প্রথম মানে কারও
কাছে জীবনবাজী, প্রথম হওয়ার আশায় কেউ করে কারসাজি। প্রথম মানে আমার কাছে হাজার হাজার
চাওয়া, প্রথম মানে মনের আকাশে উড়ছে বিজয়ের হাওয়া। না , প্রথম নিয়ে কবিতা লিখার জন্য
বসা হয় নি। তবুও কবি মন ছন্দ আর তালে , গেয়ে যায় প্রথম নিয়ে হেলে আর দোলে।
প্রথম নিয়ে আমার
জীবনের অভিজ্ঞতা কখনই ভাল ছিল না। এবার যখন প্রথম ক্লাসের প্রথম এ্যাসাইমেন্ট দেয়া
হল তখনই প্রথম ক্লাসটা আমার গোল্লায় গেল। একটু খোলাসা করা প্রয়োজন, নয়ত বাক-বিতন্ডের
হতে পারে আয়োজন।
যেকোন প্রথম নিয়ে
আমার আশা, আকাঙ্খা, প্রত্যাশার কখনই কমতি থাকে না। গানের ভাষায় বলতে হয় – বেশী কিছু
আশা করা ভুল ,বুঝলাম আমি এত দিনে। ঠিক আমারও প্রথম কোন কাজ শেষ করে যখন প্রত্যাশার
সাথে প্রাপ্তীর বিস্তর ফারাক দেখা যায় তখন আপন মন এমনেতেই গেয়ে ওঠে – বেশী কিছু আশা
করা ভুল, বুঝলাম আমি এত দিনে।
অতীতের কিছু ফেলে
আসা প্রথমের স্মৃতি দিয়েই শুরু করা যাক। তখন ক্লাস ফাইভে পড়ি। জীবনের প্রথম বৃত্তি
পরীক্ষা। বৃত্তি পেয়ে লাগাতে হবে ভাল ছাত্রের তকমা। অনেক প্রত্যাশায় হাটে হাড়ি ভেঙে,
মান- ই্জ্জতের মাথা খেয়ে আমি দারুনভাবে অকৃতকার্য হলাম। ভাবলাম জীবনতো শেষই ,এবার পড়াশোনাটা
বাদ দিয়ে পালাবো ছেড়ে দেশই।
পরিবারের চাপে, পড়াশোনা
শুরু হলো আরও নতুন উত্তাপে। আবার প্রথম হওয়ার চেষ্টা। দ্বিতীয় হলাম ,তৃতীয় হলাম কিন্তু
মিটলো না প্রথম হওয়ার তেষ্টা।
এরপর আসি প্রথম প্রেমের
কথায়। ২ বছর প্রেম করার পর জানতে পারলাম, গার্লফ্রেন্ড আমায় ভালই বাসে নাই। জিজ্ঞেস
করলাম আই লাভ ইউ কেন বলেছিলে? উত্তর আসলো – আই লাভ ইউ বললেই প্রেম হয়ে যায় লিখা আছে
কোন বাইবেলে? খেলাম দারুন ছেকা , কিছুটা হয়ে গেলাম ব্যাঁকা। তবুও নতুন প্রথমের আশায়,
পড়াশোনাই করতে হচ্ছে হয়ে নিরুপায়।
এলো প্রথম ভার্সিটি
ভর্তি যুদ্ধ। নিজের প্রতি নিজেই হলাম চরমভাবে ক্ষুব্ধ। পড়াশোনা নাই ,এলো-পাথাড়ি ঘুরে
বেড়াই। প্রথমবারে হলো না ভার্সিটিতে চান্স, আর চলছে না আমার দেহের ভেতরে লান্স/ফুসফুস।
এরপর আসি প্রথম বিয়ের
কথায়। লকডাউনে বিয়ে হয়েছে ,পড়েছে বাজ মাথায়। আব্বা-আম্মা-ভাই-বোন কেউ ছিল না পাশে।
ঢাকা- ময়মনসিংহ রোড বন্ধ, আসবে তারা কিসে? তখন করোনার চরম বাড়াবাড়ি, সবাইকে বললাম তাহলে
বিয়েটা আর কয়দিন পরেই করি। কে মানে আমার কথা – বিয়ের তারিখ পিছিয়ে গেলে নাকি হয় যাহা-তাহা।
করতেই হয়েছিল বিয়েটা । তবে লকডাউনটা ভালই কেটেছিল –কারণ পাশে ছিল নতুন বউটা।
এবার আসি চাকরী-বাকরীর
কথায়। মার্কেটিংএ ক্যারিয়ার শুরু, কারণ ছিলাম নিরুপায়। এখনও কিছু একটা করছি। কিন্তু
শালার, মাথায় ঘুরে গল্প ,কবিতা,যুক্তি। অন্য চাকরী করে পাচ্ছি না কোনভাবেই মুক্তি।
