তুই যে আব্দুর রহিম কে রহিইয়া বলে ডাকিস, রহিম কার নাম?

আল্লাহর গুনবাচক ৯৯ নামের মাঝে রহিমও একটি। ঠিক কিনা?

পিয়াসঃ জি স্যার ঠিক।

 

স্যারঃ তাই আমরা যখন মানুষের
নাম রহিম বলি তখন আসলে বলা উচিৎ আব্দুর রহিম। কারণ শুধু রহিম হচ্ছে মহান আল্লার নাম।
আব্দুর রহিম বা রহিম এর গোলাম হচ্ছে মানুষের নাম। তাহলে রহিম কে রহিম বলেও ডাকা উচিৎ
নয়। ডাকতে হবে আব্দুর রহিম। আর রায়হান তুই সেখানে রহিমইয়া রহিমইয়া বলে খেপাস এইটা কি
ঠিক?

 

কবীরঃ স্যার আমরাতো এই
চিন্তা কখনও করি নাই। নাম ভেংচায়া তো আমরা সবসময়ই ডাকি।

রায়হানঃ স্যার এইভাবে চিন্তাতো কখনই করি নাই।

 

বাশার স্যারঃ শোন সবাই মহান আল্লাহতালা
সূরা- হুজরাতের আয়াত ১১ তে বলেছেন- আর তোমরা এক অন্যের প্রতি দোষারোপ করো না এবং তোমরা
এক অন্যকে মন্দ নামে ডেকো না, ঈমানের পর মন্দ নাম অতি নিকৃষ্ট আর যারা তওবা করে না
তারাইতো জালিম। তাহলে বুঝতে পারলে আল্লাহ নিজে নিষেধ করেছে নাম বিকৃত না করে ডাকতে।

 

কেউ যদি নাম বিকৃত করে ডাকে তা হবে চরম শাস্তীর। নাম বিকৃত করে ডাকা হচ্ছে
কবীরা গুনাহ। তাই আমারা জেনে শুনে এই কাজগুলো কি করতে পারি?

 

আব্দুর রহিমকে রহিমইয়া বলে অন্যায় করেছ। তাও আবার আল্লাহকে রহিমইয়া বলে
ডেকেছিস, যা মারাত্মক অপরাধ। নাম বিকৃত করে ডাকা স্ট্রিকলি নিষেধ করেছে ইসলাম।

তাহলে নাম বিকৃত করে কি আমরা আর কখনও ডাকবো? ডাকা উচিৎ?

 

রায়হানঃ স্যার< এইটা
যে কবীরা গুনাহ তা জানতামই না। আর ঠিকইতো একজনকে রাগায়া দিয়ে আমরা আনন্দ করছি, তাওতো
ঠিক না। আল্লাহকেও আমরা কত বাজে ভাবে ডাকি। আল্লাহ।

 

স্যারঃ আর নাম বিকৃত করে
ডেকো না। এটা ইসলামে জোড়ালো ভাবেই নিষেধ করা হয়েছে। আর তোমাদের এই ঝগড়া-ঝাটিও তৈরী
হতো না যদি ভাল ব্যবহার করতে এবং নাম না বিকৃত করে ডাকতে।

 

রায়হান, পিয়াস, কবীরঃ ঝি স্যার। আর এমন
হবে না স্যার। ( ওরা চলে যায়)

বাশার স্যারঃ আব্দুর রহিম চল
তাহলে আমরা বাগড়র দিকে যাই।

(তারা রাস্তা দিয়ে হেটে হেটে যায় আর আব্দুর রহিম নানা প্রশ্ন করতে থাকে।)

 

আব্দুর রহিমঃ স্যার, কবীরা গুনাহ
হলেকি খুব শাস্তীদিবে আল্লাহ।

বাশার স্যারঃ হ্যা, নাম বিকৃত
করে ডাকা কবীরা গুনাহ। আর কবীরা গুনাহর অনেক শাস্থী।

তারা রাস্তা দিয়ে হেটে যেতে থাকে। আর সমাপ্ত হয়ে যায়।

 

সমাপ্ত

 

 

 

Leave a Comment