একে বলী তাকে বলী , কত জায়গায় ঘুরাঘুরি। লিখালিখির একটা চাকরী পাই যেন পুরোপুরি।
এই দিকে মাস শেষে
করতে হয় মোটা অংকের আয়। অবশেষে ঘুরেফিরে পেলাম একজনকে নাম তার প্রলয় হাসান ভাই।
প্রথম যেদিন তাকে
ফোন দিলাম বললাম আসসালামু আলাইকুম ভাইয়া। একটু ব্যস্ত আছি ফোন দিচ্ছি তোমায় বাসায় যাইয়া।
ফর্ম ফিলাপ করলাম, টাকা পাঠিয়ে দিয়ে ভর্তি হয়ে গেলাম। এরপর প্রথম ক্লাসের আশায়, নানা
প্রত্যাশা জায়গা নিল আমার মনের বাসায়।
আরো পড়ুনঃ
এখন বলি কি কি প্রত্যাশা
ছিল মনে , যার মাঝে কিছু পূরণ হয়েছে দারুন কপাল গুনে।
প্রত্যাশ
১. শিক্ষক শিক্ষক
হবে না। তিনি হবেন ভাইয়া।
২. চারদিকে ব্যবসায়ী
মানুষের ছড়াছড়ি। ভাই যেন ব্যবসায়ী না হয়ে হন শিক্ষক হিসেবে কড়াকড়ি।
৩. আদর্শ আর ধর্ম-কর্ম
থাকুক আমার শিক্ষকের আচরনে। দিনশেষে যেতে হবে কবরে থাকে যেন বড়-ছোট সকলের মনে।
৪. বন্ধুর মত সকল
কথা করতে পারি যেন শেয়ার। আর এই ভাবে সুপরামর্শে গড়তে পারি যেন সফল ক্যারিয়ার।
৫. গতানুগতিক পড়াশোনা
আর লাগে না ভাল। গল্পে গল্পে আড্ডায় আড্ডায় কন্টেন্ট শিখে ছাড়াবো জ্ঞানের আলো।
৬. বাস্তব উদাহরণ
আর কল্প কথায় শিখতে চাই সদা। বাস্তবের সাথে মিল রেখে যারা পড়ায় তারা হলেন মাস্টর মশাই
এর দাদা।
৭. ইংরেজি কন্টেন্ট
এ কাঁচা বলে খুঁজছি একটা উপায়। ইংরেজি কন্টেন্ট শিখিয়ে দিবেন প্রাণ প্রিয় প্রলয় ভাই।
৮. জ্ঞানী-গুণী আর
বন্ধুসুলভ সহপাঠী পাব এই ক্লাসে। শেয়ারিং করে জ্ঞান চর্চা চলবে দে-ধারছে।
৯. দিন শেষে লাখ
টাকা কামানোর স্বপ্ন দেখি। সেই সাথে সাহিত্যিক হব বাড়বে পরিচিতি।
এইভাবে নানা আশা
নিয়ে শুরু হল প্রথম ক্লাস। এই দিনই কাপাল পোড়া ওয়াই-ফাই হলো লাশ। নেট আসে আর যায় ,যায়
আর আসে। অবশেষে জয়েন হতে পেরেছিলাম প্রলয় ভাইয়ের ক্লাসে।
পরিচয় পর্ব চলছে
দারুন উৎসাহে। ইন্টারনেট গোলযোগে বুঝে গেলাম প্রথম ক্লাস নিয়ে প্রত্যাশ পূর্ণ হবে না
অবশেষে। কোনভাবে সহপাঠীদের দেখালাম সুদর্শন চেহারা। শেষ হতে না হতেই ইন্টারনেটটা হয়ে
গেল আবার বেয়ারা।
পড়ুনঃ
কয়েকজন এর পরিচয়
পেয়ে সত্যিই অবাক হলাম। বুঝতে পারলাম কন্টেন্ট এর বাজারে তলানীতেই পড়ে রইলাম।
বোঝার আর বাকী নাই।
প্রলয় ভাইয়া যে কতটা আন্তরিক তা তার কথায় প্রকাশ পায়।
হালকা- পাতলা কিছু
সমস্যা ছিল অপ্রত্যাশিত । ভাইয়া বললেন জুম মিটিং সাবক্রিপশন নেয়া ছিল নাকো।
প্রথম ক্লাসে পরিচয়
পর্বই ছিল প্রধান। ১০ নাকি ১২ প্রকার কন্টেন্ট এর দিল ভাইয়া সমাধান। নানারকম যত প্রশ্ন
ছিল সবার মনে, সমাধান দিয়ে তিনি জায়গা করে নিলেন সবার প্রাণে।
সবশেষে কথা হল- বিশ্বাস করা যায় এমন একজন মেন্টর খুঁজছিলাম, মনে
হল অবশেষে আস্থাশীল সেই মানুষটাই পেলাম। সব মিলে দারুন ছিল অভিজ্ঞতা। মনে হয়েছে এবার কাটিয়ে উঠবো
কন্টেন্ট ক্যারিয়ার এর জটিলতা।